বিশ্বে আড়াই মাসে করোনা সংক্রমণ দ্বিগুণ ছাড়াল মৃতু্য ২১ লাখ ৬৯ হাজার পার

প্রকাশ | ২৮ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারের সর্বশেষ তথ্যমতে, বিশ্বব্যাপী এখন পর্যন্ত করোনা শনাক্ত রোগী ১০ কোটি নয় লাখ ছাড়িয়েছে। এদিকে, এমন এক সময়ে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১০ কোটির ঘর ছাড়াল যখন ভাইরাসের প্রকোপ কমিয়ে আনতে বিশ্বজুড়ে চলছে বড় আকারে টিকাদানের প্রস্তুতি। লকডাউন, সামাজিক দূরত্বের নিয়ম, আর নানারকম বিধিনিষেধ দিয়েও কাজ হয়নি, গত কয়েক মাসে সংক্রমণের গতি কেবলই বেড়েছে। প্রতিদিন এখন বিশ্বজুড়ে গড়ে শনাক্ত হচ্ছে পাঁচ লাখের বেশি রোগী। সংবাদসূত্র : এএফপি, আল-জাজিরা চীনের উহানে \হপ্রথম এ ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার আট মাসের মাথায় গত আগস্টে বিশ্বজুড়ে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছিল আড়াই লাখে। সেই সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে নভেম্বরের ৯ তারিখে পৌঁছায় পাঁচ কোটিতে। শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ফের দ্বিগুণ হয়ে দশ কোটিতে পৌঁছাতে সময় লেগেছে মাত্র আড়াই মাস। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শেষে ছড়াতে শুরু করা নতুন ধরনের এ করোনাভাইরাস বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে পৌঁছে যেতে খুব বেশি সময় নেয়নি। কিন্তু অনেক দেশেই এখনো করোনাভাইরাস পরীক্ষার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। ফলে আক্রান্ত ও মৃতু্যর অনেক তথ্যই হিসাবের বাইরে থেকে যাচ্ছে বলে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের ধারণা। এদিকে, বিশ্বজুড়ে মারা গেছে ২১ লাখ ৬৯ হাজারেরও বেশি মানুষ। আর সুস্থ হয়েছে সাত কোটি ২৯ লাখ ৪০ হাজার। উলেস্নখ্য, করোনা মহামারিতে এ পর্যন্ত বিশ্বের ২১৯টি দেশ ও অঞ্চল আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যায় সবার ওপরে থাকা যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত দুই কোটি ৫৪ লাখের বেশি মানুষের মধ্যে এ ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যা বিশ্বের মোট শনাক্ত রোগীর এক চতুর্থাংশ। মৃতু্যর সংখ্যাতেও যুক্তরাষ্ট্র সবার চেয়ে এগিয়ে, এ পর্যন্ত চার লাখ ২৫ হাজার মানুষের মৃতু্য হয়েছে সেখানে। সংক্রমণের সংখ্যায় ভারত এখন বিশ্বে দ্বিতীয়, সেখানে এক কোটি ছয় লাখ রোগী শনাক্ত হয়েছে, মৃতু্য হয়েছে এক লাখ ৫৩ হাজার মানুষের। মৃতের সংখ্যায় বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ব্রাজিল, সেখানে দুই লাখ ১৮ হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে এ ভাইরাস। সরকারি হিসাবে আক্রান্ত হয়েছে ৮ কোটি ৯৩ লাখের বেশি মানুষ। গত কয়েক দিনে যুক্তরাষ্ট্রে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা সামান্য কমে এলেও যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিল থেকে ছড়াতে শুরু করা করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক নতুন কয়েকটি ধরন এখন মাথাব্যথার বড় কারণ। ২০২১ সাল বিশ্বে এসেছে করোনাভাইরাসের টিকার আশা নিয়ে। এরই মধ্যে কিছু দেশ নাগরিকদের টিকা দেওয়ার কাজ এগিয়ে নিচ্ছে। তবে মোট জনসংখ্যার একটি বড় অংশকে টিকা দিতে লাগবে বহুদিন। কিছু ধনী দেশ তা দ্রম্নততার সঙ্গে পারলেও গরিব অনেক দেশের টিকা পাওয়াই এখনো নিশ্চিত হয়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরি স্বাস্থ্য কর্মসূচীর প্রধান মাইকেল রায়ান বলেন, সবচেয়ে ঝুঁকিতে যারা আছেন, তাদের টিকাদান নিশ্চিত করার মত যথেষ্ট টিকাও এখনো বিশ্বের হাতে নেই। অস্ট্রেলিয়ায় ১০ দিন ধরে নতুন সংক্রমণ নেই এদিকে, অস্ট্রেলিয়ায় বুধবার পর্যন্ত টানা ১০ দিন ধরে নতুন করে কারও শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়নি। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমগুলো। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় দেশটির সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য নিউ সাউথ ওয়েলসে করোনা বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে। ২০২১ সালের গোড়ার দিকে রাজ্যটিতে করোনা সংক্রমণের মাত্রা কমে আসে। জানুয়ারির শুরুর দিকে সেখানে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা এক ডিজিটে নেমে আসে। অস্ট্রেলিয়া ওপেন টেনিস টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয় যে ভিক্টোরিয়া রাজ্যে সেখানে গত তিন সপ্তাহ ধরে স্থানীয়ভাবে কোনো সংক্রমণের ঘটনা ঘটেনি। বুধবার টুইটারে দেওয়া পোস্টে স্বাস্থ্যমন্ত্রী গ্রেগ হান্ট বলেন, গত ১০ দিন ধরে অস্ট্রেলিয়ায় স্থানীয়ভাবে নতুন কোনো সংক্রমণের ঘটনা নেই।