রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ সব সংসদ সদস্যকে একইদিনে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, কোভিডের টিকা নিয়ে মানুষের মনে সংশয় দূর করতে এ উদ্যোগ নিতে হবে। তার মতে, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদের সব সদস্য এবং সব সংসদ সদস্য- সবাই একদিনে ভ্যাকসিন নিলে কারও মধ্যে আর বিভ্রান্তি থাকবে না।
সোমবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ আহ্বান জানান। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ডক্টর শিরীন শারমিন চৌধুরী।
অর্থ খাতের সমালোচনা করে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, 'ব্যাংকের টাকা নিয়ে কথা এসেছে। পি কে হালদার সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা মেরে দিলেন। তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব ছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের। বাংলাদেশ ব্যাংক করেটা কি? হলমার্ক শত কোটি টাকা পাচার করেছে। বাংলাদেশ
ব্যাংক কি দেখে না?'
'গুরু ছাড়া দুর্নীতি হয় না' মন্তব্য করে তিনি বলেন, ব্যাংক খাতের এসব দুর্নীতির গুরু হলো বাংলাদেশ ব্যাংক। তাদের কারণে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হচ্ছে। দুর্নীতির অভিযোগ আসে শুধু রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে। কানাডার বেগম পাড়ায় ২৮টি বাড়ির মধ্যে ২৪টা বাড়ি সরকারি কর্মচারীদের। আমলারা কি সবকিছুর ঊর্ধ্বে? কোন কর্মকর্তার ছেলেমেয়ে বিদেশে পড়ে না? এমন প্রশ্নও তোলেন তিনি।
রাষ্ট্রপতির ভাষণের প্রসঙ্গ ধরে মজিবুল হক চুন্নু বলেন, 'স্বীকার করব সরকার উন্নয়ন করেছে। অনেক উন্নয়ন করেছে। এরশাদ সাহেব যখন ক্ষমতায় ছিলেন তিনিও করেছিলেন। কিন্তু রাষ্ট্রপতির বক্তৃতার বাইরেও অনেক কিছু আছে। কৃষক ধানের ন্যায্যমূল্য পাবে- এ বিষয়ে গাইডলাইন ভাষণে আশা করেছিলাম। সেটা নেই। আমার এলাকায় কৃষক সবজি উৎপাদন করে। খিরাই এক টাকা কেজি, ফুলকপি ২ টাকা, কেউ নেয় না। সবজির মৌসুমে সেগুলোর মূল্য পায় না।'
তিনি বলেন, 'গার্মেন্টসে রপ্তানির অর্ধেক হয় ইউরোপে। আমরা সেখানে জিএসপি সুবিধা পাচ্ছি। ২০২৩-এর পরে এই সুবিধা থাকবে না। জিএসপি পস্নাস হবে, সেটা পেতে মানবাধিকারসহ ১৭টি শর্ত দিয়েছে। মানবাধিকারকে বেশি গুরুত্ব দেয়। উন্নত করতে না পারলে পস্নাস পাব কি না সন্দেহ আছে।'
বিভিন্ন খাতের দুর্নীতির কথা তুলে ধরে চুন্নু বলেন, 'রাস্তাঘাটে অনেক মোটরসাইকেল। কোনো ট্রেনিং নেই। স্বাস্থ্য বিভাগের কথা কি বলব! কেনাকাটার কি যে অবস্থা! ১০০ টাকার জিনিস ৫০০ টাকা। প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ২৬২ গাড়ির হিসাব নেই।'