শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষা আইন খসড়া চূড়ান্তপ্রায় নোট-গাইড নিষিদ্ধ, থাকছে জরিমানা কারাদন্ডের বিধান

নিজস্ব প্রতিবেদক
  ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০০:০০

বহুলপ্রতীক্ষিত 'জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০' বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শিক্ষায় বিদ্যমান ৭৩টি আইন এবং অন্যান্য বিধি ও নীতিমালাকে একত্র করে সমন্বিত শিক্ষা আইনের খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে। এটি শিক্ষা আইন-২০২১ নামে অভিহিত হবে। খুঁটিনাটি নিয়ে আরও পর্যালোচনা করা হবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষাবিদ ও অংশীজনদের সঙ্গে। দেশের শিক্ষা ক্ষেত্রে এটি 'মাদার ল' হিসেবে বিবেচিত হবে। এ খসড়াটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য আবারও মন্ত্রিপরিষদে পাঠানো হবে। এর আগে প্রস্তাবিত আইনটি নিয়ে মন্ত্রী-উপমন্ত্রী সংবাদমাধ্যমের সঙ্গেও কথা বলবেন। মঙ্গলবার সংশ্লিষ্ট এক বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়।

এর আগে মন্ত্রিপরিষদ থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রণীত 'শিক্ষা আইন'টিতে নানা অসঙ্গতি থাকায় ২০১৮ সালের মে মাসে মন্ত্রিসভা ১৩টি পর্যবেক্ষণ দিয়ে ফেরত পাঠায়। শিক্ষার বিদ্যমান সব আইন নীতিমালা, বিধি-বিধান একত্র করে একটি 'আমব্রেলা আইন' (এক ছাতার নিচে সব) করার

পরামর্শ দিয়েছিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি দায়িত্ব নেওয়ার পর গত দু'বছর এ আইনটির বিভিন্ন ধারা-উপধারায় ব্যাপক পর্যালোচনা ও সংযোজন-বিয়োজন হয়েছে। অবশেষে চূড়ান্ত খসড়া নিয়ে গতকাল বেলা সাড়ে ৩টা থেকে বৈঠক শুরু হয়ে বিকাল ৫টা পর্যন্ত বৈঠক চলে। ভার্চুয়াল এ বৈঠকে শিক্ষা উপমন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব, কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব এবং সব অতিরিক্ত সচিবরা যুক্ত ছিলেন।

প্রস্তাবিত আইনে সব স্তরের ও শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য নোট ও গাইড বই নিষিদ্ধের বিধান রেখে 'শিক্ষা আইন-২০২০' এর খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে, সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে সহায়ক বই প্রকাশের বিধান রাখা হয়েছে।

প্রস্তাবিত শিক্ষা আইনের খসড়ার বলা হয়েছে, কোনো ধরনের নোট বা গাইড বই মুদ্রণ, বাঁধাই, প্রকাশ বা বাজারজাত করা যাবে না। এই বিধান লঙ্ঘন করলে অনূর্ধ্ব তিন বছর কারদন্ড অনূর্ধ্ব পাঁচ লাখ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয়দন্ডে দন্ডিত হবেন।

আরেক ধারায় বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের কোনো শিক্ষক নোট বা গাইড বই কিনতে বা পাঠে বাধ্য করলে বা উৎসাহ দিলে তা অসদাচরণ হিসেবে গণ্য হবে। সংশ্লিষ্ট শিক্ষক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান, ব্যবস্থাপনা কমিটি বা পরিচালনা কমিটির সংশ্লিষ্ট সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।

অন্যধারায় বলা হয়েছে, সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে সহায়ক পুস্ত্ত মুদ্রণ, বাঁধাই, প্রকাশ বা বাজারজাত করা যাবে। প্রস্তাবিত আইনের ৩০ ধারার ১ উপধারায় বলা হয়েছে, কোনো শিক্ষক নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট টিউশনের মাধ্যমে পাঠদান করতে পারবেন না। তবে শর্ত থাকে যে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের শনাক্ত করে অভিভাবকদের লিখিত সম্মতিতে স্কুল সময়ের আগে বা পরে অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা করা যাবে।

আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, শিক্ষকরা কোনো শিক্ষার্থীকে মানসিক হয়রানি বা শারীরিকভাবে আঘাত বা শাস্তি দিতে পারবেন না। এর পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে অসদাচরণ এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে