তিন ঘণ্টায় করোনা শনাক্তের দাবি বিজ্ঞানীদের

মানুষের দেহে মহামারি করোনাভাইরাস শনাক্তে নতুন একটি পরীক্ষা পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানীরা। কোনো ল্যাবরেটরি ছাড়াই বিশেষর্ যাপিড টেস্ট পদ্ধতিতে মাত্র দেড় ঘণ্টার (৯০ মিনিট) মধ্যে নির্ভুলভাবে করোনাভাইরাস শনাক্ত করে ফলাফল দেওয়া সম্ভব বলে দাবি করছেন ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের গবেষকরা। নতুন এই উদ্ভাবনী পদ্ধতিতে দ্রম্নত রোগী শনাক্তে ইতোমধ্যে সে দেশটির ৮টি হাসপাতালে এই 'ল্যাব-অন-এ-চিপ' যন্ত্র ব্যবহৃতও হচ্ছে।র্ যাপিড টেস্টের ফলের সঙ্গে ল্যাবরেটরিতে করা পরীক্ষার ফলের ব্যাপক মিল পাওয়া যাচ্ছে। যুক্তরাজ্যের সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন ডিএনএনাজ কোম্পানির বানানো এ 'ল্যাব-অন-এ-চিপ' যন্ত্রে নাক বা গলা থেকে শ্লেষ্মা সংগ্রহে সক্ষম যেকোনো ব্যক্তিই করোনাভাইরাস শনাক্তের পরীক্ষাটি করতে পারবেন। করোনার উপসর্গ সন্দেহযুক্ত ব্যক্তির শ্লেষ্মা নেওয়ার পর সোয়াবটিকে একটি ডিসপোজেবল নীল কার্টিজের মধ্যে রাখতে হবে। এতে ওই কার্টিজের ভেতরেই ভাইরাসের উপস্থিতি আছে কি নেই, তা নির্ণয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রাসায়নিকগুলো থাকবে। এরপর ওই কার্টিজটিকে জুতার বাক্স আকৃতির যন্ত্রের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে। তখন মেশিনটিই ভাইরাসের উপস্থিতি আছে কি নেই তা বিশ্লেষণ করে দেখবে। লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের এক গবেষণায় ৩৮৬ জনের নমুনা নিয়ে একইসঙ্গে ডিএনএনাজের যন্ত্র ও প্রচলিত ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। গবেষণাটি পরে ল্যানসেট মাইক্রোব জার্নালে প্রকাশিতও হয়। এ পদ্ধতির কার্যকারিতা বিষয়ে ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক গ্রাহাম কুক মনে করেন, যেকোনো নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন খুবই স্বস্তিদায়ক। কারণ বেশির ভাগ পরীক্ষা পদ্ধতিতেই হয় সময় বেশি লাগে, না হয় যতটা নির্ভুল ফল আশা করা হয়, ততটা পাওয়া যায় না। কিন্তু এই পরীক্ষাপদ্ধতি দুটো শর্তই পূরণ করেছে।' গবেষণায় দেখা গেছে, যে যে ব্যক্তির নমুনায় করোনাভাইরাসের উপস্থিতি নেই বলে ল্যাবরেটরির পরীক্ষা থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে; সেই ব্যক্তিদের নমুনায় নতুনর্ যাপিড টেস্টও একই ফল দিয়েছে। আর যাদের শরীরে ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে, তাদের নমুনায় ল্যাবরেটরির পরীক্ষার ফল আরর্ যাপিড টেস্টের ফলে ৯৪ শতাংশ ক্ষেত্রে মিল পাওয়া গেছে। যুক্তরাজ্য এরই মধ্যে ৫ হাজার টি নাজবক্স মেশিন ও ৫৮ লাখ ডিসপোজেবল কার্টিজ কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে নতুন এ যন্ত্রটির সীমাবদ্ধতাও আছে। যন্ত্রটি একইসঙ্গে একাধিক নমুনা পরীক্ষা করতে পারে না। এক দিনে এ ধরনের একটি যন্ত্র দিয়ে কোনোভাবেই ১৬টির বেশি নমুনা পরীক্ষা সম্ভব হবে না।