দুর্ঘটনা রোধে চালকদের ডোপ টেস্টের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশ | ২৩ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবসের আলোচনায় অংশ নেন -ফোকাস বাংলা
মাদকাসক্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো বন্ধে চালকদের ডোপ টেস্ট করানোর ব্যবস্থা নিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মনে রাখতে হবে, যারা গাড়ি চালাচ্ছেন তারা মাদক গ্রহণ করে কি না। তাদের ডোপ টেস্ট করা প্রয়োজন। তারা মাদক নিচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখা দরকার। প্রত্যেক চালকের জন্য একবার হলেও এ পরীক্ষার প্রয়োজন আছে এবং আপনাদের এটি করতে হবে। জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস-২০২০ উপলক্ষে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এক আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ভার্চুয়াল পস্নাটফর্মের মাধ্যমে সংযুক্ত ছিলেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম। প্রধানমন্ত্রী জনগণকে আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দুর্ঘটনার শিকার হলে বা কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে চালকদের লাঞ্ছিত করা ও যানবাহনে হামলা চালানোর মানসিকতা বর্জন করতে হবে। কারণ এটি অনেক ক্ষেত্রেই আরও দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তিনি বলেন, ট্রাফিক আইন সবার জন্য সমান এবং প্রত্যেককে ট্রাফিক নিয়ম মেনে চলতে হবে। প্রধানমন্ত্রী চালকদের ওভারটেক করার মানসিকতা পরিহার করার অনুরোধ জানান। চালকদের জন্য সড়কের পাশে বিশ্রামাগার তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা তাদের ভালোমন্দ দেখতে মালিকদের প্রতি অনুরোধ রাখেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রাইভেট সেক্টর বা সরকারি, সবাইকে বলব আপনারা যদি স্পট ঠিক করে রাখেন, এই ড্রাইভারটা এত মাইল চলবে, তারপর সে সেখানে বিশ্রাম নেবে। ওখানে অলটারনেটিভ ড্রাইভার থাকবে। এভাবে যদি আমরা ব্যবস্থা করতে পারি আমাদের দুর্ঘটনা আরও কমে যাবে। সচেতনার অভাবে বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটার উদাহরণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাকে দোষ দেব? সড়কের দোষ, সরকারের দোষ, আন্দোলন হবে সরকারের বিরুদ্ধে, সরকারের পদত্যাগ চাইবে; কিন্তু দোষটা কার সেটা আর দেখবে না। এসব বিষয়ে নাগরিক সচেতনতা আমাদের দেশে খুব বেশি প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। তিনি বলেন, আমরা শুধু ড্রাইভারকে দোষ দিই। দোষ শুধু তাদের কেন? দোষ তো ওই মায়ের, যিনি বাচ্চাকে নিয়ে যাচ্ছেন। আরেকজন বাবাকে দেখলাম বুকের মধ্যে বাচ্চাকে নিয়ে যেখানে রাস্তায় গ্রিল দেওয়া সেই গ্রিলের ওপর দিয়ে পার হচ্ছেন। একটু পা পিছলালে ওই শার্প নেইলটাতে বাচ্চা একদম ফুটো হয়ে যাবে। নিরাপদ সড়ক নিয়ে যারা আন্দোলন করেন তাদের আরও বেশি জনসচেতনতা তৈরির আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সড়ক নির্মাণের ক্ষেত্রে আমি অনুরোধ করব, সড়ক যোগাযোগে যেমন নিরাপত্তা প্রয়োজন, সেই সঙ্গে সড়ক নির্মাণ করার সময় প্রাকৃতিক ভারসাম্যটা যেন বজায় থাকে সেটার দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। গণভবন প্রান্ত থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বনানীর বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) মিলনায়তন প্রান্তে সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি একাব্বর হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।