গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত ৩৩৬০, মৃত্যু ৪১

দেশে রোগী পৌনে ২ লাখ ছাড়াল

প্রকাশ | ১০ জুলাই ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
করোনাভাইরাস
দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের (কোভিড) সংক্রমণ এবং এতে মৃতু্য বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও তিন হাজার ৩৬০ জনের শরীরে শনাক্ত হয়েছে এ ভাইরাস। ফলে এখন পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৭৫ হাজার ৪৯৪ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ৪১ জন। ফলে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল দুই হাজার ২৩৮ জনে। বৃহস্পতিবার দুপুরে করোনাভাইরাস বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানান অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। তিনি নতুন যুক্ত একটিসহ মোট ৭৬টি ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৫ হাজার ৮৬২টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ১৫ হাজার ৬৩২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো নয় লাখ চার হাজার ৭৮৪টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও তিন হাজার ৩৬০ জনের মধ্যে। ফলে শনাক্ত করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল এক লাখ ৭৫ হাজার ৪৯৪ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ৪১ জন। এ নিয়ে মোট মৃতু্য হয়েছে দুই হাজার ২৩৮ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও তিন হাজার ৭০৬ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৮৪ হাজার ৫৪৪ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় যে ৪১ জন মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ২৯ জন এবং নারী ১২ জন। এদের মধ্যে হাসপাতালে মারা যান ৩৮ জন এবং বাসায় মৃতু্য হয় তিনজনের। এদের মধ্যে শূন্য থেকে ১০ বছরের একজন, ১১ থেকে ২০ বছরের একজন, ত্রিশোর্ধ্ব দুজন, চলিস্নশোর্ধ্ব তিনজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ১১ জন, ষাটোর্ধ্ব ১২ জন, সত্তরোর্ধ্ব নয়জন এবং ৮০ বছরের বেশি বয়সি দুইজন রয়েছেন। ১২ জন ঢাকা বিভাগের, ১৪ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, দুজন রাজশাহী বিভাগের, ছয়জন খুলনা বিভাগের, দুজন ময়মনসিংহ বিভাগের, দুজন সিলেট বিভাগের এবং তিনজন রংপুর বিভাগের। বুধবারের পরিস্থিতি : বুধবারের (৮ জুলাই) বুলেটিনে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মারা গেছেন ৪৬ জন। ১৫ হাজার ৬৭২টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও তিন হাজার ৪৮৯ জনের মধ্যে। সে হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় রোগী শনাক্ত ও মৃতু্য উভয়ই কমেছে। দেশে একদিনে সর্বোচ্চ মৃতু্যর রেকর্ড ৬৪ জনের। সে তথ্য জানানো হয়, ৩০ জুনের বুলেটিনে। সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড চার হাজার ১৯ জনের, যা জানানো হয় ২ জুলাইয়ের বুলেটিনে। শনাক্ত, সুস্থতা ও মৃতের হার: বৃহস্পতিবারের বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ২২ দশমিক ২৬ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় রোগী শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৪০ শতাংশ। রোগী শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৪৮ দশমিক ১৭ শতাংশ এবং মৃতের হার ১ দশমিক ২৮ শতাংশ। মোট মৃতু্যর পরিসংখ্যান: এ পর্যন্ত যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে এক হাজার ৭৭০ জন পুরুষ এবং ৪৬৮ জন নারী। শতকরা হিসাবে পুরুষের মৃতু্যহার ৭৯ দশমিক ০৯ এবং নারীর মৃতু্যহার ২০ দশমিক ৯১। বয়স বিবেচনায় শূন্য থেকে ১০ বছর বয়সিদের মৃতু্যহার শূন্য দশমিক ৬৩ শতাংশ, ১১ থেকে ২০ বছর বয়সিদের ১ দশমিক ১৬ শতাংশ, ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সিদের ৩ দশমিক ২৪ শতাংশ, ত্রিশোর্ধ্বদের ৭ দশমিক ১০ শতাংশ, চলিস্নশোর্ধ্বদের ১৪ দশমিক ৬১ শতাংশ, পঞ্চাশোর্ধ্বদের ৩১ দশমিক ০৪ শতাংশ এবং ষাটোর্ধ্বদের মৃতু্যহার ৪৪ দশমিক ১৯ শতাংশ। বিভাগভিত্তিক মৃতু্যহার ঢাকায় সর্বোচ্চ ৫০ দশমিক ৪০ শতাংশ। এরপর চট্টগ্রামে ২৬ দশমিক ১৪ শতাংশ, রাজশাহীতে ৫ দশমিক ০১ শতাংশ, খুলনায় ৫ দশমিক ০১ শতাংশ, বরিশালে ৩ দশমিক ৬২ শতাংশ, সিলেটে ৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ, রংপুরে ৩ দশমিক ০১ শতাংশ এবং ময়মনসিংহে ২ দশমিক ৪১ শতাংশ। আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টিনের তথ্য গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে আরও ৮৭৯ জনকে এবং এ পর্যন্ত আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে ৩৪ হাজার ২২ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৬৬৮ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ১৬ হাজার ৯৫৫ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন ১৭ হাজার ৬৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়েছে দুই হাজার ২৮২ জন, এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়েছে তিন লাখ ৮৬ হাজার ৫৮১ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ১৭৪ জন। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন থেকে মোট ছাড় পেয়েছেন তিন লাখ ২০ হাজার ৪৮৫ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ৬৩ হাজার ১০৬ জন। করোনাভাইরাস থেকে নিজেকে ও পরিবারের সদস্যদের সুরক্ষিত রাখতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি পালনের আহ্বান জানানো হয় বুলেটিনে। বৈশ্বিক পরিস্থিতি করোনাভাইরাসের ছোবলে গোটা বিশ্ব এখন মৃতু্যপুরী। গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে ছড়ানোর পর বিশ্বজুড়ে এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা এখন প্রায় এক কোটি ২২ লাখ। মৃতের সংখ্যা পাঁচ লাখ ৫২ হাজার ছাড়িয়েছে। তবে পৌনে ৭১ লাখের বেশি রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। প্রথম মৃতু্য হয় ১৮ মার্চ।