বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিপন্ন বিশ্বের জন্য টিকা সমাধান নয় :জাতিসংঘ

যাযাদি ডেস্ক
  ০৫ ডিসেম্বর ২০২০, ০০:০০
আপডেট  : ০৫ ডিসেম্বর ২০২০, ০০:০৭

মহামারি করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত বিশ্ব। এরই মধ্যে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস মোকাবিলায় ভ্যাকসিন বা টিকা নিয়ে একের পর এক সুখবর পাওয়া যাচ্ছে। যদিও জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্থোনিও গুতেরেস সতর্ক করে বলেছেন, বিপন্ন, ক্ষতিগ্রস্ত এই বিশ্বের জন্য টিকা সমাধানের কোনো উপায় নয়। 'নিরাপত্তা সতর্কতায় ভাইরাস' বিষয়ে বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের এক বিশেষ সম্মেলন উদ্বোধন করে তিনি সতর্ক করে বলেন, 'করোনাভাইরাসের টিকার দ্রম্নত অনুমোদন দেওয়া হলেও বিশ্বকে কয়েক দশক ধরে কোভিড-১৯ মহামারির সঙ্গে লড়াই করে যেতে হতে পারে।' তবে এদিন টিকা নিয়ে দ্রম্নত বৈজ্ঞানিক অগ্রগতিরও প্রশংসা করেন তিনি। সংবাদসূত্র : রয়টার্স, আল-জাজিরা অ্যান্থোনিও গুতেরেস বলেন, 'আসুন আমরা নিজেদের বোকা বানাব না। একটি টিকা ক্ষত সারিয়ে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনতে পারবে না। যে ক্ষত আগামী কয়েক বছর এমনকি কয়েক দশক ধরে বিস্তার লাভ করতে পারে।' তিনি বলেন, 'চরম দারিদ্র্য বাড়ছে, দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা ছড়িয়ে পড়ছে। আমরা ৮ দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার মুখোমুখি।' তিনি আরও বলেন, 'কোভিড-১৯ মহামারিতে বিশ্বে ১৫ লাখের বেশি মানুষের মৃতু্য হয়েছে। যা বৈষম্য ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো দীর্ঘমেয়াদি অন্যান্য চ্যালেঞ্জকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।' শতাধিক দেশের নেতা এবং সিনিয়র কর্মকর্তারা এই সম্মেলনে অংশ নেন। এতে সংক্ষিপ্ত ও পূর্বে ধারণকৃত বক্তব্য তুলে ধরা হয়। তবে কূটনীতিকরা আশা করছেন না যে দুই দিনের এই সম্মেলনে দ্রম্নত কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হবে। এদিকে, গুতেরেস তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, টিকা 'বিশ্বের সব মানুষের জন্য' হতে হবে, যাতে বিশ্বের সবাই এর অংশীদার হতে পারে। তিনি আগামী দুই মাসের মধ্যে জাতিসংঘের করোনা মোকাবিলা তহবিলের ৪৩০ কোটি ডলারের ঘাটতি পূরণের জন্য প্রতিশ্রম্নতিদানকারী দেশগুলোর প্রতিও আহ্বান জানিয়েছেন। উলেস্নখ্য, করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষা, চিকিৎসা এবং ভ্যাকসিন উৎপাদন ও বিশ্বব্যাপী বণ্টনে বিশ্বের ১৮০টি দেশ জাতিসংঘের সংস্থা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডবিস্নউএইচও) এসিটির (এক্সেস টু কোভিড ১৯ টুলস) অধীনে কোভ্যাক্স প্রোগামে যোগ দিয়েছে। ফাইজারের টিকা পৌঁছাল যুক্তরাজ্যে এদিকে, ফাইজার ও বায়োএনটেকের উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম চালান যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যে পৌঁছার পর সেগুলোকে অজ্ঞাত একটি স্থানে রাখা হয়েছে। সেখান থেকেই দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে টিকা বিতরণ করা হবে। যুক্তরাজ্য টিকাটির ৪ কোটি ডোজের অর্ডার দিয়েছে। এই পরিমাণ টিকা ২ কোটি মানুষকে দেওয়া হবে। ইংল্যান্ডের উপ-প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা জানান, প্রথম দফার টিকা প্রদান ৯৯% শতাংশ রোগীর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ও মৃতু্য ঠেকাতে পারবে। অধ্যাপক জোনাথন ভ্যান-টাম বলেন, 'অগ্রাধিকার তালিকার প্রথম সারিতে থাকা ব্যক্তিরা সম্ভব হলে টিকা নেবেন এবং তা খুবই কার্যকর।' তিনি আরও বলেন, দ্রম্নত ও সম্ভাব্য সবচেয়ে বেশি পরিমাণে টিকা বিতরণ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু তিনি স্বীকার করেছেন, তালিকায় কিছু শিথিলতা প্রয়োজন। ফাইজার ও বায়োএনটেক উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের টিকা প্রথম দেশ হিসেবে ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাজ্য। কয়েকদিনের মধ্যে এই টিকা প্রদান শুরু হবে। কোম্পানিটির দাবি পরীক্ষার চূড়ান্ত ধাপে ভ্যাকসিনটি মানুষকে করোনা সংক্রমণ থেকে ৯৫ শতাংশ রক্ষা করতে সক্ষম। এই ভ্যাকসিন নিয়ে মানুষের রয়েছে প্রবল আগ্রহ ও বহু প্রশ্ন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে