গ্যাসের পাইপ লিকেজেই মসজিদে বিস্ফোরণ তিন কমিটির প্রতিবেদন জমা

প্রকাশ | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
বিপুল পরিমাণে গ্যাস জমে থাকার কারণেই নারায়ণগঞ্জের মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে উঠে এসেছে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে। বৃহস্পতিবার বিকালে প্রতিবেদনটি জমা দেওয়া হয়। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসাইন বলেন, আগুনের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তাদের ১০ কার্যদিবস সময় দেওয়া হয়। বিকালে কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়। ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, প্রতিবেদনে বিস্ফোরণের কারণ হিসেবে মসজিদের গ্যাস জমাট বেঁধে থাকা উলেস্নখ করা হয়েছে। গ্যাসের আগুন থেকেই পরবর্তী সময় এসির বিস্ফোরণ হয়। প্রতিবেদনে উলেস্নখ করা হয়েছে, মসজিদ ভবনটি তৈরিতে বিল্ডিং কোড মানা হয়নি। তিতাসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্যাস লিকেজের বিষয়ে তিতাস কর্তৃপক্ষের কাছে এলাকাবাসী বা মসজিদ কমিটি অবগত বা অভিযোগ করেছে বলে লিখিত কোনো দলিল পাওয়া যায়নি। তবে অনেকে কমিটির কাছে বলেছে, তিতাসকে মৌখিকভাবে গ্যাস লিকেজের বিষয়ে অবগত করা হয়েছিল। এদিকে, অবৈধ গ্যাস সংযোগের রাইজার থেকে ও পাইপ লাইনের ওপর মসজিদ নির্মাণ করায় লাইনের ছিদ্র থেকে নির্গত গ্যাস মসজিদে জমা হয়। বিদু্যতের অবৈধ লাইন ব্যবহার করতে গিয়ে স্পার্কের মাধ্যমে বিস্ফোরণ ঘটে মসজিদে আগুন ধরেছে বলে তিতাসের অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বিদু্যৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিতাস গ্যাসের অনুসন্ধান কমিটির আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহাব এ কথা জানান। ৪ সেপ্টেম্বর রাতে নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম তলস্না বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণে অর্ধ শতাধিক মানুষ দগ্ধ হন। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড পস্নাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ৩৭ জনকে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এখন পর্যন্ত শিশুসহ ৩১ জনের মৃতু্য হয়। ওই বিস্ফোরণে মসজিদের ছয়টি এসি পুড়ে গেছে ও থাই জানালার গস্নাস উড়ে গেছে। অন্যদিকে, তিতাস গ্যাসের পাইপের লিকেজ, বিদু্যতের শর্ট সার্কিট এবং মসজিদ কমিটির অবহেলার কারণেই নারায়ণগঞ্জের পশ্চিম তলস্না বাইতুস সালাত জামে মসজিদে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে জেলা প্রশাসনের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। পাশাপাশি মসজিদের ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে রাজউকের অব্যবস্থাপনা এবং মসজিদের সামনের রাস্তা নির্মাণে সংশ্লিষ্টদের অবহেলার বিষয়টিও উলেস্নখ করা হয়েছে এই প্রতিবেদনে। গত ৪ সেপ্টেম্বরের রাতে বিস্ফোরণের ঘটনার পরদিন জেলা প্রশাসন থেকে কমিটি গঠনের দীর্ঘ ১১ দিন পর বৃহস্পতিবার বিকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিনের হাতে ৪০ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত কমিটির প্রধান ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খাদিজা তাহেরা ববি। এ সময় তদন্ত কমিটির অপর চার সদস্য হলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এটিএম মোশারফ হোসেন, ডিপিডিসির পূর্ব বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম মোরশেদ, ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আবদুলস্নাহ আল আরেফিন এবং তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির নারায়ণগঞ্জের উপ-মহাব্যবস্থাপক মফিজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।