বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

স্বতন্ত্র মেডিকেল ইউনিট হচ্ছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের

নতুন ইউনিট হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনেই নিয়োগ দেওয়া হবে। এই ইউনিট গঠন হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে যেসব হাসপাতাল রয়েছে তার জন্য আর প্রেষণে ডাক্তার নিয়োগ দিতে হবে না
যাযাদি রিপোর্ট
  ২৩ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন্য আলাদা একক মেডিকেল ইউনিট গঠন করা হচ্ছে। এই ইউনিট গঠন করা হলে ডাক্তার-কর্মচারীদের নিয়োগ দেওয়া হবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেই। চাকরি জীবনে থাকবে না বদলির ঝামেলা। এজন্য সুরক্ষা সেবা এবং জননিরাপত্তা বিভাগের কার্যতালিকা সংশোধন করা হচ্ছে। এরই মধ্যে সচিব কমিটি অনুমোদন দিয়েছে। ২০১৯ সালের ২০ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়ে নির্দেশনাও দিয়েছেন।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এই মন্ত্রণালয়ের অধীন সব হাসপাতাল ও চিকিৎসা কেন্দ্রে ৬৮০ জন ডাক্তারের পদসহ মোট তিন হাজার ৭৭১টি পদ রয়েছে, যা বর্তমানে সবগুলো পদই বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারের থেকে প্রেষণে নিয়োগ দেওয়া। নতুন ইউনিট হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনেই নিয়োগ দেওয়া হবে। এই ইউনিট গঠন হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে যেসব হাসপাতাল রয়েছে তার জন্য আর প্রেষণে ডাক্তার নিয়োগ দিতে হবে না।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মিলিত মেডিকেল ইউনিটে নিয়োগ পাওয়া চিকিৎসক, নার্স ও প্যারামেডিকরাও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন নিয়োগ পাওয়াদের মতোই পদোন্নতি, বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাবেন। এটি গঠন হলে কারাগার, পুলিশ, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস ও আনসার সদস্যদের চিকিৎসার সমস্যা থাকবে না। প্রয়োজন হবে না প্রেষণে চিকিৎসক পদায়ন।

জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসক সংকটের কারণে কারাগারে বিপুলসংখ্যক বন্দির চিকিৎসা দিতে পারছে না কারা কর্তৃপক্ষ। এ জন্য কারাবন্দি রোগীদের চিকিৎসার জন্য অন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়। এতে নেতিবাচক ধারণার সৃষ্টি হয়। পুলিশ, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস ও আনসার সদস্য পরিচালিত হাসপাতালগুলোয় চিকিৎসা ক্ষেত্রেও একই প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। অতীতে বিভিন্ন সময়ে বেহাল চিত্র তুলে ধরে চিকিৎসক চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে প্রায় একশবার আধাসরকারি পত্র পাঠানো হয়। যদিও মাঝেমধ্যে প্রেষণে চিকিৎসক পদায়ন করা হয়েছে, কিন্তু তারা যোগদান না করে পদায়ন বাতিল করে থাকেন। বর্তমানে প্রেষণে আসা প্রয়োজনের তুলনায়

কমসংখ্যক চিকিৎসক দিয়েই বিপুলসংখ্যক কারাবন্দির চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ পরিস্থিতি স্থায়ীভাবে সমাধানের লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়।

গত বছরের ২০ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে এলে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এসব সমস্যা তার কাছে তুলে ধরা হয়। জানানো হয়, দেশের ৬৮টি কারাগারে ধারণক্ষমতার চেয়ে কয়েকগুণ বন্দির চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে প্রেষণে আসা অল্পসংখ্যক চিকিৎসক দিয়ে। বিশেষ করে বন্দি থাকা মানসিক রোগীদের নিয়ে মহাসমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এমন বেহাল অবস্থার কারণে অসুস্থ কয়েদিরা সুচিকিৎসা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কারা কর্তৃপক্ষ গুরুতর রোগীদের অনেকটা বাধ্য হয়ে অন্যত্র চিকিৎসা করাচ্ছে। এতে সুনাম নষ্ট হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি জানার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে আলাদা মেডিকেল ইউনিট গঠনের নির্দেশ দেন।

কারাগারের 'রূপকল্প : রাখিব নিরাপদ, দেখাব আলোর পথ' মিশনে বন্দিদের চিকিৎসা, খাদ্য ও তাদের সঙ্গে মানবিক আচরণ ইত্যাদি রয়েছে। সেটিও যেন উপেক্ষিত। শুধু যে চিকিৎসক সংকট তাই নয়, ৫৪টি কারাগারে নেই কোনো অ্যাম্বুলেন্স। কোনো গুরুতর রোগীর চিকিৎসার জন্য তাদের অন্যত্র নিয়ে যাওয়া দুরুহ হয়ে পড়ে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সেবা বিভাগে কারাগারের অ্যাম্বুলেন্স চেয়েও সাড়া পায় না স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে মেডিকেল ইউনিট গঠন না হওয়া পর্যন্ত সংকটের মধ্য দিয়েই কারাবন্দিদের চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে কারা কর্তৃপক্ষকে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<116243 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1