ভাসানচরে পৌঁছাল আরও ১৭৭৮ রোহিঙ্গা

প্রকাশ | ৩০ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
তৃতীয় দফায় রোহিঙ্গাদের একটি দলকে চট্টগ্রাম বোটক্লাব থেকে শুক্রবার নোয়াখালীর ভাসানচরে নেওয়া হয় -স্টার মেইল
তৃতীয় দফায় কক্সবাজারের ক্যাম্প থেকে ১ হাজার ৭৭৮ জন রোহিঙ্গার একটি দল শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টায় নোয়াখালীর ভাসানচরে পৌঁছেছে। এদিকে গতকাল উখিয়ার ক্যাম্প থেকে রওনা হয়েছে ১ হাজার ৭০০ জনের আরেকটি দল। উখিয়ার আশ্রয়শিবির থেকে বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গাদের যে দলটিকে বাসে করে চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হয়েছিল, চট্টগ্রাম থেকে মোট চারটি জাহাজ তাদের নিয়ে গতকাল নোয়াখালীর ভাসানচরে ভেড়ে। চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. মোজাম্মেল হক বলেন, 'সকালে যে ১ হাজার ৭৭৮ জন রওনা হয়েছিল, তারা পৌঁছে গেছে। শুক্রবার কক্সবাজার থেকে রওনা হয়েছে আরও ১৭০০ জন। রাতে চট্টগ্রামে থেকে শনিবার (আজ) তারা ভাসানচরে যাবে।' কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির ও তার বাইরে অবস্থান নিয়ে থাকা প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে নিয়ে নানা সামাজিক সমস্যা সৃষ্টির প্রেক্ষাপটে দুই বছর আগে তাদের একটি অংশকে হাতিয়ার কাছে মেঘনা মোহনার দ্বীপ ভাসান চরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেয় সরকার। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ২৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে মোটামুটি ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করে এক লাখের বেশি মানুষের বসবাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। টেকনাফ ও উখিয়ায় থাকা রোহিঙ্গার মধ্যে গত ৪ ডিসেম্বর ১ হাজার ৬৪২ রোহিঙ্গাকে প্রথম দফায় ভাসানচরে নেওয়া হয়। এরপর দ্বিতীয় দফায় গত ২৮ ডিসেম্বর এক হাজার ৮০৫ জন রোহিঙ্গা নোয়াখালীর ওই দ্বীপে গড়ে তোলা আশ্রয়ণ প্রকল্পে পৌঁছায়। তৃতীয় দফার স্থানান্তরের জন্য বুধবার রাতেই রোহিঙ্গাদের উখিয়ার কুতুপালং-সংলগ্ন ট্রানজিট ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়। উখিয়া ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাসে জড়ো করা হয় অন্তত ৩৮টি বাস। বৃহস্পতিবার ওই মাঠ থেকেই বাসগুলো তাদের নিয়ে চট্টগ্রামে পৌঁছায়। শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা এলাকা থেকে চারটি জাহাজ এই রোহিঙ্গাদের নিয়ে ভাসানচরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। অন্য একটি জাহাজে করে তাদের মালপত্র নিয়ে যাওয়া হয়। নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের দুটি জাহাজ ও চারটি স্পিডবোট নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রোহিঙ্গাদের বহনকারী জাহাজের সঙ্গে ছিল। বেলা ১টার দিকে ভাসানচরে পৌঁছানোর পর সেখানে আশ্রয়ণ প্রকল্পে বরাদ্দ করা ঘরে তাদের উঠেয়ে দেওয়া হয়। এদিকে গতকাল রোহিঙ্গাদের আরেকটি দল উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠ থেকে ১৮টি বাসে করে চট্টগ্রামের উদ্দ্যেশে রওনা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে এই রোহিঙ্গাদের কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প-সংলগ্ন ঘুমধুম ট্রানজিট ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়েছিল। বরাবরের মতই শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয় থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মকর্তা বলেছেন, তৃতীয় দফায় স্বেচ্ছায় ভাসানচর যাওয়ার জন্য যারা আগ্রহ প্রকাশ করেছিল, তাদের একটি অংশকে বৃহস্পতিবার উখিয়া থেকে পাঠানো হয়েছিল। শুক্রবার বাকিদের পাঠানো হয়েছে।