শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গাদের প্রথম দল ভাসানচর যাচ্ছে আজ

যাযাদি রিপোর্ট
  ০৪ ডিসেম্বর ২০২০, ০০:০০
আপডেট  : ০৪ ডিসেম্বর ২০২০, ০২:১৯

অবশেষে সব আলোচনা-সমালোচনার অবসান ঘটিয়ে রোহিঙ্গাদের প্রথম দল আজ (শুক্রবার) ভাসানচরে যাচ্ছে। এই প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপে ৫০০টি রোহিঙ্গা পরিবারকে সেখানে নেওয়ার কথা রয়েছে, পরবর্তী ধাপে আরও রোহিঙ্গা ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা রয়েছে। বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে, মোট এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে আশ্রয় দেওয়ার জন্য ঘর তৈরি করা হয়েছে। যেসব রোহিঙ্গা সেখানে যাবে, তাদের জন্য আগামী তিন মাসের খাদ্য মজুত আছে। এছাড়াও পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসেবা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। এমনকি এই চরে হাঁস-মুরগি পালন ও সবজি চাষেরও সুযোগ থাকবে রোহিঙ্গাদের। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে আশ্রয় দেওয়ার জন্য যাবতীয় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে রোহিঙ্গাদের নিয়ে প্রথম জাহাজ শুক্রবার সকালে ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা দেবে। এর আগে করোনা মহামারির সময়ে সমুদ্র থেকে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা ৩০৬ জন রোহিঙ্গাকে আগেই ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়েছিল। তবে তাদেরকে কক্সবাজারে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা বলেন, রোহিঙ্গাদের দেখভালের জন্য ২২টি স্থানীয় ও বিদেশি এনজিও আগ্রহ প্রকাশ করায় তাদেরকে ভাসানচরে কাজ করার অনুমতি দিয়েছে সরকার। এদিকে ২০১৭ সালে বঙ্গোপসাগরে জেগে ওঠা ছোট এই দ্বীপে কিছুসংখ্যক রোহিঙ্গাকে স্থানান্তরের জন্য প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা, যা পরবর্তীতে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৯৪ কোটি টাকায়। ভাসানচরে নির্মিত প্রতিটি বাড়িতে ১৬টি করে রোহিঙ্গা পরিবার থাকতে পারবে। প্রতি গুচ্ছতে ১২টি করে বাড়ি রয়েছে। এরকম ১০০টিরও বেশি গুচ্ছের প্রতিটিতে শিশুদের জন্য খেলা ও পুকুরের ব্যবস্থা আছে। এছাড়া সেখানে বর্ষার পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা, সৌরচালিত পাম্পের মাধ্যমে ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলনের ব্যবস্থা, মাল্টি পারপাস সাইক্লোন শেল্টার, সৌর বিদু্যৎ, অন্যান্য সরকারি অফিস রয়েছে। তবে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের বসবাসের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হবে সরকারের, যা একটি বড় বোঝা হতে পারে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, সেখানে ৩০৬ জন রোহিঙ্গার জন্য প্রতি তিন মাসে খরচ হয় প্রায় তিন কোটি টাকা। ভাসানচরে রোহিঙ্গার সংখ্যা বাড়লে অর্থ ব্যয়ের পরিমাণ আরও বাড়বে। রোহিঙ্গাদের নিয়ে সেখানে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে তিনি বলেন, এর ফলে কক্সবাজারের ওপরে চাপ কিছুটা কমবে এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও ভালো হবে। এছাড়া কক্সবাজারে ভূমি ধসের আশঙ্কা রয়েছে। রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নিলে সেই ভয়টাও কিছুটা কমে আসবে বলে তিনি জানান।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে