এসএসসি পরীক্ষা

খাতা চ্যালেঞ্জ করে ফল পরিবর্তনে রেকর্ড

১১ বোর্ডে ফল পরিবর্তন হয়েছে ৬ হাজার ৩৩২ জনের। নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭৫৬ জন। ফেল থেকে পাস করেছে ২২৪৮ জন

প্রকাশ | ০১ জুলাই ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের কয়েকজন -ফাইল ছবি
এসএসসি ও সমমানের প্রকাশিত ফল চ্যালেঞ্জ করে রেকর্ড সংখ্যক ৬ হাজার ৩৩২ জনের ফল পরিবর্তন হয়েছে। এর মধ্যে প্রকাশিত ফলাফলে ফেল করেছিল এমন শিক্ষার্থী খাতা চ্যালেঞ্জ করে পাস করেছে ২ হাজার ২৪৮ জন। নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭৫৬ জন। মঙ্গলবার ১১টি শিক্ষা বোর্ডের প্রকাশিত পুনর্নিরীক্ষণে ফলাফল পর্যালোচনা করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। পরীক্ষকদের উদাসীনতার কারণে প্রতিবছর এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। শিক্ষকদের ভুলের খেসারত দিতে হয় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের। অভিযুক্ত শিক্ষকদের দুই বছরের জন্য কালো তালিকাভুক্ত করে পরীক্ষা কার্যক্রম থেকে বাদ দেওয়া হবে বলে বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। জানা গেছে, গত ৩১ মে প্রাকাশিত এসএসসি পরীক্ষার খাতা পুনর্নিরীক্ষণে ঢাকা বোর্ডে ফেল থেকে পাস করেছে ১০৫ জন শিক্ষার্থী। আর নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৯৯ জন পরীক্ষার্থী। পুনর্নিরীক্ষণে বোর্ডের ২ হাজার ২৪৩ জনের ফল পরিবর্তন হয়েছে। চলতি বছর ঢাকা বোর্ডের ৫৭ হাজার ৭৯০ জন পরীক্ষার্থী ১ লাখ ৪৬ হাজার ২৬০টি খাতা পুনর্নিরীক্ষার আবেদন করেছিল। সিলেট বোর্ডে পুনর্নিরীক্ষণে ফেল থেকে পাস করেছে ২৩ জন শিক্ষার্থী। আর নতুন জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩০ জন পরীক্ষার্থী। আর ১৬৫ জন শিক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হয়েছে। এ বোর্ডের ২৩ হাজার ৭৯০টি খাতা পুনর্নিরীক্ষার আবেদন করেছিল শিক্ষার্থীরা। বরিশাল বোর্ডে পুনর্নিরীক্ষণে ফেল থেকে পাস করেছে ২৫ জন শিক্ষার্থী। আর নতুন জিপিএ-৫ পেয়েছে ১১ জন পরীক্ষার্থী। পুনর্নিরীক্ষণে মোট ১৩৯ জন পরীক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হয়েছে। এ বোর্ডের ১০ হাজার ৩৫১ জন শিক্ষার্থী ২৩ হাজার ৮৫০টি খাতা পুনর্নিরীক্ষার আবেদন করেছিল। রাজশাহী বোর্ডে ফেল থেকে পাস করেছে ৩৫ জন পরীক্ষার্থী। আর নতুন জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৪০ জন পরীক্ষার্থী। পুনর্নিরীক্ষণের ফেল করা তিনজন জিপিএ-৫ পেয়েছে। বোর্ডের ২৫২ জন শিক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হয়েছে। রাজশাহী বোর্ডের ৪৪ হাজার ৬১টি খাতা পুনর্নিরীক্ষার আবেদন করা হয়েছিল। চট্টগ্রাম বোর্ডে খাতা পুনর্নিরীক্ষণে ফেল থেকে পাস করেছে ৪১ জন শিক্ষার্থী। আর নতুন জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৩ জন, ফেল থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ জন শিক্ষার্থী। ফল পুনর্নিরীক্ষণে ৬০৯ জন শিক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হয়েছে। এ বছর চট্টগ্রাম বোর্ডের ৫২ হাজার ২৪৬টি খাতা পুনর্নিরীক্ষার আবেদন করেছিল শিক্ষার্থীরা। যশোর বোর্ডে ফেল থেকে পাস করছে ৪৬ জন। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ জন। ফল পরিবর্তন হয়েছে ১২৩ জনের। নতুন করে মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫১ জন। পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন ছিল ৩৪ হাজার ২৮৪টি। দিনাজপুর বোর্ডে ফেল থেকে পাস করেছে ৩৬ জন। এর মধ্যে একজন জিপিএ-৫ পেয়েছে। ফল পরিবর্তন হয়েছে ৩৭৭ জনের। নতুন করে মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫০ জন। কুমিলস্না বোর্ডে মোট ৩৯ হাজার ৩০৩টি পত্রের আবেদনকারী ১৭ হাজার ৬৭৭ জন। ফল পরিবর্তন হয় ৪৪১ জন, জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬১ জন এবং ফেল থেকে পাস করেছে ৬২ জন। কারিগরি বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রকৌশলী সুশীল কুমার পাল মোট আবেদনকারীর তথ্য জানাতে পারেননি। মোট পত্র ১৭ হাজার ২৮৩টি, এর মধ্যে ফল পরিবর্তন হয়েছে ১ হাজার ৭৪১টি, জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৮ জন, ফেল থেকে পাস করেছে ১ হাজার ১২৪ জন। অর্থাৎ জিপিএ হয়েছে পরিবর্তন ১ হাজার ১৭১ (বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর জিপিএ বেড়েছে)। মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে দাখিল পরীক্ষার খাতা পুনর্নিরীক্ষণে ফেল থেকে পাস করেছে ১০৫ জন আর নতুন জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৩ জন। ২৪৩ জন দাখিল পরীক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হয়েছে। আর ৮৭ জন গ্রেড পয়েন্ট এভারেজ পরিবর্তন হয়েছে। মাদ্রাসা বোর্ডে ১৪ হাজার ৭০৭ জন পরীক্ষার্থী বিভিন্ন বিষয়ে ২৩ হাজার ৪৫০টি আবেদন করেছিল। জানা গেছে, চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় কাঙ্ক্ষিত ফল না পেয়ে ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অংশ নেওয়া দুই লাখ ৩৮ হাজার ৪৭১ জন পরীক্ষার্থী বিভিন্ন বিষয়ে ৪ লাখ ৮১ হাজার ২২২টি আবেদন করেছিল। গত বছর মোট আবেদনের সংখ্যা ছিল তিন লাখ ৬৯ হাজার ৯১১টি। পাবলিক পরীক্ষায় ফল প্রকাশের পর শিক্ষা বোর্ডগুলো পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে পুনর্নিরীক্ষার আবেদন নিয়ে থাকে। কাঙ্ক্ষিত ফল না পাওয়া শিক্ষার্থীরা আবেদন করে। প্রতিটি বিষয়ে বোর্ডগুলো ১২৫ টাকা করে নিয়ে থাকে। এখাতে প্রতি বছর তারা কোটি কোটি টাকা আয় করে।