ইভিএম কেনার প্রকল্প পাস

জাতীয় অথৈর্নতিক পরিষদের নিবার্হী কমিটির (একনেক) সভায় মঙ্গলবার তিন হাজার ৮২৫ কোটি টাকায় মোট দেড় লাখ ইভিএম কেনার প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়

প্রকাশ | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন
বহুল আলোচিত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনার প্রকল্প পাস করেছে সরকার। মঙ্গলবার জাতীয় অথৈর্নতিক পরিষদের নিবার্হী কমিটির (একনেক) সভায় তিন হাজার ৮২৫ কোটি টাকার প্রকল্পটি পাস করা হয়। নিবার্চনী ব্যবস্থায় অধিকতর স্বচ্ছতা আনার লক্ষ্যে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনা, সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় মোট দেড় লাখ ইভিএম কেনা হবে। শেরেবাংলা নগরের এনইসির সম্মেলনকক্ষে একনেকের সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রকল্পটি সম্পকের্ সাংবাদিকদের অবহিত করেন। আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রকল্পটি সম্পকের্ অনুশাসন দিয়েছেন যে ইভিএম ধীরে ধীরে প্রশিক্ষণ দিয়ে ব্যবহার করতে হবে। প্রাথমিকভাবে নগর এলাকায় ব্যবহার করা হবে, পরে পযার্য়ক্রমে সারাদেশে ব্যবহার করা হবে। আগামী জাতীয় সংসদ নিবার্চনে ইভিএম ব্যবহার হবে কিনা- জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এটি নিবার্চন কমিশনের এখতিয়ার। জাতীয় নিবার্চনে ইভিএম ব্যবহার করতে হলে আরপিও সংশোধন করতে হবে। এর আগে গত ১১ সেপ্টেম্বর পরিকল্পনা কমিশনে অনুষ্ঠিত প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা হয়। সেখানেই তিন ধাপে ইভিএম কেনার সিদ্ধান্ত হয়। প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের জুন মাস পযর্ন্ত। নিবার্চন কমিশন সচিবালয় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। কয়েক মাস আগে নিবার্চন কমিশন ইভিএম কেনার এই প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠায়। গত ১৯ আগস্ট বিষয়টি নিয়ে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠানের কথা থাকলেও শেষ মুহূতের্ তা স্থগিত করা হয়। প্রকল্প দলিল থেকে জানা গেছে, ইভিএম তৈরির জন্য বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ জামিলুর রেজা চৌধুরীর নেতৃত্ব কারিগরি ও পরামশর্ক কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি (বিএমটিএফ) নমুনা ইভিএম তৈরি করেছে। ২০১১ সালের পর কয়েকটি স্থানীয় নিবার্চনে সীমিত পরিসরে ইভিএম ব্যবহার হয়েছে। জাতীয় নিবার্চনে পুরোদমে ইভিএম ব্যবহার করতে হলে আরপিও সংশোধন করতে হবে। আরপিওতে শুধু স্থানীয় নিবার্চনে মেকানিক্যাল ডিভাইস ব্যবহারের সুযোগ রাখা হয়েছে। আজ একনেকে এই প্রকল্পসহ মোট ১৪টি প্রকল্প পাস করা হয়। এতে খরচ হবে ১২ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে স্থানীয় মুদ্রায় জোগান দেয়া হবে আট হাজার ৮৪২ কোটি টাকা। আর বিদেশি সহায়তা হিসেবে পাওয়া যাবে তিন হাজার ৪৪৬ কোটি টাকা। আর প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা দেবে ২৫৭ কোটি টাকা। একনেকে অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হলো ৭৫০ কোটি টাকার মিরসরাইয়ে বেপজা অথৈর্নতিক অঞ্চল; ২৫৩ কোটি টাকার শেখ হাসিনা তঁাতপল্লী স্থাপন; ৫২৮ কোটি টাকার চট্টগ্রাম-রাঙামাটি জাতীয় মহাসড়কের হাটহাজারী থেকে রাউজান পযর্ন্ত সড়ক চার লেনে উন্নীত করা; ১২৯ কোটি টাকার জামালপুর-মাদারগঞ্জ সড়ক প্রশস্ত ও মজবুত করা; ৪৬১ কোটি টাকার নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের অবকাঠামো নিমার্ণ ও উন্নয়ন; ৮০ কোটি টাকার ভারতের সঙ্গে রেলসংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে চিলাহাটি এবং চিলাহাটি বডাের্রর মধ্যে রেলপথ নিমার্ণ; ১৫৭ কোটি টাকার গোপালগঞ্জ জেলায় বিএআরআইয়ের কৃষি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন এবং দেশের পশ্চিমাঞ্চলের পরিবেশ-প্রতিবেশ উপযোগী গবেষণা কাযর্ক্রম জোরদার করার মাধ্যমে কৃষি উন্নয়ন; ১১২ কোটি টাকার বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, ঝালকাঠি, বরগুনা, মাদারীপুর ও শরীয়তপুর কৃষি উন্নয়ন; ৮৩ কোটি টাকার গোপালগঞ্জ-খুলনা-বাগেরহাট-সাতক্ষীরা-পিরোজপুর কৃষি উন্নয়ন; ২৫৮ কোটি টাকার জাতীয় উন্নয়ন প্রশাসন একাডেমি প্রতিষ্ঠা; ১১৩ কোটি টাকার শাহবাগের বাংলাদেশ বেতার কমপ্লেক্স আগারগঁাওয়ে স্থানান্তর, নিমার্ণ ও আধুনিকায়ন; ৮২৪ কোটি টাকার খুলনা শহরের জলাবদ্ধতা দূর করতে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং চার হাজার ৯৭১ কোটি টাকার প্রোগ্রাম ফল সাপোটির্ং রুরাল ব্রিজেস প্রকল্প।