ভারতের নষ্ট পেঁয়াজ দাম বাড়াল পাইকারিতে

প্রকাশ | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
টানা তিন দিন দাম কমার পর হঠাৎ করে পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। সোমবার পাইকারি বাজারে কেজিতে দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে পাঁচ টাকা পর্যন্ত। এর আগে টানা তিন দিনে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২৫ টাকা পর্যন্ত কমেছিল। ভারত থেকে আসা বেশির ভাগ পেঁয়াজ নষ্ট হওয়ায় দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম বাড়লেও স্থিতিশীল রয়েছে আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের দাম। সেই সঙ্গে খুচরা বাজারে দেশি ও আমদানি করা উভয় ধরনের পেঁয়াজ রোববারের দামে বিক্রি হচ্ছে। অবশ্য পাইকারিতে দাম কমার পরও গত দুদিন খুচরা বাজারে পেঁয়াজ বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছিল। গত ১৪ সেপ্টেম্বর হঠাৎ করে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয় ভারত। এতে দেশের বাজারে অস্থির হয়ে ওঠে পেঁয়াজের দাম। ৬০ টাকার দেশি পেঁয়াজের দাম পরদিন ১১০ টাকা পর্যন্ত উঠে যায়। আর পাইকারিতে ৫০ টাকা থেকে বেড়ে পেঁয়াজের কেজি হয় ৮৫ টাকা। কোনো কোনো পাইকার ৯০ টাকা কেজিতেও পেঁয়াজ বিক্রি করেন। এমন দাম বাড়ায় আতঙ্কিত হয়ে ভোক্তাদের মধ্যে বাড়তি পেঁয়াজ কেনার হিড়িক পড়ে যায়। রাজধানীতে পেঁয়াজের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার শ্যামবাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭২ টাকায়, যা রোববার ছিল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা। অপরদিকে আমদানি করা ভারতের পেঁয়াজ সোমবার মানভেদে বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি। তবে নষ্ট আমদানি করা পেঁয়াজ কোনো কোনো ব্যবসায়ী ৪০ টাকা কেজিতেও বিক্রি করেছেন। রাজধানীর আরেকটি পাইকারি বাজার কারওয়ান বাজার। এ বাজারে শ্যামবাজার থেকে একটু বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে দেশি পেঁয়াজ। বাজারটির ব্যবসায়ীরা দেশি পেঁয়াজ ৭২ থেকে ৭৫ টাকা কেজি বিক্রি করছেন। আর আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। অপরদিকে বিভিন্ন খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, গত দুদিনের মতো গতকালও দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। আর আমদানি করা ভারতের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। পেঁয়াজের দামের বিষয়ে শ্যামবাজারের বিসমিলস্নাহ ট্রেডার্সের মো. কাজল বলেন, 'আজ (গতকাল) কেজিতে দেশি পেঁয়াজের দাম পাঁচ টাকার মতো বেড়েছে। রোববার ৬৫ টাকা কেজি বিক্রি করা দেশি পেঁয়াজ ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিছু পেঁয়াজ ৭২ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে ভারতীয় পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি বিক্রি করছি।' তিনি বলেন, 'আড়তে পেঁয়াজের দাম নির্ভর করে সরবরাহের ওপর। আমরা ফরিদপুর থেকে পেঁয়াজ আনি। ফরিদপুরের মোকামে পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। এ কারণে আমরা দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছি। ভারত পেঁয়াজ দেওয়ার কারণে দাম কিছুটা কমেছিল। কিন্তু ভারত থেকে ট্রাকে যে পেঁয়াজ আসছে তার বেশির ভাগ নষ্ট। এ পেঁয়াজ ঢাকায় বিক্রি করা সম্ভব না। পেঁয়াজের দাম বাড়লেও গত কয়েকদিনের মতো আমাদের বিক্রি নেই। ব্যবসার খুব খারাপ আবস্থা। ভারত থেকে আসা পেঁয়াজ নষ্ট হওয়ায় দাম কিছুটা বাড়লেও এবার পেঁয়াজের বাজার গত বছরের মতো অস্বাভাবিক হবে না। আমাদের ধারণা, এখন যে দাম আছে মোটামুটি এই দামই স্থিতিশীল থাকবে। হয়তো ৫-১০ টাকা এদিকে-সেদিক হবে। আর যদি ভারত নতুন করে ফ্রেশ মাল দেয়, তাহলে দাম কমে যাবে।' এদিকে খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দামের বিষয়ে রামপুরার ব্যবসায়ী আলামিন বলেন, 'দেশি পেঁয়াজের কেজি ৯০ টাকা এবং আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। এই দামে গত তিন দিন ধরে বিক্রি করছি। শ্যামবাজার থেকে গত বুধবার যে পেঁয়াজ এনেছিলাম, সেই পেঁয়াজ এখনো বিক্রি করছি। গত কয়েকদিন শ্যামবাজারে যাইনি। এই মাল শেষ হলে তারপর যাব।' বাড্ডায় ভ্যানে ৯০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করা মিলন বলেন, 'দেশি পেঁয়াজের দাম আর কমার সম্ভাবনা কম। কারণ পাইকারদের মুখে যা শুনছি, তাতে মনে হয় কয়েকদিনের মধ্যে দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাবে। তবে আমদানি করা নিম্নমানের পেঁয়াজ কিছুটা কম দামে পাওয়া যেতে পারে। যার বেশির ভাগই নষ্ট।'