২৪ ঘণ্টায় ২৩ মৃতু্য, শনাক্ত ৫৬৯ জন

করোনায় মৃতের সংখ্যা ৭ হাজার ৯০০ ছাড়াল

প্রকাশ | ১৮ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ২৩ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে সাত হাজার ৯০৬ জনে দাঁড়াল। এছাড়া গত একদিনে আরও ৫৬৯ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। যা গত সাড়ে আট মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম। সবশেষ গত বছরের ২ মে এরচেয়ে কম রোগী শনাক্তের তথ্য দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেদিন ৫৫২ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ার তথ্য দেওয়া এসেছিল। আর শনিবার ৫৭৮ জন নতুন রোগী শনাক্তের খবর জানানো হয়েছিল। প্রতিদিনের মতো রোববার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত করোনাভাইরাস বিষয়ক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, সারাদেশে করোনার সর্বশেষ সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যালোচনায় শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত ১১৫টি আরটি-পিসিআর ল্যাব, ২৮টি জিন-এক্সপার্ট ল্যাব ও ৫৬টির্ যাপিড অ্যান্টিজেন ল্যাবে অর্থাৎ ১৯৯টি ল্যাবরেটরিতে ১৩ হাজার ৫৫৩টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরপর যাচাই-বাছাই শেষে ১৩ হাজার ৪৪৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ নিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৬ ৩৪ লাখ ৫৭ হাজার ৪৫৩টি। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় রোগী শনাক্ত হয়েছে ৫৬৯ জন। এ নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৫ লাখ ২৭ হাজার ৬৩২ জন হলো। এদিকে, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও বাড়িতে উপসর্গবিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৬৮১ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৪ লাখ ৭২ হাজার ৪৩৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার হার চার দশমিক শূন্য ২৩ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ২৬ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৯ দশমিক শূন্য ৪৮ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মৃতু্যর হার ১ দশমিক ৫০ শতাংশ। মৃতদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘণ্টায় মৃত ২৩ জনের চলিস্নশোর্ধ্ব একজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ছয়জন এবং ষাটোর্ধ্ব ১৬ জন রয়েছেন। বিভাগীয় হিসেবে মৃতদের মধ্যে ঢাকায় ১৬ জন, ময়মনসিংহে দুজন এবং চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, রংপুর বিভাগে একজন করে মোট পাঁচজন রয়েছেন। দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৭ হাজার ৯০৬ জনের মধ্যে ৫ হাজার ৯৯২ জনই পুরুষ (৭৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ) এবং ১ হাজার ৯১৪ জন (২৪ দশমিক শূন্য ২১ শতাংশ) নারী। তাদের মধ্যে ৪ হাজার ৩৫৩ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়াও ১ হাজার ৯৯২ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৯১৪ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৩৯০ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১৬১ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৬০ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ৩৬ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম। এর মধ্যে ৪ হাজার ৩৮৪ জন ঢাকা বিভাগের, ১ হাজার ৪৪৮ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৪৫১ জন রাজশাহী বিভাগের, ৫৪৩ জন খুলনা বিভাগের, ২৪০ জন বরিশাল বিভাগের, ৩০১ জন সিলেট বিভাগের, ৩৫৪ জন রংপুর বিভাগের এবং ১৮৫ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে। গত ১৪ জানুয়ারি তা সোয়া ৫ লাখ পেরিয়ে যায়। এর মধ্যে গত বছরের ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা একদিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃতু্যর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২৯ ডিসেম্বর তা সাড়ে সাত হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে গত বছরের ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃতু্য খবর জানানো হয়, যা একদিনের সর্বোচ্চ মৃতু্য। বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ৯ কোটি ৪৫ লাখ পেরিয়েছে। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২০ লাখ ২২ হাজার। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ২৯তম স্থানে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় ৩৮তম অবস্থানে রয়েছে।