চিকিৎসা বর্জ্য

বিধিসম্মত ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতে আইনি নোটিশ

প্রকাশ | ১৩ জুলাই ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
চিকিৎসা বর্জ্যের বিধিসম্মত ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার জন্য সরকারকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। রোববার পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ড. আনিকা আলী ও মানবাধিকার সংগঠন ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষে এ নোটিশ পাঠানো হয়। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক, বন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়রসহ দেশের সব সিটি করপোরেশনের মেয়রদের ই-মেইলের মাধ্যমে এ নোটিশ পাঠানো হয়। নোটিশ পাঠানোর পর সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী জানান, চিকিৎসা বর্জ্য (ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াজাতকরণ) বিধিমালা ২০০৮-এর বিধি-বিধান পূর্ণাঙ্গরূপে বাস্তবায়নের জন্য বিবাদীদের অনুরোধ করা হয়েছে। উক্ত বিধিমালার বিধি ৩ অনুযায়ী দেশের প্রত্যেক বিভাগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালকের সভাপতিত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কর্তৃপক্ষ গঠনের কথা বলা হয়েছে। উক্ত কর্তৃপক্ষ চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য উপযুক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দিতে পারবে। লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বিধি অনুযায়ী চিকিৎসা বর্জ্য এমনভাবে ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াজাত করবে যাতে মানব স্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব না পড়ে এবং এ বিধির তফসিল ৬ অনুযায়ী চিকিৎসা বর্জ্য পরিশোধনের যেই মানদন্ড দেওয়া হয়েছে তা অবশ্যই বজায় রাখতে হবে। এছাড়া চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াজাতকরণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নথিপত্র নূ্যনতম তিন বছর সংরক্ষণ করতে হবে। বিধিতে বিশেষভাবে উলেস্নখ করা হয়েছে চিকিৎসা বর্জ্য মজুদ, পরিবহণ, পরিশোধন ও বিনষ্ট করার আগেই তফসিল অনুযায়ী উৎপাদনের স্থানে পৃথক করে রাখতে হবে। বিধি ৪ অনুযায়ী ঢাকনাযুক্ত করতে হবে। বিশেষভাবে উলেস্নখ্য যে, অশোধিত কোনো চিকিৎসা বর্জ্য ৪৮ ঘণ্টার বেশি মজুদ করে রাখা যাবে না। কেবলমাত্র সুনির্দিষ্ট ও সুরক্ষিত এলাকাসমূহে এ চিকিৎসা বর্জ্য মজুদ করা যাবে। আইনজীবীরা আরও জানান, আমরা আশঙ্কা ও গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি কর্তৃপক্ষ বিধিমালা অনুযায়ী তেমন কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। ফলশ্রম্নতিতে অন্য বর্জ্যের মতো চিকিৎসা বর্জ্যের ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও অস্বাস্থ্যকর ও পরিবেশ দূষণ ঘটছে। বিশেষ করে বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে এ আশঙ্কা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ব্যাপক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। সরকারিভাবে লাখ লাখ পিপিই সরবরাহ করা হয়েছে। এছাড়া ব্যক্তি উদ্যোগে কোটি কোটি মাস্ক, হ্যান্ড গস্নাভস ব্যবহৃত হচ্ছে। একই সঙ্গে করোনা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বিপুল পরিমাণ অন্য মেডিকেল সরঞ্জামাদি ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব চিকিৎসা বর্জ্যের যথাযথ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে না পারলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে বড় ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে। কাজেই প্রণীত বিধিমালা অনুযায়ী চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা না গেলে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ বড় ধরনের ঝুঁকির মুখে পড়বে। এ বিষয়গুলো বিবেচনা করে জনস্বার্থে উক্ত নোটিশটি পাঠানো হয়েছে। নোটিশে বিবাদীদের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ৪৮ ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়েছে। উক্ত সময়ের মধ্যে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে জনস্বার্থে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।