বদলগাছীতে মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা

অব্যাহত থাকবে শৈত্যপ্রবাহ তাপমাত্রা কমবে না

প্রকাশ | ১৬ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
তীব্র কুয়াশা উপেক্ষা করে জীবিকার সন্ধানে পঞ্চগড়ের সাধারণ মানুষ -যাযাদি
দেশের যেসব অঞ্চলের ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ চলছে সেগুলো আরও কিছুদিন অব্যাহত থাকবে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বেশ কিছুটা কমলেও আগামী কিছুদিন দেশজুড়ে তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে। আর কমার সম্ভাবনা নেই। শুক্রবার রাজধানীর আগারগাঁও আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক জানান, শুক্রবার ছিল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নওগাঁর বদলগাছীতে, ৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সারাদেশের তাপমাত্রা আগামী কিছুদিন অপরিবর্তিতই থাকবে। তাপমাত্রা এর চেয়ে আর কমবে না। কিছুদিন পরে আবার বাড়তে পারে। চলমান শৈত্যপ্রবাহ নিয়ে এই আবহাওয়াবিদ বলেন, ঢাকার কাছেই টাঙ্গাইলে শৈত্যপ্রবাহ চলছে। সেখানে তাপমাত্রা ১০-এর নিচে, ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি। তবে রাজধানীতে শৈত্যপ্রবাহের কোনো সম্ভাবনা নেই। চলতি মৌসুমে নওগাঁতে এখন পর্যন্ত দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে। আর শুক্রবারের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কক্সবাজারে, ২৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বদলগাছীতে মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা মাঘের প্রথম দিন থেকে দেশের বিস্তীর্ণ এলাকায় বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। শুক্রবার নওগাঁর বদলগাছীতে এবারের শীত মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। ওই দিন ভোরে বদলগাছীতে ৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়, যা সারাদেশে সবচেয়ে কম। ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি শীত মৌসুমে এর আগে গত ১৯ ডিসেম্বর কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, রংপুর বিভাগসহ টাঙ্গাইল, গোপালগঞ্জ, ময়মনসিংহ, শ্রীমঙ্গল, রাজশাহী, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, পাবনা ও নওগাঁ অঞ্চলের উপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, তা অব্যাহত থাকতে পারে। ১৭-১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে। তারপর পরিস্থিতি একটু উন্নতির আশা করা যায়। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানুয়ারি মাসের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে দুটি শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনার কথা বলেছিল, যার একটি তীব্র রূপ নেওয়ার শঙ্কা রয়েছে। গত ১৮ থেকে ২৩ ডিসেম্বর এবং ২৬-৩১ ডিসেম্বর রংপুর, রাজশাহী, কুষ্টিয়া ও যশোর অঞ্চলে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। বড় এলাকাজুড়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে চলে এলে মৃদু; ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে হলে মাঝারি এবং ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে হলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলে ধরা হয়। রাজারহাটে তাপমাত্রা ৮ দশমিক ১ ডিগ্রি আমাদের রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, কুড়িগ্রামের উপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ায় স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। উত্তরে দিনের বেশির ভাগ সময় সূর্যের মুখ দেখা না যাওয়ায় তাপমাত্রা নিম্নগামী, এর সঙ্গে কনকনে হিমেল হাওয়ায় ঠান্ডার মাত্রা বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় বিকাল হলেই ঘন কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে প্রকৃতি এবং তা অব্যাহত থাকছে পরের দিন দুপুর পর্যন্ত। এতে করে গরম কাপড়ের অভাবে চরম শীতকষ্টে ভুগছে দরিদ্র পরিবারের শিশু ও বৃদ্ধরা। বিশেষ করে কৃষি শ্রমিকরা সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে। কনকনে ঠান্ডা উপেক্ষা করে সময়মতো কাজে বের হতে পারছেন না অনেক শ্রমিক। কমে গেছে তাদের আয় রোজগারও। অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। এদিকে ঠান্ডার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলার হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্টসহ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিনই ইনডোরের পাশাপাশি আউটডোরে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে অন্তত ৮শ' থেকে ৯শ' রোগী। স্থানীয় কৃষি আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া পর্যবেক্ষক সুবল চন্দ্র সরকার জানায়, ১৫ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আরও কয়েকদিন তাপমাত্রা নিম্ন্নগামী থাকতে পারে বলে জানান তিনি।