বিশিষ্টজনদের ছবি দিয়ে সাহেদের প্রতারণা

দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ব্যাংক হিসাব তলব সহযোগী গ্রেপ্তার ভায়রা হেফাজতে

প্রকাশ | ১০ জুলাই ২০২০, ০০:০০

তানভীর হাসান
সাহেদ করিম
বিশিষ্টজনদের সঙ্গে তোলা ছবি ব্যবহার করেই প্রতারণা করত রিজেন্ট গ্রম্নপের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম। রাজনীতিবিদ, মন্ত্রী, এমপি, সাংবাদিক ও আমলাদের সঙ্গে তোলা শতাধিক ছবির সন্ধান পেয়েছের্ যাব। এ ধরনের কিছু ছবি বাঁধাই করে রাখা হতো তার অফিস কক্ষে। আবার কিছু ছবি রিজেন্টের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজেও আপলোড করা হতো। এসব ছবি দেখে প্রতারিতরা তার সঙ্গে উচ্চবাচ্য করার সাহস পেত না। আবার বিভিন্ন দপ্তরে গিয়ে এসব ছবি দেখিয়ে তিনি কাজও বাগিয়ে নিতেন। তার কথার বাইরে গেলে এসব ছবি দেখিয়ে হুমকিও দেওয়া হতো। ছবির অনেকে আবার সাহেদের পক্ষ নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে ফোনও করত বলের্ যাবের গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে। সূত্রমতে, উত্তরায় তার অফিস কক্ষের পাশে একটি টর্চার সেলের সন্ধান পাওয়া গেছে। সেখানে প্রতারিত হওয়া ব্যক্তিরা উচ্চবাচ্য করলে তাদের নির্যাতন করা হতো। ৪ জন সার্বক্ষণিক বডিগার্ডের কাজে নিয়োজিত ছিল। পাশাপাশি তার অফিসে সুন্দরী নারীদেরও আনাগোনা ছিল। ভিআইপি অনেকের মনোরঞ্জনে এসব নারী ব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে। গোপনে আবার ওই মনোরঞ্জনের আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করা হতো। পরে ওই ভিডিও দেখিয়ে তাদের মাধ্যমে বড় ধরনের কাজ বাগিয়ে নেওয়ার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে বলে ৬ র্ যাবের গোয়েন্দা সূত্র নিশ্চিত করেছে। জানতে চাইলের্ যাবের গোয়েন্দা শাখার প্রধান সারোয়ার বিন কাশেম যায়যায়দিনকে বলেন, সাহেদের পুঁজি বলতে ছিল ভিআইপিদের সাথে তোলা সেলফি। ওই ছবি ব্যবহার করে সে বিভিন্ন দপ্তরে দাপিয়ে বেড়াত। তার হাসপাতালে অভিযান চালানোর পর আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। তার অফিস কক্ষে টর্চার সেলের সন্ধান ও সুন্দরী নারীদের সম্পর্কেও তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। এসব তথ্য যাচাই-বাছাই চলছে। আশা করা যাচ্ছে দ্রম্নতই সাহেদকে গ্রেপ্তারের পর এসব বিষয় পরিষ্কার হওয়া যাবে। তিনি বলেন, সার্বক্ষণিক সাহেদ ৩/৪ জন বডিগার্ড নিয়ে চলতেন। তার সঙ্গে অবৈধ অস্ত্র থাকারও তথ্য রয়েছে। এসবকিছু তিনি প্রতারিতদের হাত থেকে রক্ষা পেতে ব্যবহার করতেন। শুধু সাহেদই নয় এ ধরনের ভন্ডদের গ্রেপ্তারের্ যাব মুখিয়ে রয়েছে। এসব ভন্ডের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই। জানা গেছে, কখনো সেনা কর্মকর্তা কখনো আবার আমলা, কখনো-বা আবার সিনিয়র সাংবাদিক পরিচয়ে চলাফেরা করত সাহেদ করিম। এসএসসি পাসের এই ব্যক্তিই রাজধানীতে প্রতারণার টাকায় গড়ে তুলেছেন রিজেন্ট হাসপাতাল। সেখানে করোনা রোগী পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট দিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। তার প্রতারণার হাতেখড়িটা এমএলএম কোম্পানি দিয়ে। বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে গড়ে তোলা ওই কোম্পানির প্রতারণার মামলায় ২ বছর জেলও খেটেছেন তিনি। ২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত তার নামে ৩৩টি মামলা রয়েছে। ছিলেন হাওয়া ভবনের আশীর্বাদপুষ্টও। এ কারণে ২০১১ সালের শেষের দিকে তিনি ভারতে চলে যান। এরপর সেখান থেকে ফিরে সাতক্ষীরার সব সম্পত্তি বিক্রি করে ঢাকায় স্থায়ী হন। এরপর ধীরে ধীরে এমএল কোম্পানির টাকায় ও সম্পত্তি বিক্রির টাকায় রিজেন্ট গ্রম্নপ তৈরি করেন। পরে শুরু করেন হাসপাতালের ব্যবসা। হাতিয়ার হিসেবে তিনি একে একে বিশিষ্টজনেদের সঙ্গে ছবি তোলা শুরু করেন। এরপর ওই ছবি নিজের ফেসবুকে পোস্ট করে নিজেকে বড় মাপের লোক হিসেবে জাহির করেন। নিজের এমন প্রত্যাবর্তনের খবর বিভিন্ন মহলে প্রচার হলে সাহেদের সঙ্গে অনেকেই যোগাযোগ শুরু করে। সাহেদের অতীত বিষয় তুলে ধরায় তাদের সাহেদ ম্যানেজ করে ফেলেন। তৈরি হয় ওইসব ব্যক্তির সাথেও সখ্য। বিনিময়ে সাহেদও তাদের নিয়মিত মাসোয়ারা দিয়ে যেতেন। এরই মাঝে বিভিন্ন সময়ে প্রতারিত হওয়া ব্যক্তিরা সাহেদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাদের এসব ছবি দেখিয়ে হুমকি দেওয়া হতো। তার অফিসে কেউ হাজির হলে তাকে টর্চার সেলে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগও রয়েছে। এ কাজে তিনি নিজস্ব বডিগার্ড বাহিনীকে ব্যবহার করতেন। জুলফিকার আলী ভুট্টো নামে একজন পাথর ব্যবসায়ীর অভিযোগ, ৪৫ লাখ টাকার পাথর নিয়েও টাকা পরিশোধ করেনি সাহেদ। তার কাছে টাকার জন্য গেলে হুমকি দিয়ে আটকে রাখা হয়। এরপর এক নারীকে দিয়ে তাকে ভয়ভীতি দেখানো হয়। বলা হয় ওই নারীকে নির্যাতন করা হয়েছে। কয়েকজন লোক এসে সেখানে সাংবাদিক পরিচয় দেন। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দিতে গেলেও নেওয়া হয়নি। সূত্রমতে, রাজধানীর উত্তরা ও মিরপুরে রিজেন্ট হাসপাতাল এবং রিজেন্ট গ্রম্নপের প্রধান কার্যালয়ের তিনটি ভবনই বিভিন্ন মালিকরাই তার নামে প্রতারণার অভিযোগ করেছেন। মিরপুরের ১২ নম্বরের হাসপাতাল ভবনটি অন্য আরেকজনকে দিয়ে ভাড়া করিয়েছিলেন। পরে সেখানে জোর করে হাসপাতাল স্থাপন করেন। দুই বছর ধরে এর ভাড়াও দেননি তিনি। ভাড়া চাইতে গেলে বিশিষ্টজনদের সাথে তোলা ছবি দেখিয়ে তিনি বাড়ির মালিককে হুমকি দিতেন। তারাও এখন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা চিন্তা করছেন। মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনের রিজেন্ট হাসপাতালের বাড়ির মালিক ফিরোজ আলম চৌধুরী বলেন, 'ভাড়া দেওয়ার পর থেকেই ভাড়া পাচ্ছি না। দুই বছরের ভাড়া বকেয়া। উকিল নোটিশ দিয়েছি, তাতেও কোনো কাজ হয়নি। থানায় জিডি করেছি, তাতেও কাজ হয়নি। সে ভবন ছাড়ে না। কয়েকবার চেক দিয়েছে। চেক বাউন্স হয়। সে মস্ত বড় প্রতারক।' রিজেন্ট গ্রম্নপের উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরের ২/এ সড়কের ১৪ নম্বর বাড়ির দুটি ফ্লোরের ভাড়াও নিয়মিত দেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই ভবনের মালিক জাহানারা কবির অভিযোগ করেন, তার স্বামী লুৎফুল কবির পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি ছিলেন। মেয়ের নামে কেনা ইউনিটটি সাহেদকে ভাড়া দেওয়া হয়। কিন্তু সাহেদ নিয়মতি ভাড়া দেয় না। সে নিজেকে অনেক ক্ষমতাধর বলেও পরিচয় দেয়। বাড়িছাড়ার জন্য তিনবার নোটিশ দিলেও সে বাড়ি ছাড়ে না। এমনকি ভাড়াও দেয় না। জানা গেছে, ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর মোহাম্মদ সাহেদের প্রতারণার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক অধিশাখা থেকে উপসচিব নওয়াব আলী স্বাক্ষরিত একটি চিঠি আসে তৎকালীন আইজিপির কাছে। ওই চিঠিতে বলা হয়, সাহেদ নিজেকে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ও ক্যাডেট কলেজের শিক্ষার্থী পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছে। ওই চিঠিতে আরও বলা হয়, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর এডিসি ছিলেন বলেও পরিচয় দিয়ে আসছে। এই ব্যক্তি 'ভয়ংকর প্রতারক'। তার বিরুদ্ধে ৩২টি মামলা রয়েছে, সে দুই বছর কারাবাসে ছিল, সেই বিষয়েও উলেস্নখ করা হয়। তারপরও বিভিন্ন লোক মারফত তদবির করে পার পেয়ে যায়। সে সময়ও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বিশিষ্টজনদের সঙ্গে ছবির বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, 'সাহেদ করিম বেশ কয়েকবার সচিবালয়ে গেছেন। একদিন বললেন, তিনি দুটো হাসপাতাল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য ছেড়ে দিয়েছেন। রোগী থাকলে যেন পাঠাই। আমি সেখানে রোগী পাঠিয়েছি। একজন ইন্তেকাল করেছেন, বাকিরা সেরে উঠেছেন।' স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারির আগে তিনি সাহেদ করিমকে চিনতেন না।র্ যাবের অভিযানের পর সাহেদ করিম তাকে ফোন করেছিলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তার কিছু করার নেই। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন বলেন, তিনি সাহেদ করিমকে ব্যক্তিগতভাবে চেনেন না। কেউ কখনো ছবি তুলতে চাইলে তিনি না করেন না। এ ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে। তবে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমির ওই সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, সাহেদ করিম মাঝে মাঝে আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটির বৈঠকে আসতেন। তিনি সাবেক একটি কমিটির সদস্য ছিলেন। তার সঙ্গে কমিটির বৈঠকে দু-চারবার দেখা হয়েছে। আর দেখা হয়েছে টিভির টকশোতে। মোহাম্মদ জমির বলেন, 'মোহনা টিভিতে আমি টকশোতে গিয়েছি কয়েকবার। সেখানে সাহেদ করিম সঞ্চালকের ভূমিকায় ছিলেন।' পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক শহীদুল হকের কার্যালয়ে একসময় সাহেদের যাতায়াত ছিল। এ ব্যাপারে শহীদুল হক বলেন, সাহেদ করিম একবার তার কার্যালয়ে এসেছিলেন। তার হাসপাতালের নামে একটা মামলা হয়েছিল সেটার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার তদবির নিয়ে। ওই সময়ে সাহেদ তাকে বলেছিলেন, তিনি ক্যানসারের রোগী। সন্তান ছোট। এরপর বিভিন্ন সময় তিনি ফোন করেছেন। তবে সাহেদ করিমকে তিনি চিনতেন টকশোর কারণে। উলেস্নখ্য, গত সোমবার রাজধানীর উত্তরার কোভিড ডেডিকেটেড রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালায়র্ যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযান পরিচালনাকালে উঠে আসে রিজেন্ট হাসপাতালের অনিয়মের ভয়াবহ সব তথ্য। এ সময় হাসপাতাল থেকে ৮ জনকে গ্রেপ্তার করের্ যাব। এরপর মঙ্গলবার গভীর রাতে রিজেন্ট হাসপাতালে করোনা চিকিৎসার নামে প্রতারণাসহ নানা অভিযোগে সাহেদসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করেছের্ যাব। এর মধ্যে গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছে, আহসান হাবীব, আহসান হাবীব হাসান, হাতিম আলী, কামরুল ইসলাম, রাকিবুল ইসলাম, অমিত বণিক, আব্দুস সালাম, আব্দুর রশিদ খান জুয়েল। মামলার পলাতক আসামিরা হচ্ছে- প্রধান আসামি মো. সাহেদ, মাসুদ পারভেজ, তরিকুল ইসলাম, আব্দুর রশিদ খান জুয়েল, মো, শিমুল পারভেজ, দিপায়ন বসু, মাহাবুব, শৈকত, পলাশ। তাদের ধরতে এরই মধ্যের্ যাবের একাধিক টিম মাঠে নেমেছে। সাহেদ যাতে কোনো অবস্থায় দেশ ছেড়ে পালাতে না পারে সেজন্য নেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। সাহেদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ইমিগ্রেশন পুলিশকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার পুলিশ সদও দপ্তরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সাহেদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ইমিগ্রেশন পুলিশে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সংশ্লিষ্ট বিভাগ এ চিঠি পাঠিয়েছে। এবার যথাযথ পদক্ষেপ নেবে ইমিগ্রেশন পুলিশ। সাহেদের ব্যাংক হিসাব তলব রিজেন্ট হাসপাতালের জালিয়াতি আর প্রতারণার তথ্য উদ্‌ঘাটিত হওয়ার পর এই গ্রম্নপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিএফআইইউ বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্ট ইউনিট-বিএফআইইউ তা খতিয়ে দেখছে বলে ইউনিটের প্রধান বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মো. রাজী হাসান জানিয়েছেন। তিনি বুধবার রাতে বলেন, 'বিএফআইইউর বিধি অনুযায়ী সরকারি কোনো সংস্থা বা গণমাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে সেই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের ব্যাপারে তথ্যের জন্য আমরা ব্যাংক হিসাব তলব করি। 'রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাবও সেই ধারাবাহিকতায় তলব করা হয়েছে।' সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে এ বিষয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানান। করোনাভাইরাস পরীক্ষা না করেই ভুয়া রিপোর্ট দেওয়া, নিয়ম বহির্ভূতভাবে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা আদায় এবং মেয়াদপূর্তির পরও লাইসেন্স নবায়ন না করায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বেসরকারি রিজেন্ট হাসপাতাল। সহযোগী তরিকুল গ্রেপ্তার রিজেন্ট হাসপাতালের অনিয়ম ও প্রতারণার ঘটনায় তরিকুল ইসলাম ওরফে তারেক শিবলী নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে র?্যাব। বৃহস্পতিবার র?্যাব জানায়, তরিকুলকে রাজধানীর নাখালপাড়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি রিজেন্ট গ্রম্নপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিমের অন্যতম সহযোগী। এই নিয়ে এ ঘটনায় রিজেন্ট গ্রম্নপ ও হাসপাতালের ৯ জন গ্রেপ্তার হলেন। তবে এ-সংক্রান্ত মামলার ১ নম্বর আসামি সাহেদ করিম এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে আছেন। র?্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিলস্নাহ বৃহস্পতিবার বলেন, সাহেদকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। হাসপাতালে অভিযান চলার সময় তার অবস্থান ঢাকাতে ছিল। সাহেদের ভায়রার্ যাব হেফাজতে রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদের ভায়রা ও টিভি নাটকের অন্যতম প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান 'টেলিহোম'র প্রধান মোহাম্মদ আলী বশিরকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছের্ যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্(যাব)। বুধবার দিনগত রাতে বনানীর টেলিহোমের অফিস থেকে আলী বশিরকে হেফাজতে নেয়র্ যাব। সাহেদের অবৈধ টাকা দিয়েই আলী বশির নাটক প্রযোজনা করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। র্ যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিলস্নাহ জানান, সাহেদ সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করতে আলী বশিরকে আনা হয়েছে। এদিকে, রিজেন্টে অনিয়ম ও প্রতারণার ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মো. সাহেদকে গ্রেপ্তারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত রেখেছের্ যাব। শিগগির তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে বলে জানানো হয়েছে।