শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
দিনাজপুর

ভোরে শিশিরের দেখা মিলছে

মমিনুল ইসলাম
  ৩০ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

বাংলা পঞ্জিকা অনুযায়ী শরৎ বিদায় নিয়ে সবেমাত্র হেমন্তকাল শুরু হয়েছে। শীতকাল শুরু হতে আরও কিছু সময় বাকি। তবে এ সময়ে উত্তরের জেলা দিনাজপুরে দিনে রোদ ও গরম থাকলেও শেষ রাতে বেশ ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। ক্রমে দিন ছোট হয়ে আসছে। সম্প্রতি টানা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির পর শীতের হিমেল হাওয়া বইতে শুরু করেছে। সন্ধ্যায় ও ভোরে কুয়াশা ও শিশির পড়ছে। জেলার সর্বত্র শীতের আগমনীবার্তা জানান দিচ্ছে এমনটাই অনুভূত হচ্ছে। এদিকে দিনাজপুর জেলা প্রশাসন ও সিভিল সার্জন অফিস আসন্ন শীত মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি নিয়েছে।

দিনাজপুরে

সাধারণত অগ্রহায়ণ মাসের শুরুতে শীতের আগমন ঘটলেও এবার বেশ আগেভাগেই শীতের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। সকাল ও সন্ধ্যায় হালকা গরম কাপড় পরে কিছু লোকজনকে চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে। ভোরে হেডলাইট জালিয়ে সড়কে যানবাহন চলাচলের চিত্রও লক্ষণীয়। জেলার গ্রাম ও শহরের বাজারগুলোতে শীম, মুলা, ফুলকপি, বাঁধাকপিসহ শীতকালীন সবজি উঠতে শুরু করেছে। শহরের গুলশান, উত্তরা, লুৎফুন্নেসা টাওয়ার মার্কেট, কাচারীবাজার পুরানো কাপড়ের দোকানে, খোলা ও ফুটপাতের কাপড়ের দোকানগুলোতে শীতের কাপড় বেচাকেনা শুরু হয়েছে। এদিকে লেপ-তোষক কারিগরদের ব্যস্ততা দেখা যাচ্ছে। দোকানগুলোতে লেপ-তোষক তৈরির অর্ডার পড়তে শুরু করেছে।

দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মো. তোফাজ্জল হোসেন জানান, বর্তমানে দিনাজপুরের তাপমাত্রা সর্বনিম্ন ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। রাতে হালকা ঠান্ডা অনুভূত হলেও শীতের প্রকোপ দেখা দেবে ডিসেম্বরে। তবে নভেম্বর থেকে হালকা শীত পড়বে। তিনি জানান এবার বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ায় গতবারের তুলনায় কুয়াশা ও শীত বেশি পড়বে। ধীর ধীরে সূর্যের তেজ ও তাপমাত্রা কমা শুরু হবে।

দিনাজপুর জেলার সদর উপজেলার পাঁচবাড়ী এলাকার ব্যাংক কর্মকর্তা মজিবুর রহমান জানান, রাতে ও সকালে শীতের আমেজ টের পাচ্ছেন তিনি। কয়েকদিন আগে ঘরে সারারাত ফ্যান চললেও এখন মাঝরাতে উঠে ফ্যান বন্ধ করতে হচ্ছে। শেষ রাতে গায়ে দিতে হচ্ছে চাদর। প্রায় একই অনুভূতির কথা জানালেন উপশহর এলাকার বাসিন্দা মাদ্রাসা শিক্ষক আজিজুল ইসলাম। তিনি জানান, সম্প্রতি দু-তিনদিনের টানা বৃষ্টির কারণে ঠান্ডা অনভূত হচ্ছে। রাতে তাপমাত্রা কমছে। এবার দিনাজপুরে আগেভাগে শীতের আমেজ দেখা যাচ্ছে বলে তিনি জানান।

দিনাজপুর শহরের নিউটাউন এলাকার মুদি দোকানদার মাহবুবুর রহমান জানান, শেষ রাতে কাঁথা বা চাদর জড়িয়ে ঘুমাতে হচ্ছে। তিনি জানান, শীতের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে লেপ-তোষকের অর্ডার দিয়ে রেখেছেন। দিনাজপুর মেডিকেল মোড় এলাকার লেপ-তোষক কারিগর এমদাদুল হক জানান, কয়েক মাস প্রায় কর্মহীন থাকার পর লেপ-তোষকের বেশকিছু অর্ডার পেয়েছেন। শীত বাড়লেই অর্ডারের পরিমাণ বাড়বে বলে জানান তিনি। এবার কাপড় ও তুলার দাম স্বাভাবিক থাকায় লেপ ও তোষকের অর্ডার তুলনামূলক বেশি পাওয়ার আশা করছেন এ কারিগর।

জেলার সিভিল সার্জন ডা. মো. আব্দুল কু্‌দ্দুস জানান, আসন্ন শীত মোকাবিলায় জেলার সব হাসপাতালে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। চিকিৎসা সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পর্যাপ্ত ওষুধ রয়েছে। করোনা নিয়ন্ত্রণে জনগণকে সচেতন করা হচ্ছে। 'নো মাস্ক নো সার্ভিস' নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শীতের তীব্রতার সঙ্গে করোনার প্রকোপ বাড়লে তা মোকাবিলার জন্য এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ১০০, দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালে ২৭ এবং জেলার প্রত্যেক উপজেলায় ২০টি করে বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল আলম জানান, শীত মোকাবিলায় এবার ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। সহযোগিতা চেয়ে ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। শীতকালে করোনার প্রকোপ কমাতে জনসাধারণকে সচেতন করা হচ্ছে। পাশাপাশি জেলা ও উপজেলাগুলোর হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<117268 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1