পুরানো চেহারায় ফিরছে রাজধানী ঢাকা

দেশের সড়ক-মহাসড়ক নৌ-বন্দরসহ অন্যান্য টার্মিনালে রাজধানীমুখী মানুষের চাপ দেখা গেছে। ফেরিঘাটগুলোতেও দেখা গেছে মানুষের ভিড়

প্রকাশ | ০৭ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
ঈদের ছুটি শেষে আবারও কর্মমুখী মানুষের চলাচলে মুখর হয়ে উঠেছে রাজধানীর সড়কগুলো -বাংলা নিউজ
করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়েই প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে গ্রামে গিয়েছিলেন হাজারও কর্মজীবী মানুষ। ছুটি শেষে আবারও তারা কর্মস্থল ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন। তাতে পুরানো চেহারায় ফিরছে রাজধানী। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এবং খোঁজ নিয়ে পাওয়া গেছে এমন চিত্রই। দুদিন আগেও যেসব বাসস্ট্যান্ডে যাত্রী পাওয়া যেত না, এখন সেখানে বাসের জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করছেন যাত্রীরা। এছাড়া কমলাপুর রেলস্টেশন ও সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল হয়েও ফিরছেন অনেকে। দেশের সড়ক-মহাসড়ক, নৌ-বন্দরসহ অন্যান্য টার্মিনালে রাজধানীমুখী মানুষের চাপ দেখা গেছে। ফেরি ঘাটগুলোতেও দেখা গেছে মানুষের ভিড়। তবে অধিকাংশ পরিবহণে স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি। পরিবহণ চালকরা জানিয়েছেন, ঈদের আগ মুহূর্তে অধিকাংশ কর্মজীবী মানুষ প্রায় একসঙ্গে ঢাকা ছাড়লেও ফেরার সময় আলাদা আলাদাভাবে ফেরেন। অনেকেই ঈদের ছুটির সঙ্গে বাড়তি ছুটি যোগ করে নেন। কেউ কেউ ঈদ শেষে অফিস ধরতে ঢাকায় ফিরলেও তাদের পরিবার বাড়িতে রেখে আসেন। সে কারণে ফেরার সময় সাধারণত যাত্রীদের চাপ কিছুটা কম থাকে। রাজধানীর সড়কেও চলাচল শুরু করেছে প্রায় সব ধরনের যানবাহন। বৃষ্টি উপেক্ষা করেও কাজের নিমিত্তে ঘর থেকে বের হয়েছেন অনেকে। বিভিন্ন সিগনাল আর রাস্তার মোড়ে লক্ষ্য করা গেছে দীর্ঘ যানজটও। অনেককেই আবার গন্তব্যে যেতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে দীর্ঘ সময়। রাজধানীর বিজয় সরণি মোড়ে মহাখালী যাওয়ার জন্য অপেক্ষারত মো. আব্দুল হাকিম বলেন, ঈদের ভেতর ঢাকা একদম ফাঁকা হয়ে যায়। অথচ ঈদের ছুটি শেষ হতে না হতেই আবার ভিড় বাড়তে থাকে। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছেন। কয়েকটি বাস দেখলেও সেগুলো পরিপূর্ণ। ফাঁকা বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন। কয়েকদিনের জন্য ফাঁকা হয়ে যাওয়া ঢাকা এখন আবার কর্মব্যস্ত হতে চলেছে। রাজধানীতে ফেরা মানুষের ভিড় এখন স্টেশন ও টার্মিনালগুলোতে বেশি লক্ষ করা যাচ্ছে। মাত্র দুদিন আগেও যে রাস্তা ছিল ২০ মিনিটের, এখন তা প্রায় এক ঘণ্টার। এ বিষয়ে শাহবাগ মোড়ে কামরুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, দুদিন আগেও মতিঝিল থেকে শাহবাগে এসেছেন মাত্র ১০ থেকে ১৫ মিনিটে। অথচ আজ প্রায় এক ঘণ্টা লাগল। জ্যাম, সিগনাল, পথচারী সবকিছুই এই দুই দিনে বেড়েছে। এদিকে, ঈদে ঢাকা ছাড়ার তুলনায় ঈদের পর ঢাকাগামী যাত্রীর চাপ বেশি বলে জানিয়েছে বিভিন্ন পরিবহণ কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে শ্যামলী পরিবহণ এবং হানিফ পরিবহণ কর্তৃপক্ষ জানায়, ঈদের সময় যাত্রীর চাপ সবসময়ই একটু বেশি থাকে। তবে এবার করোনার কারণে অন্যান্যবারের মতো চাপ না থাকলেও একেবারে কম নয়। প্রতিবারই ঈদের ছুটিতে ফাঁকা হয়ে যায় ঢাকা। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে গ্রামের বাড়ি ছুটে যায় লাখো মানুষ। ঈদ শেষে ঘরে ফেরা মানুষ ফিরতে শুরু করে রাজধানীতে। সবকিছু মিলে শুক্র ও শনিবারের ছুটি শেষে আগামী রোববার থেকে আবারও আগের রূপে ফিরে যাবে কর্মব্যস্ত যানজটের এই নগরী, এমনটাই মনে করছে সবাই। জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, 'যাত্রীদের চাপ কিছুটা বাড়ছে। তবে ফেরিঘাটগুলোতে ভিড় থাকার কারণে জট লেগে যাচ্ছে। তারা সব পরিবহণ মালিককে বলে দিয়েছেন কোথাও স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করে পরিবহণে যাত্রী নেওয়া যাবে না।