করোনাভাইরাসে মৃত্যু বেড়ে তিন হাজার

প্রকাশ | ২৯ জুলাই ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
দেশে মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমিত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৫ জন মারা গেছেন। ফলে দেশে ভাইরাসটির সংক্রমণ শনাক্তের ১৪৩ দিনের মাথায় এসে মোট মৃতু্যর সংখ্যা ৩ হাজারের ঘরে পৌঁছাল। এছাড়া সোমবার সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ২ হাজার ৯৬০ জনের দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ২ লাখ ২৯ হাজার ১৮৫ জনে। মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাভাইরাসবিষয়ক দৈনন্দিন বুলেটিনে এই তথ্য জানান অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসান) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। এ সময় দেশে করোনা পরিস্থিতির বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ৮১টি পরীক্ষাগারে নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ১৩ হাজার ৭০টি। এর মধ্যে পরীক্ষা করা হয়েছে ১২ হাজার ৭১৪টি। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২৩ দশমিক ২৮ শতাংশ। এখন পর্যন্ত শনাক্তের হার ২০ দশমিক ১৫ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মৃতু্যর হার ১ দশমিক ৩১ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৭৩১ জনসহ এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ২৭ হাজার ৪১৪ জন। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৩৫ জনের মধ্যে পুরুষ ২৬ জন ও নারী ৯ জন। হাসপাতালে মারা গেছেন ২৬ জন, বাড়িতে মারা গেছেন ৮ জন। আর হাসপাতালে মৃত অবস্থায় এসেছেন একজন। এখন পর্যন্ত পুরুষ মোট মারা গেছেন ২ হাজার ৩৫৮ জন। যা শতাংশের হিসেবে ৭৮ দশমিক ৬০। আর নারী মারা গেছেন ৬৪২ জন, শতাংশের হিসেবে ২১ দশমিক ৪০। মারা যাওয়াদের মধ্যে বয়স বিভাজন করে দেখা যায় ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১০ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ১৩ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৩ জন আর ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে মারা গেছেন ৪ জন। এছাড়া এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৩ হাজার জনের মধ্যে বয়স বিভাজনে দেখা গেছে, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে ১৮ জন, যা মোট মৃতু্যর দশমিক ৬০ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ৩০ জন, যা ১ দশমিক শূন্য শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৮৪ জন অর্থাৎ ২ দশমিক ৮০ শতাংশ; ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২০০ জন, ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৪২৫ জন, ১৪ দশমিক ১৭ শতাংশ; ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৮৬৯ জন, ২৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ এবং ষাটোর্ধ্ব ১ হাজার ৩৭৪ জন অর্থাৎ ৪৫ দশমিক ৮০ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ৫ জন, খুলনা ও সিলেট বিভাগে ৪ জন করে, বরিশাল ও রাজশাহী বিভাগে ৩ জন করে, ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগে ২ জন করে মারা গেছেন। এ পর্যন্ত বিভাগ অনুযায়ী মারা গেছেন ঢাকা বিভাগে ১ হাজার ৪৪৪ জন অর্থাৎ ৪৮ দশমিক ১৩ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ৭৩১ জন, ২৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ১৭৭ জন, ৫ দশমিক ৯০ শতাংশ; খুলনা বিভাগে ২১২ জন, ৭ দশমিক ০৭ শতাংশ; বরিশাল বিভাগে ১১৫ জন, ৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ; সিলেটে ১৪৪ জন, ৪ দশমিক ৮০ শতাংশ; রংপুর বিভাগে ১১৩ জন, ৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৬৪ জন, ২ দশমিক ১৩ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৭১৩ জন ও আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৭৩২ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে গেছেন ৪৮ হাজার ৪৮৯ জন ও ছাড় পেয়েছেন ২৯ হাজার ৫০১ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৮ হাজার ৯৮৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৯৯২ জন। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে গেছেন ৪ লাখ ২৯ হাজার ৯৮৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ২ হাজার ৫২৩ জন। এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৩ লাখ ৭২ হাজার ১৩০ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫৭ হাজার ৮৫৯ জন। এদিকে, সোমবারের (২৭ জুলাই) বুলেটিন অনুযায়ী ৩৭ জন মারা গেছেন। ওই সময়ে ১২ হাজার ৮৫৯টি নমুনা পরীক্ষা করে ২ হাজার ৭৭২ জনের দেহে ভাইরাসটি ধরা পড়েছিল। সে হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতু্য কমলেও রোগী শনাক্ত সংখ্যা বেড়েছে। দেশে ৩০ জুনের বুলেটিনে একদিনে সর্বোচ্চ মৃতু্য রেকর্ড ৬৪ ও ২ জুলাইয়ের বুলেটিনে একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড ৪ হাজার ১৯ জন ছিল। বরাবরের মতো গতকালের বুলেটিনেও করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত ও সুস্থ থাকতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়। প্রসঙ্গত, গত ডিসেম্বরের শেষের দিকে বিশ্বের অন্যতম জনবহুল দেশ চীনের উহান নগরীতে সার্স গোত্রীয় করোনাভাইরাসটি প্রথম শনাক্ত হয়। এর পর ক্রমান্বয়ে তা সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। এখন পর্যন্ত বিশ্বে ভাইরাসটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ৬৬ লাখ ৫৯ হাজার ছাড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা ৬ লাখ ৫৭ হাজার প্রায়। তবে সুস্থ রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ২ লাখ ৫৩ হাজার ছাড়িয়েছে। বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ ভাইরাসটি প্রথম শনাক্ত হওয়ার ১০ দিন পর ১৮ মার্চ প্রথম একজনের মৃতু্য হয়।