ট্রান্সকম চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান আর নেই

প্রকাশ | ০২ জুলাই ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
লতিফুর রহমান
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও ট্রান্সকম গ্রম্নপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান আর নেই (ইন্না লিলস্নাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় কুমিলস্নার চৌদ্দগ্রামে নিজ বাসভবনে তিনি ইন্তেকাল করেন। তিনি স্ত্রী, পুত্র, দুই কন্যাসহ আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, লতিফুর রহমানের মরদেহ বুধবার ঢাকায় এনে গুলশানের আজাদ মসজিদে বাদ এশা তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর রাতেই বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। লতিফুর রহমানের জন্ম জলপাইগুড়িতে, ১৯৪৫ সালের ২৮ \হআগস্ট। তিনি ঢাকায় থাকতেন গেন্ডারিয়ায়। পড়াশোনার শুরু সেন্ট ফ্রান্সিস স্কুলে। সেখান থেকে ১৯৫৬ সালে শিলংয়ের সেন্ট এডমন্ডস স্কুলে। তারপর কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে। ১৯৬৫ সালে ঢাকায় ফিরে আসেন লতিফুর রহমান। ঢাকায় এসে ১৯৬৬ সালে ডবিস্নউ রহমান জুট মিলে ট্রেইনি হিসেবে কাজ শুরু করেন। দেড় বছর কাজ শেখার পর নির্বাহী হিসেবে যোগ দেন। এভাবে কাজ করেন ১৯৭১ সাল পর্যন্ত। ১৯৭২ সালে তিনি সবকিছু নতুন করে শুরু করেছিলেন প্রায় শূন্য হাতে। নিজের হাতে তৈরি বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়িক গ্রম্নপ ট্রান্সকম গ্রম্নপের চেয়ারম্যান ছিলেন। ট্রান্সকম গ্রম্নপে এখন কাজ করছেন ১০ হাজারের বেশি মানুষ। ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে নীতি-নৈতিকতা, সুনাম আর সততার স্বীকৃতি হিসেবে ২০১২ সালে তিনি পান বিজনেস ফর পিস অ্যাওয়ার্ড, যা ব্যবসা-বাণিজ্যের জগতে নোবেল বলে খ্যাত। লতিফুর রহমান প্রথম আলোর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান মিডিয়াস্টার লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। এছাড়া ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান মিডিয়াওয়ার্ল্ডের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ছিলেন তিনি। উলেস্নখ্য, চার বছর আগে এই দিনে ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে ঢাকার গুলশানে হোলি আর্টিজান বেকারিতে নৃশংস জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারান লতিফুর রহমানের প্রিয় নাতি ফারাজ আইয়াজ হোসেন। শোক লতিফুর রহমানের মৃতু্যতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ ফ ম মুস্তফা কামাল, পরিকল্পনামন্ত্রী আবদুল মান্নান ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তারা মরহুমের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। আরও শোক জানিয়েছেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, লতিফুর রহমান কেবল একজন সৎ, নিষ্ঠাবান বিশিষ্ট ব্যবসায়ীই নন, অত্যন্ত উঁচু মাপের মানুষ ছিলেন। বাংলাদেশে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও তিনি অসামান্য অবদান রাখেন। তার মৃতু্যতে দেশের বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে গেল। এই ক্ষতি পূরণ হওয়ার নয়। আমীর খসরু তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।