পোশাকশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৮ হাজার টাকা

প্রকাশ | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০ | আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:২২

যাযাদি রিপোটর্
কাজ করছেন পোশাকশ্রমিক Ñফাইল ছবি


দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি আট হাজার টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার।
এতে প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিকের মজুরি এখনকার চেয়ে ৫১ শতাংশ বেড়েছে। সর্বশেষ ২০১৩ সালের ১ ডিসেম্বর পাঁচ হাজার ৩০০ টাকা ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করে দেয়ার পর সেই হারে বেতন পাচ্ছিলেন শ্রমিকরা।
এবার শ্রমিক সংগঠনগুলো ন্যূনতম মজুরি ১৬ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবি করেছিলেন। এর বিপরীতে পোশাকশিল্প মালিকরা প্রস্তাব করেন ছয় হাজার ৩৬০ টাকা। গবেষণা সংস্থা সিপিডি ন্যূনতম মজুরি ১০ হাজার টাকা করার পক্ষে মত জানিয়েছিল।
পোশাকশ্রমিকদের মজুরি পুনর্মূল্যায়নে পাঁচ বছর পর গত জানুয়ারিতে সরকার মজুরি বোর্ড গঠনের পর বোর্ডের সদস্যরা দফায় দফায় বৈঠক করে মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের নিয়ে।
সর্বশেষ বৃহস্পতিবার ঢাকার তোপখানা সড়কে মজুরি বোর্ডের কার্যালয়ে সর্বশেষ বৈঠক হয়। এরপর মজুরি বোর্ডের সদস্যদের নিয়ে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন মজুরি কাঠামোর ঘোষণা দেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু।
ঘোষণা অনুযায়ী, পোশাকশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি হবে আট হাজার টাকা। এর মধ্যে ব্যাসিক চার হাজার ১০০ টাকা, বাড়িভাড়া ২০৫০, চিকিৎসা ভাতা ৬০০, যাতায়াত ভাতা ৩৫০ এবং খাদ্য ভাতা ৯০০ টাকা।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আপাতত ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করা হলো। অন্য শ্রমিকদের বেতন-কাঠামো পরে ঘোষণা করা হবে।
আগামী ডিসেম্বরে প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকে নতুন বেতন কার্যকর হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান সৈয়দ আমিনুল ইসলাম, নিরপেক্ষ সদস্য কামাল উদ্দিন, মালিকদের প্রতিনিধি বিজিএমইএর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান এবং শ্রমিকদের প্রতিনিধি শ্রমিক লীগের মহিলা-বিষয়ক সম্পাদক বেগম শামসুন্নাহার ভূইয়া।
আওয়ামী লীগের শ্রমিক সংগঠন জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি ফজলুল হক মন্টুও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
নতুন মজুরি কাঠামো মালিক-শ্রমিক উভয়পক্ষ মেনে নেবে বলে প্রতিমন্ত্রী চুন্নু আশা প্রকাশ করলেও এই মধ্যে আপত্তি এসেছে বামপন্থি শ্রমিক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে।
বিকাল ৩টায় মজুরি বোর্ড যখন তোপখানার কার্যালয়ে সভা করছিল, তখনই ভবনের নিচে বিক্ষোভ করছিল গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, শ্রমিক সংহতিসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে সভা শেষ করে যখন মজুরি বোর্ডের সদস্যরা সচিবালয়ে যাচ্ছিলেন, তখন বিক্ষুব্ধ কয়েকশ শ্রমিক স্লোগান দিচ্ছিলেন- ‘১৬ হাজার টাকার কমে ন্যূনতম মজুরি মানব না’।
তৈরি পোশাকশ্রমিকদের নতুন মজুরি কাঠামো নির্ধারণে দৃশ্যত রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প কারখানার শ্রমিকদের নতুন মজুরি কাঠামো অনুসরণ করেছে সরকার।
সম্প্রতি শ্রম প্রতিমন্ত্রী চুন্নু রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প কারখানার শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি শতভাগ বাড়িয়ে ৮,৩০০ টাকা করার প্রস্তাব সংসদে তোলেন। বর্তমানে এই শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি চার হাজার ১৫০ টাকা।