বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
সংসদে বিল পাস

দু'দিনের মধ্যেই গেজেট প্রকাশ তারপরই এইচএসসির ফল

যাযাদি রিপোর্ট
  ২৫ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল সংক্রান্ত বিল তিনটি সংসদে পাস হওয়ার পর দুদিনের মধ্যে গেজেট প্রকাশ করা হবে। তার পরপরই এসব পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে।

\হরোববার সংসদে ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল-২০২১ পাসের সময় এ তথ্য জানান শিক্ষামন্ত্রী। একই সঙ্গে পাস হওয়া অন্য দুটি বিল হচ্ছে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) বিল-২০২১ ও বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) বিল-২০২১ বিল।

গতকাল জাতীয় সংসদে পাবলিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ সংক্রান্ত তিনটি পৃথক বিল পাশের আলোচনায় সরকার ও বিরোধীদলীয় এমপিদের বক্তব্যের জবাবে এবং তিনটি বিল পাশের আহ্বান জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা.দীপু মনি এসব কথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ফেব্রম্নয়ারিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হলে প্রাথমিকভাবে দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির নিয়মিত ক্লাস হবে। অন্যান্য শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে একদিন করে ক্লাসে আসবে। তারা পুরো সপ্তাহের পড়া নিয়ে যাবে। পরের সপ্তাহে আবার একদিন আসবে।

শিক্ষামন্ত্রী জানান, ৪ ফেব্রম্নয়ারির মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

খোলার প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় সবাইকে আগের মতো ক্লাসে একসঙ্গে বসতে দেওয়া যাবে না। স্বাস্থ্যবিধি অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। সে ক্ষেত্রে সব শ্রেণির শিক্ষার্থীকে একসঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আনার সুযোগ থাকবে না। অনুমতিও দেওয়া হবে না।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ক্লাস খুলে দেওয়ার পর নিয়মিত করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করা হবে। জাতীয় পরামর্শক কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে খোলার সিদ্ধান্ত ও তারিখ নির্ধারণ করা হবে।

দীপু মনি বলেন, এ বছর যারা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে তারা এক বছর সরাসরি ক্লাস করতে পারেনি। অনলাইন ও টিভিতে অনেকে ক্লাস করেছে। কিছু শিক্ষার্থী একেবারেই ক্লাস করেনি। এ বছরের জন্য সংক্ষিপ্ত সিলেবাস করা হয়েছে। ফেব্রম্নয়ারিতে যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া যায় তাহলে পরে কয়েক মাস সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের ওপর পাঠদান শেষে পরীক্ষা নেওয়া যাবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীরা প্রস্তুত থাকলেও কোভিড-১৯ এর কারণে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারা বিশ্বে একই অবস্থা। আমরা যাদের উন্নত বিশ্ব বলি, যাদের অনেক সময় ফলো করার চেষ্টা করি, সেসব জায়গায়ও কিন্তু একই পদ্ধতিতে অটোপাসের ফলাফল দেওয়া হয়েছে। আমরা হঠাৎ কোনো ধরনের চিন্তা-ভাবনা ছাড়া এমন সিদ্ধান্ত নিইনি। এখন পর্যন্ত আমরা শিক্ষার্থীদের, অভিভাবকদের, শিক্ষকদের কোভিড-১৯ সংক্রমণ হওয়ার যে সম্ভাবনা ছিল, তা থেকে দূরে রাখতে পেরেছি। তাদের রক্ষা করার আমাদের যে প্রচেষ্টা ছিল তা করেছি। আমরা সফল হয়েছি।

শিক্ষামন্ত্রী সংসদ সদস্যদের নানা অভিযোগ এবং বিল পাসের আগে জনমত যাচাইয়ের জন্য পাঠানোর বিরোধী করে দ্রম্নত বিলগুলোর পাসের আহ্বান জানিয়ে বলেন, অটোপাসে মেধাবীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মেধাবীদের একটা ধারাবাহিকতা থাকে। আমরা আগের দুটি পাবলিক পরীক্ষা এসএসসি এবং জেএসসি ফলাফলের ভিত্তিতে ফল দেব। কারণ যারা মেধাবী তারা কিন্তু এ দুটি পরীক্ষায় ভালো ফল অর্জন করে। তারা তাদের মেধার স্বাক্ষর রেখে এসেছে। কাজেই শুধু মেধাবীরাই কেন, কেউ-ই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না।

কওমি মাদ্রাসা খোলা রাখা প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কওমি মাদ্রাসার অধিকাংশ শিক্ষার্থীই এতিম ও দুস্থ। তাদের বেশিরভাগই আবাসিক। সেখানে তারা থাকার সুযোগ না পেলে তাদের জীবন দুঃসহ অবস্থায় পড়বে। তাই সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে কিছু শর্তসাপেক্ষে কওমি মাদ্রাসা খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এখানেও মানবিকতা, স্বাস্থ্যঝুঁকি সব কিছু বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।

উলেস্নখ্য, করোনার কারণে গত বছরের ১৮ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি চলছে। আগামী ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটির ঘোষণা রয়েছে। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি আর বাড়বে না। আগামী ৪ ফেব্রম্নয়ারির মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আগে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে প্রস্তুতির নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। একই সঙ্গে একটি গাইডলাইন প্রকাশ করেছে মাউশি। এ গাইডলাইন অনুসারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিষ্ঠান খোলার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে