করোনা মোকাবিলায় এক হয়ে কাজ করতে হবে :প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রীর ধারণকৃত ভাষণ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রচার হবে আজ

প্রকাশ | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে 'বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও জাতিসংঘ বিশ্বসভায় বাংলাদেশ' এবং 'বঙ্গবন্ধু দ্য পিপলস হিরো' গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন -পিবিএ
করোনা মহামারি মোকাবিলায় সারাবিশ্বকে এক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে বাংলাদেশ সব সময় প্রস্তুত রয়েছে। আমরা চাই সারা বিশ্বে শান্তি থাকুক। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাংলায় দেওয়া ঐতিহাসিক ভাষণের ৪৬ বছর পূর্তি উপলক্ষে আলোচনা সভা এবং ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমির নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন করে এসব কথা বলেন তিনি। শুক্রবার পরররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সরাসরি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, করোনার ধাক্কা সামলে আবারও অর্থনীতির চাকা সচল হোক। আমরা চাই যাতে সব মানুষ সুন্দরভাবে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে। সেজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। সারাবিশ্বকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। করোনাভাইরাস থেকে বিশ্বের মানুষের মুক্তি কামনা করেন তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সব সময় চায় সারা বিশ্বে একটা শান্তি বজায় থাকুক। এই বিশ্বে কেউ একা চলতে পারে না। তাই সবার সহযোগিতা আমাদের কাম্য। পাশাপাশি কাউকে কোনো ধরনের সহযোগিতা যদি করতে হয়, আমরা সেটা করতেও প্রস্তুত। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে আমাদের স্বশস্ত্রবাহিনী, পুলিশবাহিনী, প্রত্যেকে বিশেষ ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। দেশের উন্নয়ন ও মানুষের সুন্দর জীবন নিশ্চিতে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খাদ্যের ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। কারণ করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বে হয়ত দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশে যেন কোনোমতে সেই দুর্ভিক্ষের ছোঁয়া না লাগে। তাই যতটুকু পারি খাদ্য উৎপাদন করা, খাদ্য বিতরণ করা, দরিদ্র মানুষকে বিনা পয়সায় খাদ্য দেওয়া এবং খাদ্য নিশ্চয়তা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, আমাদের জিডিপি যেটা টার্গেট ছিল যে, ৮.২ শতাংশের ওপরে যাব। সেটা সম্ভব হয়নি। এবার ৫.২৪ শতাংশের মতো অর্জন করতে পেরেছি। কিন্তু আমরা আশা করি, আগামীতে আরও বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হব। আর সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। দেশে প্রায় ৪০ শতাংশ দরিদ্র জনগোষ্ঠী ছিল। এই দারিদ্র্যের হার কমিয়ে ২০.৫ শতাংশে এনেছি। আমরা আরও কমাতে চাই। বাংলাদেশের প্রত্যেকটা মানুষকে একটা সুন্দর জীবন আমরা উপহার দিতে চাই। ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৪৬ বছর আগে জাতির পিতা যা বলে গিয়েছিলেন, এখনো সেগুলো বিশ্বের জন্য প্রযোজ্য। এগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি। ন্যায়বিচার, দরিদ্রতা থেকে মুক্তিসহ বিভিন্ন বিষয় তিনি উলেস্নখ করেছেন। আমরা তার দেখানো পররাষ্ট্রনীতি 'সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়' এটা অনুসরণ করে চলেছি। শেখ হাসিনা বলেন, আমি ১৬ বার জাতিসংঘে গিয়ে ভাষণ দিয়েছি এবং আমার ১৭তম ভাষণ দিতে আমি যেতে পারছি না। এটা সত্যিই খুব দুঃখের। কারণ সেখানে বিশ্বের সব দেশের নেতাদের সঙ্গে দেখা হওয়ার একটা সুন্দর সুযোগ হয়। মতবিনিময় করার সুযোগ হয়। একে অপরের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারি। সেই সুযোগটা করোনাভাইরাসের কারণে হলো না। গণভবন প্রান্তে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এবং ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমি প্রান্তে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে, করোনা মহামারির কারণে জাতিসংঘের ৭৫ বছরের ইতিহাসে এবারই প্রথম বিশ্বনেতারা সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন 'ভার্চুয়ালি'। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ধারণকৃত ভাষণ আজ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রচার করা হবে।