দেশে করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা দেড় লাখ ছাড়াল

শুধু জুন মাসেই আক্রান্ত লক্ষাধিক ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ শনাক্ত ৪০১৯

প্রকাশ | ০৩ জুলাই ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
দেশে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ এবং এতে মৃতু্য বাড়ছে উদ্বেগজনক হারে। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও চার হাজার ১৯ জনের শরীরে ভাইরাসটির উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে, যা একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। ফলে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৫৩ হাজার ২৭৭ জনে। এর মধ্যে শুধু জুন মাসেই এক লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন আরও ৩৮ জন। এ নিয়ে মোট মৃতু্য হলো এক হাজার ৯২৬ জনের। বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাভাইরাস-বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানান অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। তিনি নতুন একটিসহ মোট ৭০টি ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে বলেন, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৭ হাজার ৯৪৭টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় আগের কিছু মিলিয়ে ১৮ হাজার ৩৬২টি। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো আট লাখ দুই হাজার ৬৫৭টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও চার হাজার ১৯ জনের মধ্যে। ফলে শনাক্ত করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল এক লাখ ৫৩ হাজার ২৭৭ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ৩৮ জন। এ নিয়ে মোট মৃতু্য হয়েছে এক হাজার ৯২৬ জনের। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও চার হাজার ৩৩২ জন। এতে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৬৬ হাজার ৪৪০ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় যে ৩৮ জন মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ৩২ এবং নারী ছয়জন। এদের মধ্যে ২১ থেকে ৩০ বছরের একজন, ত্রিশোর্ধ্ব দুজন, চলিস্নশোর্ধ্ব দুজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ১৬ জন, ষাটোর্ধ্ব আটজন, সত্তরোর্ধ্ব সাতজন, ৮০ বছরের বেশি বয়সি দুজন। তাদের ১১ জন ঢাকা বিভাগের, ১২ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, পাঁচজন রাজশাহী বিভাগের, পাঁচজন খুলনা বিভাগের, একজন রংপুর বিভাগের, দুজন সিলেট বিভাগের এবং দুজন বরিশাল বিভাগের। ৩৩ জন মারা গেছেন হাসপাতালে এবং পাঁচজনের মৃতু্য হয়েছে বাসায়। বুধবারের পরিস্থিতি গত বুধবারের (১ জুলাই) বুলেটিনে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা রোগীদের মধ্যে আরও ৪১ জনের মৃতু্য হয়েছে। ১৭ হাজার ৮৭৫টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও তিন হাজার ৭৭৫ জনের দেহে। সে হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতু্য কমলেও শনাক্ত হয়েছে সর্বোচ্চ রেকর্ড। এর আগে দেশে একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড ছিল চার হাজার ১৪ জনের। সে তথ্য জানানো হয় গত ২৯ জুনের বুলেটিনে। দেশে সর্বোচ্চ মৃতু্যর রেকর্ড আছে ৬৪ জনের। সে তথ্য জানানো হয় ৩০ ?জুনের বুলেটিনে। শনাক্ত, সুস্থতা ও মৃতু্যর হার বৃহস্পতিবারের বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ২১ দশমিক ৮৯ শতাংশ। এখন পর্যন্ত রোগী শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৪৩ দশমিক ৩৫ এবং মৃতের হার ১ দশমিক ২৬ শতাংশ। আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টিনের তথ্য বুলেটিনে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে আরও ৯৬০ জনকে এবং এ পর্যন্ত আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে ২৮ হাজার ৫০২ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৭৭৫ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ১২ হাজার ৭৭৫ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন ১৫ হাজার ৭৫৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়েছে দুই হাজার ৮৯৪ জনকে, এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়েছে তিন লাখ ৬৯ হাজার ১৮৯ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন তিন হাজার ১৬৮ জন, এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন থেকে মোট ছাড় পেয়েছেন তিন লাখ পাঁচ হাজার ৫৮১ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ৬৩ হাজার ৬০৮ জন। বুলেটিনে বরাবরের মতো করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনসহ প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেশবাসীর উদ্দেশে তুলে ধরা হয়। চীনের উহান শহর থেকে গত ডিসেম্বরে ছড়ানো করোনাভাইরাসের ছোবলে গোটা বিশ্ব মৃতু্যপুরীতে পরিণত হয়েছে। বিশ্বজুড়ে এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা এক কোটি আট লাখ ছাড়িয়ে গেছে। মৃতের সংখ্যা পাঁচ লাখ ১৯ হাজারের বেশি। তবে ৬০ লাখ ৪০ হাজারের বেশি রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। প্রথম মৃতু্য হয় ১৮ মার্চ।