আজকের যায়যায়দিন

করোনা টিকা নিতে নিবন্ধন করেও এসএমএস (খুদেবার্তা) না পেয়ে উৎকণ্ঠায় রয়েছেন, এমন সবাই মোবাইলে দ্রম্নত এসএমএস পাবেন। আজ থেকে টিকা নিবন্ধনে স্বাস্থ্যসুরক্ষা নাঅে্যান্ড্রয়েড অ্যাপসও চালু হচ্ছে। এতে করে টিকা নিবন্ধনের পথ সহজ হবে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা মনে করছেন।

মাসের প্রথসপ্তাহে সরকার দেশে কোভিড-১৯ তথা করোনাভাইরাসের টিকা বিনামূল্যে প্রয়োগ শুরু করে। টিকার জন্য নিবন্ধনের পর এসএমএস না পেলেও কেন্দ্রে গিয়ে টিকা দেওয়া যাচ্ছিল। কিন্তু গত কয়েকদিন অধিকাংশ হাসপাতালে ভিড় বেড়ে যাওয়ায় অনস্পট রেজিস্ট্রেশন (কেন্দ্রে নিবন্ধন) বন্ধ করে দেওয়া হয়। পাশাপাশি এসএমএস পাওয়ার আগে টিকা দেওয়াও বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে নিবন্ধন করেও এসএমএস না পেয়ে অনেকে

উৎকণ্ঠায় পড়েছেন। তবে সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধনের পাশাপাশি আজ বৃহস্পতিবার থেকে নতুন অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস উদ্বোধন করা হবে। ফলে নিবন্ধনের পর তাৎক্ষণিকভাবে নিবন্ধিত ব্যক্তির ফোনে এসএমএস তথা খুদেবার্তা যাবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যায়যায়দিনকে নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মোকাবিলায় গণ-টিকাদান শুরুর দশদিনে অর্থাৎ গতকাল বুধবার ২ লাখ ২৬ হাজার ৭৫৫ জন মানুষ টিকা নিয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি সেন্টার ও কন্ট্রোল রুসূত্র জানিয়েছে দেশে গত ২৭ জানুয়ারি টিকা কার্যক্রশুরুর পর গতকাল পর্যন্ত টিকা গ্রহীতার সংখ্যা ১৫ লাখ ৮৬ হাজার ৩৬৮ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ১০ লাখ ৬৮ হাজার ৭১৯ জন এবং নারী ৫ লাখ ১৭ হাজার ৬৪৯ জন। মঙ্গলবার এই সংখ্যা ছিল ১৩ লাখ ৫৯ হাজার ৬১৩ জন।

ইউনিসেফের সতর্কতা / গরমের 'উচ্চ ঝুঁকিতে' শিশুরা

প্রতিদিনের মতো বুধবার ঢাকা বিভাগে ৭০ হাজার ২৫ জন, ময়মনসিংহে ১০ হাজার ৭৭৩ জন, চট্টগ্রা৪ে৪ হাজার ৭৮৩ জন, রাজশাহীতে ২৭ হাজার ১০৮ জন, রংপুরে ১৯ হাজার ৭৫৯ জন, খুলনায় ২৮ হাজার ৪৩৬ জন, বরিশালে ১৩ হাজার ১৪৬ জন এবং সিলেটে ১২ হাজার ৭২৫ জনসহ দশদিন আট বিভাগে গতকাল ২ লাখ ২৬ হাজার ৭৫৫ জন করোনা টিকা নিয়েছেন। আর দেশে ড্রাই রানসহ পর্যন্ত ১৫ লাখ ৮৬ হাজার ৩৬৮ জন টিকা নিয়েছেন। এখন পর্যন্ত টিকা নেওয়ার পর ৫১০ জনের শরীরে সামান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালের চিত্র :

অন্যান্য দিনের মতো বুধবার ঢাকা মহানগরীর হাসপাতালগুলোর মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ হাজার ৪৬৭ জন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৯৮০ জন, স্যার সলিমুলস্নাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৭৯০ জন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৮৫০ জন, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১ হাজার ৬১ জন, কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে ৬৭২ জন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ৮৯০ জন, শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউটে ১ হাজার ১০৩ জন, শিশু ও মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে (মাতুয়াইল) ৬৫০ জন, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে ৩ হাজার ৬৪৬ জন। সবমিলে গত একদিনে ঢাকা মহানগরে ৪৬টা হাসপাতালে মোট ৩১ হাজার ৮৭০ জন করোনা টিকা নিয়েছেন।

তবে গত মঙ্গলবার রাজধানীতে টিকা নিয়েছিলেন ৩৪ হাজার ৪৪ জন।

এদিকে বুধবার মিরপুরের ঢাকা ডেন্টাল কলেজে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য উদ্বোধন অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, প্রতিটি টিকাদান কেন্দ্রের দৈনিক টিকাদানের একটি সক্ষমতা ঠিক করা আছে। কিন্তু প্রতিদিন নিবন্ধন হচ্ছে এর চেয়ে অনেক বেশি। ফলে অনেকের মোবাইলে টিকা দেওয়ার দিন তারিখ জানিয়ে এসএমএস যেতে দেরি হচ্ছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন 'আমরা যখন শুরু করলাম, তখন নিবন্ধনের সংখ্যা কছিল। যারা টিকা নিতে আসবে, এমন মানুষের সংখ্যাও কছিল। এখন নিবন্ধন অনেক হয়ে গেছে। যেখানে প্রতিদিন ১ হাজার জনকে টিকা দেওয়ার ক্ষমতা আছে, সেখানে প্রতিদিন ৩ হাজার জনের নিবন্ধন হয়, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা দেরি হবে।'

'কারণে সময় নিয়ে তারিখ দিচ্ছে। যারা এসএমএস পায়নি এখন তারাও এসএমএস পেয়ে যাবেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও জানান, টিকা নেওয়ার নিবন্ধনের জন্য বয়সসীমা আপাতত ৪০ বছরই থাকবে। প্রথবেয়সসীমা ৫৫ বছর করা হয়েছিল। কিন্তু নিবন্ধন করতে আগ্রহী মানুষের সংখ্যা কথাকায় বয়সসীমা ৪০ বছর করা হয়েছিল। আমরা এটা ৪০ থেকে বাড়িয়ে দেব না। কিন্তু কমিয়েও দেওয়া হবে না।'

টিকার নিবন্ধন সহজ করতে আজ বেলা ১১টায় রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্য সরক্ষা অ্যান্ড্রোয়েড অ্যাপাস উদ্বোধন করবেন। এই মাধ্যেেয কেউ জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে টিকার জন্য নিবন্ধন করতে পারবেন।

সারাদেশে প্রায় এক হাজার কেন্দ্রে টিকাদান চলছে। প্রতিদিন ৩ লাখ ৬০ হাজার মানুষকে টিকা দেওয়ার মতো প্রশিক্ষিত জনবল স্বাস্থ্য অদিধপ্তর মাঠপর্যায়ে নিয়োজিত করেছে। ৭ ফেব্রম্নয়ারি দেশব্যাপী জাতীয়ভাবে করোনা টিকাদান শুরু হয়েছে। এদিকে সরকারের বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আইসিটি বিভাগ সূত্র যায়যায়দিনকে জানিয়েছে গতকাল বিকাল ৫টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত দেশে ২৫ লাখ ৪৮ হাজার ৫৮৪ জন করোনা টিকার জন্য সুরক্ষা অ্যাপের মাধ্যিেনবন্ধন করেছেন।