প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে আরও ২২ জনের মৃতু্য হয়েছে। এ নিয়ে দেশে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮ হাজার ৩ জনে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগী শনাক্তের সংখ্যা পাঁচশ'র (৪৩৬ জন) নিচে নেমে এসেছে। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ৩১ হাজার ৩২৬ জন হয়েছে।
প্রতিদিনের মতো শনিবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত করোনাভাইরাস-বিষয়ক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, সারাদেশে করোনার সর্বশেষ সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যালোচনায় শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ১১৬টি আরটি-পিসিআর ল্যাব, ২৮টি জিন-এক্সপার্ট ল্যাব ও ৫৬টির্ যাপিড অ্যান্টিজেন ল্যাবে অর্থাৎ ২০০টি
ল্যাবরেটরিতে ১১ হাজার ৭টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরপর যাচাই-বাছাই শেষে পূর্বে জমা কিছু নমুনাসহ ১১ হাজার ১১৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ নিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা ৩৫ লাখ ৪২ হাজার ৩৮৯টি দাঁড়িয়েছে। এ পর্যন্ত দেশে সরকারি ব্যবস্থাপনায় নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ২৭ লাখ ৭৬ হাজার ৪০১টি এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৭ লাখ ৬৪ হাজার ৯৮৮ নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
এই সময়ের মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন আরও ৪৩৬ জন। দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৫ লাখ ৩১ হাজার ৩২৬ জনে দাঁড়িয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও বাড়িতে উপসর্গবিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৩৩৮ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থতার সংখ্যা ৪ লাখ ৭৫ হাজার ৮৯৯ জনে দাঁড়িয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৫ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৯ দশমিক শূন্য ৫৭ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃতু্যর হার ১ দশমিক ৫১ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তির ভাষ্য অনুযায়ী গত একদিনে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ১৭ জন পুরুষ ও ৫ জন নারী। তাদের মধ্যে ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে রয়েছেন ১৩ জন, ৫০ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৬ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ১ জন এবং ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে একজন রয়েছেন। মৃতদের বসবাসের বিভাগওয়ারি হিসাবে ঢাকা বিভাগে ১৮ জন, চট্টগ্রামে ৩ এবং বরিশালে ১ জন। তারা সবাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। গতকাল পর্যন্ত করোনায় মোট মৃতু্য ৮ হাজার ৩ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ৬ হাজার ৬৪ জন (৭৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ) ও নারী ১ হাজার ৯৩৯ জন (২৪ দশমিক শূন্য ২৩ শতাংশ)।
বাংলাদেশে গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ১৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম মৃতু্যর ঘটনা ঘটে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। ক্রমেই মহামারি আকারে সংক্রমণ বিশ্বের প্রায় সব দেশে ছড়িয়ে পড়ে। দেশে সংক্রমণ শুরুর দিকে রোগী শনাক্তের হার কম ছিল। গত মে মাসের মাঝামাঝি থেকে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত সেটি ২০ শতাংশের ওপরে ছিল। এরপর থেকে নতুন রোগীর পাশাপাশি শনাক্তের হারও কমতে শুরু করেছিল। মাস দুয়েক সংক্রমণ নিম্নমুখী থাকার পর গত নভেম্বরের শুরুর দিক থেকে নতুন রোগী ও শনাক্তের হারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয়।
নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে দৈনিক নতুন রোগী শনাক্তের গড় দুই হাজার ছাড়ায়। গত ১০ ডিসেম্বর থেকে নতুন রোগী শনাক্ত এবং শনাক্তের হার কম। গত তিন সপ্তাহ ধরে পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ১০ শতাংশের নিচে। চলতি বছরের অধিকাংশ দিন ১ হাজারের কম রোগী শনাক্ত হয়েছে।
Copyright JaiJaiDin ©2021
Design and developed by Orangebd