পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু

প্রকাশ | ২৯ জুলাই ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
করোনা মহামারির বিশেষ পরিস্থিতিতে সীমিতসংখ্যক হাজীর অংশগ্রহণে শুরু হয়েছে পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তারা পবিত্র মক্কা নগরী থেকে পাড়ি জমান মিনার দিকে। মিনার খিমায় তাঁবু খাটিয়ে তাদের সবাইকে একত্রে রাত কাটাতে হবে। আজ বুধবার সারা দিনে তারা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবেন। বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজ শেষে তারা মিনা থেকে যাবেন আরাফাতের ময়দানে। এবার বিশ্বের কোনো দেশ থেকেই কেউ হজে যাওয়ার সুযোগ পায়নি। তবে সৌদিতে অবস্থানরত হাতেগোনা কিছুসংখ্যক বাংলাদেশি এই বিরল সুযোগ পেয়েছেন। জানা গেছে, ব্যতিক্রমী এই হজে মাত্র এক হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমান অংশ নিচ্ছেন। তারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নাগরিক হলেও আগে থেকে সৌদি আরবের বাসিন্দা। এবার মোট এক হাজার লোক হজে অংশ নিলেও তাদের মাত্র ৩০ ভাগ সৌদির নিজস্ব নাগরিক। গত দুদিনে তারা সবাই মক্কায় এসে হাজির হয়েছেন। তাদের কণ্ঠে ছিল- মহান আলস্নাহর পবিত্র ঘর কাবা শরিফে হাজির হওয়ার ফজিলতের সেই দোয়া- 'লাব্বাইক আলস্নাহুম্মা লাব্বাইক।' বেশিরভাগই মক্কা থেকে মোয়ালেস্নমের বাসে করে মিনায় যাবেন। শরীয়ত মোতাবেক- হজের অংশ হিসেবে বুধবার পর্যন্ত তারা অবস্থান করবেন মিনায়। সেখানে হাজিরা সারা জীবনের পুঞ্জীভূত গুনাহ মাফ ও মহান আলস্নাহর নৈকট্য লাভের আশায় জিকির-আজকার ও \হইবাদত-বন্দেগির মধ্য দিয়ে সময় কাটাবেন। প্রতিদিন নিজ নিজ তাঁবুতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবেন জামাতের সঙ্গে। প্রতিটি তাঁবুতে এবার দুই থেকে চারজন হজযাত্রীর একত্রে থাকার সুবিধা রয়েছে যাতে কোভিড-১৯ বিধানের আওতায় সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। এরই মধ্যে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা থেকেও এবারের সীমিত আকারের ব্যতিক্রমী হজের সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন দেওয়া হয়েছে। সেটা অনুসরণ করেই মক্কা মদিনা, মিনা, মুজদালিফা ও আরাফাতের ময়দানে নেওয়া হয়েছে বিশেষ সুব্যবস্থা। এদিকে জমজমের পানি বোতলে করে সরবরাহ করা হবে হাজীদের। তবে করোনার কারণে ছোঁয়া যাবে না কাবাঘর, কালো পাথরে চুমু খাওয়াও এবার নিষিদ্ধ। নামাজ পড়ার জন্য আনতে হবে নিজস্ব জায়নামাজ। মূলত মক্কা থেকে মিনার মাঠে পৌঁছার মাধ্যমেই শুরু হয় হজের আনুষ্ঠানিকতা। প্রতি বছর হজের দুই দিন আগে অর্থাৎ ৭ জিলহজ দিবাগত সন্ধ্যায় মক্কা থেকে মিনার মাঠের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন হজযাত্রীরা। পরের দিন ৮ জিলহজ সারা দিন মিনার মাঠে তারা নিজ নিজ তাঁবুতে কাটাবেন। আজ বুধবার সারাদিন অবস্থানের পর বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজ আদায় শেষে আরাফাতের উদ্দেশে যাত্রা করবেন। সাধারণত হজযাত্রীরা নিজস্ব মোয়ালেস্নমের ব্যবস্থাপনায় পাঠানো বাসে মিনার মাঠ থেকে সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরের আরাফাতের ময়দানে পৌঁছে থাকেন। ফজর থেকে তাদের যাত্রা শুরু হয়। চলে দুপুর পর্যন্ত। হজযাত্রীরা আলস্নাহর প্রেমে উন্মাদের মতো ছুটেন আরাফাতের মাঠে। তাদের সঙ্গে থাকে শুধু একটি ব্যাগ- যাতে রাখা হয় কিছু অতীব জরুরি জিনিসপত্র। যেমন থালা-বাসন, পানির মগ, ওষুধ ও ওজু-গোসলের জন্য গামছা জাতীয় কাপড়। মূলত আরাফাতের ময়দানে ৯ জিলহজ সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করাই হজের মূল কাজ। সহিহ হাদিসে রয়েছে- যিনি ৯ জিলহজ সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অকুফে আরাফায় অবস্থান করবেন- তিনিই হাজী হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন। আর হজে মকবুল বা কবুল হজের ফজিলত হচ্ছে- নিশ্চিত জান্নাত লাভ। উলেস্নখ্য, এবারের হজে হাজীদের সব খরচ দিচ্ছে সৌদি সরকার। হজের দ্বিতীয় দিন আরাফাতের ময়দানের খুতবা বাংলাসহ ১০টি ভাষায় অনূদিত হবে।