মুন্সীগঞ্জে আলুর দাম বাড়ায় খুশি কৃষক ক্ষুব্ধ ক্রেতারা

প্রকাশ | ২২ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

শহীদ-ই-হাসান তুহিন, মুন্সীগঞ্জ
আলু উৎপাদনে দেশের শীর্ষস্থানীয় জেলা মুন্সীগঞ্জ। জেলাটিতে প্রতি বছরই আলুর ভালো ফলন হলেও বিগত কয়েক বছর ধরেই উৎপাদন খরচের চেয়ে কম দামে আলু বিক্রি করতে হয়েছে কৃষকদের। তবে টানা কয়েক বছর লোকসানের পর বর্তমানে বাজারে আলুর দাম পাচ্ছে ভালো। এর মধ্যেই সরকার নির্ধারণ করে দিয়েছে আলুর দাম। নির্ধারিত দামে বিক্রি করেও লোকসান পুষিয়ে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। এদিকে সরকার দাম নির্ধারণ করলেও খুচরা বাজারে এখনো অধিক মূল্যে আলু কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। বিগত কয়েক বছর ধরে বাজারে দাম কম পাওয়ার পাশাপাশি লাভের আশায় হিমাগারে মজুত করেও বিপাকে পড়তে হয়েছে কৃষকদের। মণপ্রতি হিমাগারে মজুত খরচের চেয়ে বাজারে দাম কম থাকার ঘটনাও ঘটেছে। এতে সর্বস্ব হারিয়ে আলু উৎপাদনে বিমুখ হয়েছেন অনেক কৃষক। তবে বর্তমানে হিমাগার থেকে খোলাবাজারে, পাইকারি থেকে খুচরা সবক্ষেত্রেই আলু বিক্রি করে ভালো দাম পাচ্ছে কৃষক। জানা গেছে, মুন্সীগঞ্জে এবার সাড়ে ৩৭ হাজার হেক্টর জমিতে উৎপাদন হয়েছে ১৩ লাখ ২৭ হাজার ২৭ মেট্রিক টন আলু। যা গত বছরের চেয়ে বেশি। জেলায় বর্তমানে ৬৫টি সচল থাকা হিমাগারের ধারণক্ষমতা সাড়ে ৫ লাখ মেট্রিক টন। বর্তমানে হিমাগারে মজুত আছে ১ লাখ ৭৭ হাজার মেট্রিক টন আলু। এর মধ্যেই আলুর বাজার নিয়ন্ত্রণে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। তবে নির্ধারিত দামে বিক্রি করেও লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। এতে বিগত কয়েক বছরের ক্ষতি পুষিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে তাদের। তবে খুচরা বাজারে আলুর দাম তেমন কমেনি। সেখানে ৪২ থেকে ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে আলু। খুচরা ব্যবসায়ীদের দাবি সরকার নির্ধারিত দামের চেয়েও বেশি দামে ক্রয় করায় বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। আর ক্রেতারা বলছে, দাম নিয়ন্ত্রণে খুচরা বাজারে প্রশাসনকে আরও বেশি নজরদারি করতে হবে। মুন্সীগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক এবিএম ওয়াহিদুর রহমান জানান, যে পরিমাণ আলু মজুত আছে তা পর্যাপ্ত। আলুর কোনো সংকট নেই। এত দাম বেড়ে যাওয়ার কারণ নেই। তবে দেশে দুই দফার বন্যার কারণে অন্যান্য সবজির দাম বেড়েছে। এতে আলুর ওপরও প্রভাব পড়েছে। উত্তরবঙ্গে আলু চাষ বিলম্ব হওয়ার কারণে আলুর দাম বেড়েছে। নির্ধারিত দামের চেয়ে দেশি দামে আলু বিক্রি না করার আহ্বান জানিয়ে জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার বলেন, আমরা বাজার মনিটরিং করছি। কেউ যদি আলু সরকারের নির্ধারিত দরের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করে, তবে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।