হাসপাতালে আর অভিযান চায় না স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়

প্রকাশ | ০৬ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
দেশের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালসমূহে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সরাসরি অভিযান পরিচালনা না করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবে জরুরি প্রয়োজনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে অভিযান পরিচালনার অনুরোধ জানানো হয়েছে। গত মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের বেসরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা-১ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব উম্মে হাবিবা স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি চিঠি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। চিঠিতে বলা হয়, 'করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাবের পর দেশে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালসমূহে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন সদস্যরা নানা বিষয়ে অভিযান পরিচালনা করছেন। একটি হাসপাতালে একাধিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান পরিচালনা করাতে তাদের স্বাভাবিক চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে এবং এ কারণে স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানসমূহে এক ধরনের চাপা অসন্তোষ বিরাজ করছে।' 'ইতোমধ্যে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সার্বিক কার্যক্রম পরিবীক্ষণ করার জন্য একটি টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করা হয়েছে যেখানে জননিরাপত্তা বিভাগের একজন যুগ্ম সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তা সদস্য হিসেবে আছেন। ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো অপারেশন পরিচালনার অভিযান দেখা দিলে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সঙ্গে পরামর্শক্রমে তা করা যাবে।' এই অবস্থায় যে কোনো সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা থেকে বিরত থাকা এবং জরুরি অভিযান পরিচালনার প্রয়োজনীয়তা অনুভব হলে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে চিকিৎসা শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সাথে সমন্বয়ে পরিচালনা করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয় চিঠিতে। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর আলোচনা হয়েছে বলে চিঠিতে উলেস্নখ করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, করোনা মহামারি চলাকালীন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহে বিভিন্ন অনিয়ম ও জালিয়াতি ধরা পড়ে। বিশেষ করে বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে করোনা পরীক্ষার নামে জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটে। এরই জের ধরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করে। সেই অভিযানকালেও লাইসেন্সবিহীন অবস্থায় বছরের পর বছর হাসপাতাল পরিচালনার অনিয়ম ধরা পড়ে। বিভিন্ন অনিয়ম ও জালিয়াতির ঘটনা অভিযানকালে ধরা পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে চাপের মুখে স্বাস্থ্য মহাপরিচালক অধ্যাপক ডক্টর আবুল কালাম আজাদ পদত্যাগ করেন এবং হাসপাতাল পরিচালকসহ একাধিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ওএসডি হন। অভিযান পরিচালনার ফলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসতে শুরু করে। বিভিন্ন হাসপাতালের মালিকরা স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রীর কাছে অভিযান পরিচালনা থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানান।