প্রতীকী অনশনে নেতারা

খালেদা জিয়াকে ছাড়া একতরফা নিবার্চন নয়

কর ফঁাকি ও অথর্পাচারসংক্রান্ত সাড়া জাগানো পানামা পেপারস কেলেঙ্কারিতে এ পযর্ন্ত রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীসহ ৩৪ বাংলাদেশি ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠানের নামও উঠে এসেছে

প্রকাশ | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বুধবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়াসর্ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনের সামনে বিএনপি আয়োজিত প্রতীকী অনশনের একাংশ Ñযাযাদি
নিবার্চনের তফসিল ঘোষণার আগে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়েছেন বিএনপির নেতারা। তারা বলেছেন, খালেদা জিয়াকে ছাড়া একতরফা কোনো নিবার্চন এ দেশে হবে না, হতে দেয়াও হবে না। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও তার মুক্তির দাবিতে বুধবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পযর্ন্ত প্রতীকী অনশন কমর্সূচি পালন করেছেন দলটির নেতাকমীর্রা। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়াসর্ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনের সামনে আয়োজিত এই প্রতীকী অনশন কমর্সূচিতে বিএনপি নেতারা এসব কথা বলেন। গত সোমবার একই দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবসহ সারা দেশের জেলা সদর ও মহানগরে মানববন্ধন করে বিএনপি। ওই কমর্সূচিতে ঢাকাসহ সারা দেশে বিএনপির অনেক নেতাকমীের্ক গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অনেক জায়গায় বাধা দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে। গত কমর্সূচিতে পুলিশের অভিযানের কারণে বুধবারের প্রতীকী অনশন কমর্সূচিতে উপস্থিতি কম ছিল। কমর্সূচিতে বিএনপির নেতাকমীর্রা গ্রেপ্তার এড়াতে কমর্সূচি শেষ হওয়ার আধা ঘণ্টা আগে থেকে অনশনস্থল ত্যাগ করা শুরু করেন। এ কারণে অনশনের সভাপতি ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন যখন বক্তব্য দিচ্ছিলেন, তখন উপস্থিতি একেবারে কমে যায়। পুলিশ বিএনপির অনশন কমর্সূচিতে কোনো অভিযান চালায়নি। তবে কমর্সূচিকে ঘিরে বিপুলসংখ্যক পুলিশ পৃষ্ঠা ২ কলাম ২ সাদা পোশাকের পুলিশ মৎস্য ভবন মোড় ও কাকরাইল এলাকায় গ্রেপ্তার অভিযান চালিয়েছে। গ্রেপ্তার অভিযানের মাধ্যমে পুলিশ বিএনপির কয়েকজন নেতাকমীের্ক ধরে নিয়ে যায়। ধরপাকড়ের কথা স্বীকার করেন শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কমর্কতার্ (ওসি) আবুল হাসান। তিনি বলেন, ‘চারজনকে আটক করা হয়েছে।’ প্রত্যক্ষদশীর্রা জানিয়েছেন, বিএনপির কমর্সূচি থেকে ফেরার সময় সাদা পোশাকের গোয়েন্দা পুলিশ দলটির নেতাকমীের্দর আটক করে। পুলিশ সদস্যরা আগে থেকে মৎস্য ভবন ও কাকরাইল এলাকায় অবস্থান নেয়ায় বিএনপির নেতাকমীর্রা আটকের বিষয়টি বুঝে উঠতে পারেননি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও অনশন কমর্সূচির সভাপতি খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এই সরকার যতই ষড়যন্ত্র করুক ২০১৪ সালের মতো নিবার্চনের পুনরাবৃত্তি এ দেশে হবে না। তফসিল ঘোষণার আগে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে, সংসদ ভেঙে দিতে হবে, বতর্মান সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, নিবার্চনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে, নিবার্চন কমিশন পুনগর্ঠন করতে হবে, নিবার্চনে সেনা মোতায়েন করতে হবে। এ ছাড়া দেশে কোনো নিবার্চন হবে না, হতে দেয়াও হবে না। খন্দকার মোশাররফ হোসেন আরো বলেন, ‘অন্যায় ও মিথ্যা’ মামলায় খালেদা জিয়াকে ষড়যন্ত্র করে কারাগারে রাখা হয়েছে। তার মুক্তি ছাড়া এ দেশে কোনো নিবার্চন হবে না। তিনি বলেন, সারা? দেশ আজ? ঐক্যবদ্ধ। দে?শি-বি?দেশি বন্ধুরাষ্ট্রগু?লো বল?ছে, আগামী জাতীয় নিবার্চন অংশগ্রহণমূলক হ?তে হ?বে। আর খা?লেদা জিয়া?কে ছাড়া, বিএন?পি?কে ছাড়া অংশগ্রহণমূলক নিবার্চন হ?বে না। পুলিশ বা?হিনী?র উদ্দেশে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকারের সময় শেষ। মামলা, গ্রেপ্তার ক?রে বিএন?পির দা?বি আদায়ের আন্দোলন দমন করা যাবে না। পুলিশ প্রজাতন্ত্রের কমর্চারী, আওয়ামী লী?গের কমর্চারী না। যারা এখনো আওয়ামী লীগের কথায় কাজ কর?ছেন, তাদের কিন্তু ভবিষ্যতে প্রজাতন্ত্রের কমর্চারী হি?সে?বে দায়িত্ব পালন কর?তে হ?বে। তাই অযথা বিএন?পির নেতাকমীের্দর হয়রানি, গ্রেপ্তার ও মামলা দেবেন না। প্রতীকী অনশনে বিএনপির স্থায়ী ক?মি?টির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, সামনে এমন কমর্সূচি দেয়া হ?বে, যে কমর্সূচিতে এই সরকারের নৌকা ভেসে যা?বে। সরকার খা?লেদা জিয়ার মু?ক্তি চায় না। আইনি প্রক্রিয়ায় খা?লেদা জিয়ার মু?ক্তি হ?বে না। তাই খা?লেদা জিয়ার মু?ক্তির একমাত্র পথ রাজপথ। রাজপথে আন্দোলন করে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। বিএনপির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য গ?য়েশ্বর চন্দ্র রায় ব?লেন, খালেদা জিয়া কারাগারে অসুস্থ অবস্থায় রয়েছেন। তাকে সুস্থ করতে সরকা?রের কোনো প্রচেষ্টা নেই। বরং খা?লেদা জিয়া?কে জেলখানায় তি?লে তি?লে মারার ষড়যন্ত্র কর?ছে সরকার। তি?নি ব?লেন, খা?লেদা জিয়াকে ছাড়া দেশে কোনো নিবার্চন হতে দেয়া হবে না। খা?লেদা জিয়াকে ছাড়া যদি দ?লের কেউ নিবার্চ?নে যে?তে চায়, তাদের সমুচিত জবাব দি?তে হবে। প্রতীকী অনশন শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সা?বেক উপাচাযর্ অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহ?মেদ বিএন?পির জ্যেষ্ঠ নেতা?দের পা?নি পান ক?রি?য়ে নিধাির্রত সম?য়ের ম?ধ্যে প্রতীকী অনশন ভাঙান। এ সময় অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমেদ ব?লেন, ‘আজ?কে গণতন্ত্র ভূলুণ্ঠিত। ১৯৭১ সালে যে গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হয়েছিল, সেই গণতন্ত্র আজ ভূলুণ্ঠিত। এর থে?কে উত্তরণের পথ আগামী জাতীয় নিবার্চন, যে নিবার্চন হ?তে হ?বে নিরপেক্ষ সরকা?রের অধী?নে। কারণ, আমরা আইনের শাসন, মানবাধিকার, মৌ?লিক অধিকার, গণতন্ত্র হারিয়েছিÑখা?লেদা জিয়ার মু?ক্তি ও ভবিষ্যতে সুষ্ঠু জাতীয় নিবার্চ?নের মাধ্যমে এসব ফি?রে পে?তে চাই।’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, মিজার্ আব্বাস, নজরুল ইসলাম খানসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা কমর্সূচিতে বক্তব্য দেন। এছাড়া বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকমীর্রা এবং ২০-দলীয় জোটের নেতারা কমর্সূচিতে উপস্থিত ছিলেন।