করোনায় মৃতু্যর মিছিলে আরও ৩২ জন

শনাক্ত ১৫৬৭

প্রকাশ | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস-জনিত মৃতু্যর মিছিলে আরও ৩২ জন যুক্ত হয়েছেন। এই সময়ে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৫৬৭ জন। এই নিয়ে গত ৮ মার্চের পর থেকে এ পর্যন্ত দেশে করোনায় মারা গেলেন ৪ হাজার ৯১৩ জন এবং রোগী শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৩ লাখ ৪৭ হাজার ৩৭২ জনে। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ২ হাজার ৫১ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ২ লাখ ৫৪ হাজার ৩৮৬ জনে। প্রতিদিনের মতো গতকাল শনিবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত করোনাভাইরাস-বিষয়ক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এদিকে আগের দিনের তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃতু্য ও নতুন রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। আগের দিন ২২ জনের মৃতু্যর তথ্য ছিল। নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল ১ হাজার ৫৪১ জন। অবশ্য নতুন রোগী বাড়লেও পরীক্ষা কম হওয়ায় শুক্রবারের চেয়ে গতকাল (শনিবার) নতুন রোগী শনাক্তের হার সামান্য কম। শুক্রবার রোগী শনাক্তের হার ছিল ১২ দশমিক ১১ শতাংশ। গতকাল শনিবার শনাক্তের হার ১১ দশমিক ৯০ শতাংশ হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যালোচনায় শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত সারাদেশ থেকে ১২ হাজার ৫৮৭টি নমুনা সংগ্রহ হয়। এরপর যাচাই-বাছাই শেষে আগের কিছু নমুনাসহ মোট ১৩ হাজার ১৭০ জনের নুমনা পরীক্ষা করা হয়। এ সময় ৯৫টি কোভিড-১৯ ল্যাবরেটরিতে নিবিড় পরীক্ষা-নিরীক্ষায় নতুন করে ১ হাজার ৫৬৭ জন আক্রান্ত শনাক্ত হন। এই নিয়ে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৩ লাখ ৪৭ হাজার ৩৭২ জনে এবং মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা ১৮ লাখ ৯ হাজার ৬৭৯টিতে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া সর্বশেষ ৩২ জন মারা যাওয়াসহ এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে ৪ হাজার ৯১৩ জনের মৃতু্য হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় মৃতু্যদের মধ্যে পুরুষ ২৫ ও নারী ৭ জন। যাদের সবাই হাসপাতালে মারা গেছেন। তাদের বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মৃত ৩২ জনের মধ্যে দশোর্ধ্ব ১ জন, বিশোর্ধ্ব ১ জন, ত্রিশোর্ধ্ব ১ জন, চলিস্নশোর্ধ্ব ৪ জন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ৮ জন এবং ষাটোর্ধ্ব ১৭ জন রয়েছেন। বসবাসের বিভাগ অনুযায়ী, ৩২ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২২ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৪ জন, খুলনায় ২ জন, চট্টগ্রামের ১ জন, বরিশাল বিভাগে ১ জন, সিলেট বিভাগে ১ জন ও রংপুর বিভাগে ১ জন রয়েছেন। এ পর্যন্ত করোনায় মোট মৃতের মধ্যে পুরুষ ৩ হাজার ৮২৯ (৭৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ) এবং নারী ১ হাজার ৮৪ জন (২২ দশমিক শূন্য ০৬ শতাংশ)। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ১১ দশমিক ৯০ শতাংশ এবং এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ২০ শতাংশ। রোগী শনাক্তের তুলনায় সুস্থতার হার ৭৩ দশমিক ২৩ শতাংশ এবং মৃতের হার ১ দশমিক ৪১ শতাংশ। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আরও জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৩১২ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৭ হাজার ৩২ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ২০২ জন। এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৬১ হাজার ৬৯৭ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশন করা হয়েছে ৭৮ হাজার ৭২৯ জনকে। প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ৭১৮ জন। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড় পেয়েছেন ১ হাজার সাতজন। এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৪ লাখ ৭৫ হাজার ১৫৯ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ৫ লাখ ২২ হাজার ৫১৪ জনকে। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪৭ হাজার ৩৫৫ জন। প্রসঙ্গত, চীনের উহান শহরে প্রথম প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়া প্রাণঘাতী ভাইরাসটি গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম সংক্রমণ শনাক্তের খবর জানানো হয়। এর ১০ দিনের মাথায় ১৮ মার্চ করোনায় দেশে প্রথম মৃতু্যর তথ্য নিশ্চিত করে সরকার। এখন দেশে সংক্রমণের সপ্তম মাস চলছে। শুরুর দিকে সংক্রমণ ধীর থাকলেও মে মাসের মাঝামাঝি থেকে পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করে। জুনে তা তীব্র আকার নেয়। জুলাইয়ের শুরু থেকে নতুন রোগী শনাক্তের সংখ্যা কমতে থাকে। এ সময় পরীক্ষাও কম হয়। অবশ্য গত আগস্ট থেকে নতুন রোগী শনাক্তের সংখ্যার পাশাপাশি পরীক্ষার তুলনায় সংক্রমণ শনাক্তের হারও কমতে দেখা গেছে।