কেউ অপরাধ করলে তার কঠিন শাস্তি হোক: ডা. আজাদ

প্রকাশ | ১৪ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
মহামারির মধ্যে করোনাভাইরাসের চিকিৎসা ও পরীক্ষা নিয়ে রিজেন্ট হাসপাতাল ও জেকেজি হেলথ কেয়ারের প্রতারণা নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদকে পাঁচ ঘণ্টার বেশি জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন দুদকের তদন্ত কর্মকর্তারা। তবে প্রথম দিনের মতো বৃহস্পতিবারও দুদকের জিজ্ঞাসাবাদের পর নিজের গুণগান করে একই বক্তব্য দিয়েছেন অধ্যাপক আজাদ। জিজ্ঞাসাবাদের পর সাংবাদিকরা তাকে ঘিরে ধরলে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, 'এই কথা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই যে, কেউ অপরাধ করলে তার কঠোর শাস্তি হোক- এই আমি চাই। এ বিষয়ে তদন্তে আমি সকল সহযোগিতা প্রদান করব।' লিখিত বক্তব্যের বাইরে সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নের জবাব দেননি অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, 'রিজেন্ট হাসপাতালের প্রতারণার অভিযোগ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করছে। সাবেক মহাপরিচালক হিসেবে এ বিষয়ে আমার কাছ থেকে শোনার জন্য দুদকের কর্মকর্তাগণ আমাকে আসার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। আমি সেজন্যই আজ এসেছিলাম। যা জানি তাদের বলেছি। জেকেজি বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন। তাই এই বিষয়ে বেশি কিছু বলা সমীচীন নয়।' মার্চে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর বেসরকারি রিজেন্ট হাসপাতাল এই রোগের চিকিৎসার অনুমোদন নেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে। জেকেজিকেও করোনাভাইরাস পরীক্ষার অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে প্রতিষ্ঠান দুটি পরীক্ষা না করেই করোনাভাইরাসের ভুয়া প্রতিবেদন দেয় বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে বেরিয়ে আসে। পরে দুই প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার করা হয়, বাতিল করা হয় তাদের অনুমোদন। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে উপস্থিত হলে ডা. আবুল কালাম আজাদকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন দুদক পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যার নেতৃত্বে একটি দল। এর আগে নিম্নমানের মাস্ক, পিপিই ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সরঞ্জাম কেনায় দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে বুধবার ডা. আবুল কালাম আজাদকে সাড়ে চার ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের কাছে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে লিখিত বক্তব্যে একই কথা বলেছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক এই মহাপরিচালক। রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক (ওএসডি) ডা. মো. আমিনুল হাসান, উপ-পরিচালক মো. ইউনুস আলী এবং গবেষণা কর্মকর্তা ডা. মো. দিদারুল ইসলামকেও বুধবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন ডা. আজাদ। সরকারি চাকরির বয়স শেষ হওয়ার পরও তাকে চুক্তিতে নিয়োগ দিয়ে ওই পদে রেখেছিল সরকার। সে অনুযায়ী তার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল আগামী বছরের এপ্রিলে। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একের পর এক কেলেঙ্কারির খবর প্রকাশ হতে থাকলে বিপাকে পড়তে হয় ডা. আজাদকে। মার্চের শেষ ভাগে কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে বিভিন্ন হাসপাতালে যেসব মাস্ক পাঠানো হয়, তার প্যাকেটে 'এন-৯৫' লেখা থাকলেও ভেতরে ছিল সাধারণ সার্জিক্যাল মাস্ক। সে সময় সমালোচনার মধ্যে আরও অনেকের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদের নামও আসে। এরপর করোনাভাইরাসের পরীক্ষা ও চিকিৎসা নিয়ে জেকেজি হেলথ কেয়ার ও রিজেন্ট হাসপাতালের প্রতারণা ও জালিয়াতির খবর ফাঁস হলে ডা. আজাদ তোপের মুখে পড়েন। এরপর গত ২১ জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পদত্যাগপত্র দেন তিনি।