দোকান কমর্চারীর মাথা ফাটালেন ঢাবির ছাত্রলীগ নেতা

প্রকাশ | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
ঢামেক হাসপাতাল এলাকায় ছাত্রলীগ নেতা আমির হামজার (ইনসেটে) হামলায় আহত শুভ Ñএনটিভি
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল এলাকায় এক ওষুধের দোকানে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) দুই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। এতে দোকানের শুভ (৩২) নামের এক কমর্চারীর মাথা ফেটে যায়। রোববার রাতে ঢামেকের সেবা ফামেির্সতে এ ঘটনা ঘটে। পরে আহত অবস্থায় শুভকে ঢামেকে ভতির্ করা হয়। দুই ছাত্রলীগ নেতার একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শহীদ সাজের্ন্ট জহুরুল হক হলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমির হামজা ও অপরজন সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হল শাখা ছাত্রলীগের স্কুলছাত্রবিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হাসান ঝন্টু। প্রত্যক্ষদশীর্রা জানান, এ দুই ছাত্রলীগ নেতা রাতে সেবা ফামেির্সতে কিছু ওষুধ কিনতে আসেন। ওই ওষুধগুলো দোকানে না থাকায় তারা অন্য জায়গা থেকে নিয়ে আসতে বলেন। তখন দোকান কমর্চারী শুভ কাজের ব্যস্ততার কারণে তা আনতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এতে ক্ষেপে যান দুই ছাত্রলীগ নেতা। এ নিয়ে বাগ্বিতÐা হয়। একপযাের্য় শুভর মাথাসহ শরীরে লোহার পাইপ দিয়ে আঘাত করা হয়। আঘাতে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত হয়। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় শুভকে ঢামেক হাসপাতালে নিলে মাথায় আটটি সেলাই দেয়া হয়। এদিকে, ওই দুই ছাত্রলীগ নেতাকে ফেরাতে গিয়ে লাঞ্ছিত হয়েছেন ঢামেকের জরুরি বিভাগসংলগ্ন সেবা ফামেির্সর মালিক ও আওয়ামী লীগ কমীর্ মো. শহীদুর রব (পেনু)। দোকানের মালিক মো. শহীদুর রব (পেনু) রাতে বলেন, ‘ঘটনার সময় আমির হামজার সঙ্গে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কথা বলেন। তবু তিনি থামেননি।’ তবে ছাত্রলীগ নেতা আমির হামজা দাবি করেছেন, তিনি ওষুধ কিনতে গেলে ওই দোকান কমর্চারী তার মাকে নিয়ে গালি দেয়। তার পর তার সঙ্গে হাতাহাতি হয়। ঘটনাস্থলে থাকা একাধিক প্রত্যক্ষদশীর্ জানান, হামলা শেষে দোকানে তালা লাগিয়ে দেন ছাত্রলীগ নেতারা। আর এই তালার চাবি দেয়া হয় এসএম হল ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি মেহেদী হাসানের কাছে। এর আগে মেহেদীর বিরুদ্ধে নানা অপকমের্ জড়ানোর অভিযোগ রয়েছে। এদিকে, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস। তারা গিয়ে দোকানের তালা খোলানোর ব্যবস্থা করেন এবং ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার প্রতিশ্রæতি দেন। ঘটনার প্রত্যক্ষদশীর্ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ইউনিট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফোরকান মোল্লা জানান, তিনি গিয়ে এসএম হলের বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা মেহেদী হাসানের কাছ থেকে দোকানের চাবি নিয়ে আসেন। এদিকে, এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুই ছাত্রলীগ নেতাকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ছাত্রলীগ নেতারা জানান, সংগঠনের গতিশীলতা ও গঠনতান্ত্রিক নিয়মের স্বাথের্ শৃঙ্খলাবিরোধী কমর্কাÐে যুক্ত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় শহীদ সাজের্ন্ট জহুরুল হক হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমির হামজা ও সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হল ছাত্রলীগের স্কুলছাত্রবিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হাসান ঝন্টুকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়। ছাত্রলীগের নেতারা আরও জানান, এ দুই নেতা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনের অনুসারী। এ বিষয়ে কথা বলতে শোভনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাবি ছাত্রলীগের এক নেতা বলেন, ‘আমির হামজার বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় চঁাদাবাজি, সাত কলেজ বাতিলের আন্দোলনে ঢাবি ছাত্রীদের ওপর যৌন নিযার্তন, হলে রুমের মধ্যে মাদকসেবন এবং মাদক ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু তিনি সভাপতির অনুসারী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।’