বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

দৌলতপুরে করোনার নমুনা দিতে গিয়ে ৩ ঘণ্টা অবরুদ্ধ বাবা-ছেলে

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
  ১৬ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক হৃদরোগী ও তার ছেলে করোনা পরীক্ষা করাতে গিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মচারীদের তোপের মুখে তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ ছিলেন। এক পর্যায়ে পিতা-পুত্রকে মোবাইল কোর্টে সাজা দেওয়ার প্রস্তুতির সময় প্রত্যক্ষদর্শীদের তোপের মুখে করোনা পরীক্ষার স্যাম্পল না নিয়েই পিতা-পুত্রকে বিদায় করে দেওয়া হয়।

ভুক্তভোগী উপজেলার সোনাইকুন্ডি গ্রামের কৃষক তহিদুল ইসলাম সম্প্রতি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে কিছুটা সুস্থ বোধ করায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। গত কয়েকদিন ধরে করোনা নেগেটিভ সনদ নেওয়ার জন্য দৌলতপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গেলে বৃহস্পতিবার তাকে যেতে বলা হয়। বেলা ১১টার দিকে তহিদুল ইসলাম তার ছেলে সোহেল রানাকে সঙ্গে নিয়ে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে প্রয়োজনীয় ফরম পূরণ করেন। এসময় আচমকা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিসংখ্যানবিদ আমিরুল ইসলাম তাদের ফরমটি কেড়ে নিলে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এক পর্যায়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম তুহিন সেখানে উপস্থিত হয়ে করোনা পরীক্ষা করতে আসা পিতা-পুত্রকে একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখেন। একই সঙ্গে তাদের মোবাইল কোর্টে সাজা দেওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ডাকা হয়। ঘটনাস্থলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপস্থিত হলে প্রত্যক্ষদর্শীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। উপস্থিত জনতার সঙ্গে কথা বলে অবরুদ্ধ পিতা-পুত্রের কোনো দোষ না পাওয়ায় ইউএনও ঘটনাস্থল থেকে চলে যান। এ সময় প্রত্যক্ষদর্শী ও স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের স্টাফদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন এবং অবরুদ্ধ পিতা-পুত্রকে মুক্ত করে দেন।

এ ব্যাপারে হৃদরোগী কৃষক তহিদুল ইসলাম জানান, তিনি অসুস্থ। কোনো অন্যায় না করেও করোনা পরীক্ষা করতে গিয়ে তাকে ও তার ছেলেকে একটি ঘরে তিন ঘণ্টা আটকে রাখা হয়েছিল।

প্রত্যক্ষদর্শী জাহেরুল ইসলাম জানান, স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের টিএইচওসহ স্টাফরা সাধারণ রোগীদের সঙ্গে সব সময় খারাপ আচরণ করে থাকেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম তুহিন দাবি করেন করোনা স্যাম্পল নেওয়ার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তারা উপস্থিত হননি এবং কর্মচারীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। তবে তাদের তিন ঘণ্টা ধরে অবরুদ্ধ রাখা হলো কেন এ বিষয়ে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার জানান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তার ফোন পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার সত্যতা না পাওয়ায় সেখান থেকে চলে আসি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে