শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সমন্বয়হীনতায় বঞ্চিত চাকরিপ্রত্যাশীরা!

হাসান আরিফ
  ০৪ ডিসেম্বর ২০২০, ০০:০০

প্রযুক্তির সমম্বয়হীনতার কারণে ৬০০-এর ওপর আবেদনকারী সমন্বিত ৯টি ব্যাংকের অফিসার জেনারেল পদে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না। সময়মতো এডমিট কার্ড ডাউনলোড করতে না পারায় তারা বঞ্চিত হচ্ছেন। দ্বিতীয়বার এডমিট কার্ড ডাউনলোড করার সুযোগ চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা আমলে নেয়নি। তাই সমঅধিকারের ক্ষেত্রে বৈষম্য হচ্ছে বলে চাকরিপ্রত্যাশীরা অভিযোগ করেন।

করোনার প্রকোপে প্রায় ৬ মাস নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বন্ধ ছিল। সবাই গত ৬ মাস কাঙ্ক্ষিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি পায়নি। ইতোমধ্যে অনেকের সরকারি চাকরিতে আবেদন করার সময় শেষের দিকে। সামনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে অনেকেই আর আবেদন করতে পারবে না। তাই সময়মতো তথ্য না পাওয়া এবং ইন্টারনেট ব্রাউজ করার উপকরণ না থাকায় অনেকেই এডমিট কার্ড নিতে পারেনি। এজন্য তারা এডমিট কার্ড নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে সুযোগ চেয়েছেন। কারণ এরই মধ্যে দ্বিতীয়বার এই সুযোগ অনেককেই দেওয়া হয়েছে।

এই বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক ও ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির সদস্যসচিব আরিফ হোসেন খান যায়যায়দিনকে বলেন, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতেই বলা হয়েছিল, পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুকরাই

এডমিট কার্ড ডাউনলোড করবেন। কারণ আবেদন করে দুই লাখ আর অংশগ্রহণ করেন ৮০ হাজার। তাই এভাবে বলা হয়েছিল। আর যারা এডমিট কার্ড সময়মতো ডাউনলোড করেননি তারা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে না বলেই ধরে নেওয়া হয়েছে।

যেসব আবেদনকারী দ্বিতীয়বার এডমিট কার্ড ডাউনলোড করার সুযোগ চাচ্ছেন, তাদের আর সে সুযোগ দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ প্রশাসন চলে প্রশাসনের নিয়মে। তাদের নিয়মে তো আর প্রশাসন চলবে না। তাই দ্বিতীয় বার এডমিট কার্ড ডাউনলোড করার সুযোগ দেওয়া সম্ভব নয় বলেও তিনি বলেন।

বঞ্চিত চাকরিপ্রত্যাশী পরীক্ষার্থীরা বলেন, করোনা শুরু হওয়ার পর প্রায় অধিকাংশ শিক্ষার্থী ঢাকার মেস বা বাসা ছেড়ে দিয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে গিয়েছিল। এদের মধ্যে অনেকের বাড়ি দুর্গম এলাকায় ও অনেকের স্মার্টফোন না থাকায় তারা সঠিক সময়ে সমন্বিত ৯টি ব্যাংকের অফিসার জেনারেল পদে পরীক্ষার এডমিট কার্ড ডাউনলোড করার সুযোগ পায়নি বা এ বিষয়ক খবর জানতে পারেনি।

জানা গেছে, অফিসার জেনারেল পদে অংশগ্রহণ করতে পরীক্ষার এডমিট ডাউনলোড করার সময়সীমা ছিল ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে ১৩ অক্টোবর। এ সময় এডমিট তুলতে গিয়ে অনেকেই দেখতে পায় তাদের ভেরিফিকেশন সম্পন্ন হয়নি। তারা এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করে। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ তাদের দ্বিতীয় বার ভেরিফিকেশন করার সুযোগ দেন। দ্বিতীয় বার সুযোগ পাওয়া ব্যক্তিরা ৯ নভেম্বর ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করে গত ১৯ নভেম্বর এডমিট ডাউনলোড করেন।

জানা গেছে, অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো এখন বাংলাদেশ ব্যাংকেও টাকা দিয়ে আবেদন করতে হয়। অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এডমিট ডাউনলোড ও পরীক্ষার আগে ২ থেকে ৩টি ম্যাসেজ দেয়, সেখানে বাংলাদেশ ব্যাংক এখনো ওয়েবসাইটনির্ভর। বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো ম্যাসেজ দেয় না। তাই অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে অনেক চাকরিপ্রত্যাশী সময়মতো এডমিট কার্ড ডাউনলোড করতে পারে না। এমনকি অনেকেই পরীক্ষা কবে হবে তাও জানতে পারে না। এমনকি বাংলাদেশ ব্যাংক আবেদন ফি নিয়েও একটা সতর্কতা ম্যাসেজও দেয় না।

কথা হয় মো. সাজেদুল ইসলাম, সাজেদুল ইসলাম, সৈয়দা ফারিয়া এবং রিসান মাহমুদের সঙ্গে তারা বলেন, তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকে একটি আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন। সেখানে প্রায় ৬০০-এর অধিক আবেদনকারীর সিভি পরিচিতি নাম্বার সংযুক্ত করেছেন। আবেদনে তারা দ্বিতীয় বার এডমিট ডাউনলোড করার সুযোগ চায়। করোনা মহামারি ও নানা সীমাবদ্ধতা বিবেচনা করে চাকরিপ্রত্যাশী সবার পক্ষে তাদের মানবিক আবেদনটি গ্রহণ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে তারা প্রত্যাশা করেন।

তারা বলেন, সবার সমান অধিকার নিশ্চিত ও বেকারত্ব দূরীকরণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের আবেদন বিবেচনায় নেওয়া দরকার। কারণ এরই মধ্যে কিছু পরীক্ষার্থী দুইবার ভেরিফিকেশন ও দুইবার এডমিট ডাউনলোড করার সুযোগ পেয়েছেন। তাই ১৩ অক্টোবর প্রথমবার যারা এডমিট ডাউনলোড করতে পারেনি, তাদের দ্বিতীয় বার এডমিট ডাউনলোড করার সুযোগ পাওয়ার অধিকার তারা রাখেন বলেও দাবি করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে