দেশে করোনা পরীক্ষা ও শনাক্ত কমেছে

২৪ ঘণ্টায় আরও ৩২ জনের মৃতু্য

প্রকাশ | ০৯ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ভ্যাকসিন তৈরিতে চলছে নিরন্তর প্রচেষ্টা -ফাইল ছবি
দেশে শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা ও শনাক্তের সংখ্যা কমেছে। তবে শুক্রবারের চেয়ে গতকাল এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যের সংখ্যা বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৬১১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শুক্রবার এই সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৮৫১ জন। এই সময় নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১১ হাজার ৭৩৭টি। এর আগের দিন নমুনা পরীক্ষা করা হয় ১২ হাজার ৬৯৯টি। তবে শুক্রবার ২৭ জন মারা গেলেও শনিবার এই সংখ্যা ৩২ জনে দাঁড়ানোয় মৃতু্যর সংখ্যা বেড়েছে। প্রতিদিনের ন্যায় শনিবার (৮ আগস্ট) দুপুর আড়াইটায় কোভিড-১৯ তথা করোনাভাইরাস সম্পর্কিত নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা। এ সময় দেশে করোনার সর্বশেষ তথ্য উপস্থাপন করে তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা অক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩২ জন। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৩৬৫ জন মারা গেলেন। একই সময় শনাক্ত হয়েছেন আরও ২ হাজার ৬১১ জন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত দেশে মোট শনাক্ত হলেন ২ লাখ ৫৫ হাজার ১১৩ জন। তবে ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ২০ জনসহ এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৪৬ হাজার ৬০৪ জন সুস্থ হয়েছেন। অনলাইন ব্রিফিংয়ে অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ১১ হাজার ৫২৯টি নমুনা সংগ্রহ শেষে পূর্বের কিছু মজুদ নমুনাসহ ৮৪টি পিসিআর ল্যাবরেটরিতে মোট ১১ হাজার ৭৩৭টি নমুনা পরীক্ষা করে ২ হাজার ৬১১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ সময় মারা গেছেন ৩২ জন। এখন পর্যন্ত ১২ লাখ ৪৯ হাজার ৫০৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২২ দশমিক ২৫ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ এবং মৃতু্যর হার ১ দশমিক ৩২ শতাংশ। সর্বশেষ মারা যাওয়া ৩২ জনের মধ্যে পুরুষ ২৫ জন এবং নারী ৭ জন। এ পর্যন্ত ২ হাজার ৬৫৫ জন পুরুষ এবং ৭১০ জন নারী মারা গেছেন। ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৪ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ১০ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১২ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৪ জন, ২১ থেকে ৩০ বছর ১ জন রয়েছেন। বসবাস স্থান বিশ্লেষণে দেখা যায়, তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১৬ জন, চট্টগ্রামে ৪ জন, খুলনায় ৫ জন, রাজশাহীতে ৪ জন, বরিশালে ১ জন এবং সিলেটে ২ জন রয়েছেন। ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ৩১ জন এবং বাড়িতে ১ জন মারা গেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৮৬৪ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৯ হাজার ২৫ জন। আইসোলেশন থেকে সর্বশেষ ৪৯০ জন এবং এখন পর্যন্ত ৩৭ হাজার ১৪ জন ছাড় পেয়েছেন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশন করা হয়েছে ৫৬ হাজার ৩৯ জনকে। একইভাবে প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ২ হাজার ১৮৪ জনকে। কোয়ারেন্টিন থেকে সর্বশেষ ১ হাজার ৮৫১ জনসহ এ পর্যন্ত ৩ লাখ ৯৭ হাজার ৩৮০ জন ছাড়া পেয়েছেন। এছাড়া এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ৪ লাখ ৫০ হাজার ৩৩২ জনকে। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫২ হাজার ৯৪২ জন। অন্যদিকে গত ৭ আগস্ট শুক্রবারের বুলেটিনে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ২৭ জন মৃতু্যর কথা বলা হয়। ওই সময় ১২ হাজার ৬৯৯টি নমুনা পরীক্ষা করে ২ হাজার ৮৫১ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়। দেশে একদিনে সর্বোচ্চ মৃতু্যর রেকর্ড ৬৪ জনের। সে তথ্য জানানো হয় ৩০ জুনের বুলেটিনে। সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড ৪ হাজার ১৯ জনের। তবে করোনার ঝুঁকি এড়াতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা দেশবাসীকে অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, করোনা সন্দেহে কারও দেহে লক্ষণ বা উপসর্গ থাকলে কাছের পরীক্ষাকেন্দ্রে নমুনা পরীক্ষা করাবেন। কারণ ভাইরাসটির উপসর্গযুক্ত যত মানুষের পরীক্ষা করা হবে, ততই করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। প্রসঙ্গত, গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহান প্রদেশ থেকে ছড়ানো করোনাভাইরাসে সারাবিশ্বে আক্রান্ত ও মৃতু্যর সংখ্যা ক্রমেই দীর্ঘতর হচ্ছে। এখন পর্যন্ত বিশ্বে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ৯৫ লাখ ৪৮ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। মৃতু্যর সংখ্যা ৭ লাখ ২৪ হাজারের বেশি। তবে সুস্থ রোগীর সংখ্যা প্রায় ১ কোটি সাড়ে ২৫ লাখ। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ।