কমছে আলু ও সবজির দাম অপরিবর্তিত মাছ-মাংস

প্রকাশ | ২৪ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
দুই দফা দাম নির্ধারণ করে ৩৫ টাকা করা হলেও এখনো আলুর দাম পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। পাইকারি বাজারে দাম কমে এলেও খুচরা বাজারে তার প্রভাব পরছে ধীর গতিতে। কাঁচা মরিচের দাম কিছুটা কমলেও মূল্যঝাঁজ এখনো রয়ে গেছে। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে মাছ, মাংস, চাল, ডাল ও পেঁয়াজ-রসুনের দাম। আগের দামেই ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হলেও কিছুটা কমেছে সোনালি মুরগির দাম। এদিকে সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় কিছুটা কমতির দিকে সবজির দাম। শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, সেগুনবাগিচা, শান্তিনগর, ফকিরাপুল, খিলগাঁও বাজার, মালিবাগ, মালিবাগ রেলগেট, মগবাজার এবং রামপুরার খুচরা বাজারগুলোর দাম-দরের চিত্র ছিল এমনটাই। এদিকে আলুর দাম নিয়ে খুচরা বিক্রেতারা দুষছেন আড়তদারদের। আড়ত ব্যবসায়ী মহল বলছেন, তারা কমিশনে পণ্য বিক্রি করেন, হিমাগারে যা দাম রাখা হবে সেই দামেই বিক্রি করা হবে। কারওয়ান বাজারের খুচরা বিক্রেতা আজগর মোলস্না বলেন, পাইকারি বাজারে আলুর দাম ৩৬-৩৭ টাকা রাখা হয়। পাইকারি থেকে খুচরা বাজার পর্যন্ত এক কেজি আলু নিয়ে আসতে পাঁচ টাকা খরচ অতিরিক্ত পড়ে যায়। এতে কীভাবে আমরা ৩৫ টাকায় বিক্রি করব? পাইকারি বাজারে দাম কমলে আমাদের এখানে দাম কমে আসবে। তবে রাজধানীর সবজি বাজারগুলোতে কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত দাম কমে প্রতি কেজি কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা, শসা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, গাজর ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ধনিয়া পাতা ২৫০ থেকে ২৮০ টাকায়। আর কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত দাম কমে প্রতি কেজি মানভেদে ঝিঙা-ধুন্দল-চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, কাঁকরোল আকারভেদে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, বেগুন ৬০ থেকে ১০০ টাকা, টমেটো ১০০ থেকে ১২০ টাকা, কচুর ছড়া ৫০ টাকা ও বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজিদরে। দাম অপরিবর্তিত আছে কাঁচা মরিচ, করলা, উস্তা, পটলের। বর্তমানে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৪০ টাকা, করলা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা, উস্তা ৯০ টাকা, পটল ৭০ টাকা কেজিদরে। প্রতি হালিতে ১০ টাকা কমে কাঁচকলা বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়, প্রতি পিস জালি কুমড়া ৪০ টাকা ও লাউ ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। শান্তিনগর খুচরা বাজারের সবজি বিক্রেতা ইউসুফ জানান, বাজার মনিটরিং কিংবা কোনো অভিযানের ফলে দাম কমেনি। তিনি বলেন, বাজারে সবজির ঘাটতি ছিল এখন সরবরাহ বাড়তে শুরু করেছে। সরবরাহ এভাবে বাড়ার ফলে সব ধরনের সবজিতেই তার প্রভাব পড়ছে। এতেই সবজির দাম আগের থেকে কমেছে বলে এই বিক্রেতা জানান। তবে সবজির দাম নিয়ে শান্তিনগর বাজারের ক্রেতা তারিকুল ইসলাম জানান, সরবরাহের কথা বলে লাভ নাই। কারণ বাজারে আগেও সবজি ছিল এখনো আছে, তবে বাজার মনিটরিং করায় কিছুটা দাম কমিয়েছেন বিক্রেতারা। বাজার মনিটরিং আরও জোরদার হলে শুধু সবজি নয় অন্য সব কিছুর দামও কমে আসবে। এদিকে রাজধানীর বাজারগুলোতে আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে ডাল, চিনি ও ভোজ্যতেল। বাজারে খোলা ভোজ্যতেলের দাম কমার কথা থাকলেও তা আগের দামে বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। এ বাজারে প্রতি কেজি ডাবলি ও অ্যাংকর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, মসুর ডাল ৯০ থেকে ১২০ টাকা আর চিনি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকায়। আগের চড়া দাম রয়েছে চালের বাজারে। এসব বাজারে খুচরায় প্রতি কেজি আটাশ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫২ টাকা, পায়জাম ৪৮ টাকা, মিনিকেট ৫৮ টাকা, জিরা মিনিকেট ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা, নাজিরশাইল ৫৫ টাকা, পোলাও চাল (খোলা) ৯৫ থেকে ১০০ টাকা। বাজারে প্রতি কেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা, বকরির মাংস ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা আর গরু মাংস ৫৫০ টাকা ও মহিষের মাংস ৬০০ টাকা কেজিদরে। আগের দামে ব্রয়লার ও লেয়ার বিক্রি হলেও দাম কমেছে সোনালি মুরগির। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৪০ টাকায়। কেজিতে ২০ টাকা কমে প্রতি কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা ও দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ টাকায়। বিক্রি কম হওয়ায় দেশি ও সোনালি মুরগির দাম কমেছে বলে জানান খিলগাঁও বাজারের মুরগি বিক্রেতা ফোরকান। অপরিবর্তিত আছে মাছের বাজার। এসব বাজারে প্রতি কেজি শিং মাছ (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৬০০ টাকা, প্রতি কেজি রুই (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২৮০ টাকা, মৃগেল ১৬০ থেকে ২৫০ টাকা, পাঙাস ১০০ থেকে ১৬০ টাকা, কাতল ১৭০ থেকে ২৮০ টাকা, তেলাপিয়া ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, কৈ মাছ ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, সিলভার কার্প ১০০ টাকা, মিরর কার্প ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। আর প্রতি কেজি কাঁচকি ও মলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা, দেশি টেংরা ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, দেশি চিংড়ি (ছোট) ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, হরিণা চিংড়ি ৬০০ টাকা, বাগদা ও গলদা ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকা, পাবদা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকায়। বাজারে দেশি পেঁয়াজ ও আদার দাম অপরিবর্তিত থাকলেও দাম কমেছে আমদানি করা পেঁয়াজের। এসব বাজারে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯৫ টাকা, দেশি কিং পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা। আমদানি করা মিশরের পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা ও চায়না পেঁয়াজ ৬০ টাকা কেজিদরে। দাম বেড়েছে দেশি রসুনের। বর্তমানে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা দাম বেড়ে দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। আগের দামে প্রতি কেজি চায়না রসুন বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা। আর কেরালার আদায় কেজিতে ২০ টাকা দাম বাড়লেও আগের দামেই রয়েছে চায়না আদা। এসব বাজারে প্রতি কেজি আমদানি করা কেরালা আদা বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা, চায়না আদা বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা ২৫০ টাকার মধ্যে।