চট্টগ্রামে করোনায় মৃতু্যহীন দিন

প্রকাশ | ০৫ জুলাই ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
করোনাভাইরাস সংক্রমণে সাম্প্রতিক সময়ে প্রতিদিন মৃতের সংখ্যা বাড়লেও চট্টগ্রামে গত দুই দিন ছিল মৃতু্যহীন। জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য বলছে, শুক্রবার চট্টগ্রামে কোভিড-১৯ রোগে কেউ মারা যায়নি। শনিবার সকালে আগের ২৪ ঘণ্টার পরিস্থিতি নিয়ে যে 'কোভিড-১৯ আপডেট' প্রকাশ হয়, তাতে এই তথ্য দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, 'প্রায় এক মাস পর করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর মৃতু্যহীন দিন কেটেছে শুক্রবার। মনে হচ্ছে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতির দিকে।' তিনি জানান, গত বৃহস্পতিবারও আসলে চট্টগ্রামে কোভিড-১৯ আক্রান্ত কেউ মারা যায়নি। তবে পরদিন শুক্রবার প্রকাশিত আপডেটে আগের ২৪ ঘণ্টায় যে তিনজনের মৃতু্যর তথ্য প্রকাশ হয়েছে, তা আগে মৃতদের নমুনা পরীক্ষায় ফল সেদিন 'পজিটিভ' পাওয়া গিয়েছিল বলে। সে হিসাবে পরপর দুই দিন চট্টগ্রামে কোভিড-১৯ আক্রান্ত কারও মৃতু্য হয়নি। মৃতু্য কমার কারণ জানতে চাইলে ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রায় একশ কোভিড-১৯ রোগী ভর্তি আছেন। এর মধ্যে আইসিইউতে আছেন ৩৫ জন। আগে হাসপাতালে রোগী ভর্তি করাতে যে ভোগান্তি হতো সেটা এখন অনেক কম। তিনি আরও বলেন, 'পাশাপাশি কমিউনিটি পার্টিসিপেশন বেড়েছে। রাজনৈতিক কর্মী, দাতব্য প্রতিষ্ঠান, সমাজকর্মী অনেকেই সেবা দিতে এগিয়ে আসছেন। আইসোলেশন সেন্টারগুলোতে রোগী ভর্তি হচ্ছে। শুরুতে যে অস্থিরতা ছিল, সেটা এখন নেই, সমন্বয় হচ্ছে।' এর আগে ২ জুলাই ছয়জন, ১ জুলাই পাঁচজন, ৩০ জুন দুইজন, ২৯ জুন দুই জন, ২৮ জুন চারজন, ২৭ জুন পাঁচজন, ২৬ জুন পাঁচজন, ২৫ জুন তিনজন এবং ২৪ ও ২৩ জুন চারজন করে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী মারা গিয়েছিলেন। গত ৩ এপ্রিল চট্টগ্রামে প্রথম কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, তার পরের সপ্তাহে প্রথম মৃতু্যর ঘটনা ঘটে সাতকানিয়া উপজেলার এক ব্যক্তির। সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, 'আক্রান্তের হারও কিছুটা কমছে বলে ধারণা করছি। আগে মোট পরীক্ষার ২৮-৩০ শতাংশ পজিটিভ রোগী পাওয়া যেত। গত কয়দিন সে হার ১৯-২১ শতাংশে নেমে এসেছে।' 'তবে আসলেই আক্রান্তের সংখ্যা কমছে কিনা সেটা বুঝতে হলে আরও এক সপ্তাহ দেখতে হবে।' শনিবার প্রকাশিত ফলে দেখা যায়, আগের ২৪ ঘণ্টায় ১২৩৬ জনের করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ পরীক্ষায় ২৬৩ জনের পজিটিভ ফল এসেছে। শতকরা হিসেবে তা ২১ দশমিক ২৭ শতাংশ। এদের মধ্যে নগরীর ১৯৬ জন এবং বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা ৬৭ জন। এর আগে ১ জুলাইর ফলে ১৩৪৫ জনের পরীক্ষায় ৩৭২ জন পজিটিভ হয়, যা ছিল ২৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ। ২ জুলাই ১৩৭৩ জনের পরীক্ষায় ২৭১ জন পজিটিভ ছিল, যা ১৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ। ৩ জুলাই ১৩২৩ জনের পরীক্ষায় ২৮২ জনের পজিটিভ ফল আসে, যা ২১ দশমিক ৩১ শতাংশ। শেষ ২৪ ঘণ্টায় ২৬৩ জন শনাক্তের পর জেলায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৬৬৮ জন। জেলায় সরকারি হিসাবে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৮৭ জন। শুক্রবারের ২৫ জনসহ হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ১১৫৬ জন।