সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ৩৫ জনের মৃতু্য হয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ছয় হাজার ৭৪৮ জনে দাঁড়াল। একই সময় করোনা পজিটিভ হিসাবে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন দুই হাজার ৩১৬ জন। দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা চার লাখ ৭১ হাজার ৭৩৯ জনে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত করোনাভাইরাস-বিষয়ক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সারাদেশে করোনার সর্বশেষ সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যালোচনায় বুধবার সকাল ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১১৮টি ল্যাবরেটরিতে ১৬ হাজার ৮৩৮টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরপর যাচাই-বাছাই শেষে ১৬ হাজার ৮০৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ নিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষা হলো ২৮ লাখ ২০ হাজার ৯৮১টি। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ও বাড়িতে উপসর্গবিহীন রোগীসহ দুই হাজার ৫৯৩ জন সুস্থ হয়েছেন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন তিন লাখ ৮৮ হাজার ৩৭৯ জন। এ ছাড়া গত একদিনে মৃত ৩৫ জনের মধ্যে পুরুষ ২৩ জন ও নারী ১২ জন। তাদের সবাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃতু্যবরণ করেন। তাদের মধ্যে ২৩ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, পাঁচজন করে মোট ১০ জনের বয়স ৫১-৬০ এবং ৪১-৫০ বছরের মধ্যে এবং একজন করে মোট দুইজনের বয়স ২১-৩০ এবং ১১-২০ বছরের মধ্যে ছিল। মৃতদের মধ্যে ২২ জন ঢাকা বিভাগের, পাঁচজন ময়মনসিংহ বিভাগের, তিনজন করে মোট ছয়জন চট্টগ্রাম ও রংপুর বিভাগের এবং একজন করে মোট দুইজন রাজশাহী ও বরিশাল বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক শূন্য ৭৮ শতাংশ। এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৭২ শতাংশ, শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮২ দশমিক ৩৩ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃতু্যর হার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। বিজ্ঞপ্তির ভাষ্য অনুযায়ী, দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ছয় হাজার ৭৪৮ জনের মধ্যে পাঁচ হাজার ১৬৪ জনই পুরুষ এবং এক হাজার ৫৮৪ জন নারী। তাদের মধ্যে তিন হাজার ৫৯৮ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এ ছাড়াও এক হাজার ৭৫২ জনের বয়স ৫১-৬০ বছরের মধ্যে, ৮১২ জনের বয়স ৪১-৫০ বছরের মধ্যে, ৩৪৭ জনের বয়স ৩১-৪০ বছরের মধ্যে, ১৫১ জনের বয়স ২১-৩০ বছরের মধ্যে, ৫৫ জনের বয়স ১১-২০ বছরের মধ্যে এবং ৩৩ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম। এর মধ্যে তিন হাজার ৬৪০ জন ঢাকা বিভাগের, এক হাজার ২৬৯ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৪০৯ জন রাজশাহী বিভাগের, ৪৯৯ জন খুলনা বিভাগের, ২২০ জন বরিশাল বিভাগের, ২৬৬ জন সিলেট বিভাগের, ৩০৬ জন রংপুর বিভাগের এবং ১৩৯ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত ৮ মার্চ, তা সাড়ে চার লাখ পেরিয়ে যায় ২৪ নভেম্বর। এর মধ্যে গত ২ জুলাই চার হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা একদিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃতু্যর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২৬ নভেম্বর তা সাড়ে ছয় হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ৩০ জুন একদিনেই ৬৪ জনের মৃতু্যর তথ্য জানানো হয়, যা একদিনের সর্বোচ্চ মৃতু্য। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ২৬তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৩২তম অবস্থানে। বিশ্বে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ছয় কোটি ৪৫ লাখ পেরিয়েছে। মৃতের সংখ্যা ১৪ লাখ ৯৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।