আল-জাজিরার প্রতিবেদন সরাতে হাইকোর্টের নির্দেশ

ফেসবুক ও ইউটিউব থেকে অপসারণে বিটিআরসির উদ্যোগ

প্রকাশ | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল-জাজিরায় সম্প্রচারিত 'অল দ্য প্রাইমিনিস্টারস মেন' শিরোনামের প্রতিবেদনটি ইউটিউব, টুইটার, ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যথেকে 'অপসারণ' করতে বাংলাদেশে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এদিকে হাইকোর্টের নির্দেশের পর প্রতিবেদনটি ফেসবুক ও ইউটিউব থেকে সরাতে উদ্যোগ নিয়েছে বিটিআরসি। বাংলাদেশে আল-জাজিরার সম্প্রচার বন্ধ চেয়ে করা রিট নিষ্পত্তি করে বুধবার বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কামরুল হোসেন মোলস্নার হাইকোর্ট বেঞ্চ বিটিআরসির প্রতি আদেশ দেন। তবে বাংলাদেশে আল-জাজিরার সম্প্রচার বন্ধের বিষয়ে কোনো আদেশ আদালত দেননি। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার এনামুল কবির ইমন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এআমিন উদ্দিন। বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার খন্দকার রেজা-ই-রাকিব। শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, রিট আবেদনকারীর মামলা করার অধিকার আছে। আদালত আবেদনের ওপর যেকোনো আদেশ দিতে পারেন। আর আদালত আদেশ দিলে ইন্টারনেট থেকে বিটিআরসি ভিডিওগুলো সরাতে পদক্ষেপ নিতে সহজ হয়। খন্দকার রেজা-ই-রাকিব বলেন, বিটিআরসি কেবল দেশের ভেতরে যেকোনো কনটেন্ট বন্ধ করতে পারে। কিন্তু দেশের বাইরের বিষয় বন্ধ করতে পারে না। সরাতে পারে না। জন্য আদালত আদেশ দিলে বিটিআরসি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে এগুলে স্থায়ীভাবে সরাতে পদক্ষেপ নিতে পারবে। অতীতেও আদালত রক(নোয়াখালীতে এক নারীকে নির্যাতনের ভিডিও সরাতে) আদেশ দিয়েছেন। তখন বিটিআরসি ফেসবুকসহ বিভিন্ন ইন্টারনেট মাধ্যথেকে এগুলো সরাতে ব্যবস্থা নিয়েছে। আর আল-জাজিরার ভিডিও স্থায়ীভাবে সরাতে না পারলে আমাদের সবার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ অব্যাহত থাকবে। এর আগে ১৫ ফেব্রম্নয়ারি মতামত দেন ছয়জন অ্যামিকাস কিউরি। তারা হলেন, জে মোহাম্মদ আলী, কামাল উল আলম, আবদুল মতিন খসরু, ফিদা একামাল, প্রবীর নিয়োগী এবং শাহদীন মালিক। তবে বেশির ভাগ অ্যামিকাস কিউরি রিটটি গ্রহণযোগ্য নয় বলে মতামত দেন। তারা বলছেন, রিটটি দায়েরের আগে বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আইনি নোটিশ দিতে পারতেন। বিষয়ে সুনির্দিষ্ট আইনও রয়েছে। একজন অ্যামিকাস কিউরি মতামত দিয়ে বলেন, আল-জাজিরায় অভিযোগসহ ঘণ্টাব্যাপী একটা অনুষ্ঠান সম্প্রচার করল। যেখানে প্রধানমন্ত্রীর নাবললেও কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কোনো যোগসূত্র দেখাতে পারেনি। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীকে বিতর্কিত করা হলে রাষ্ট্রকেই বিতর্কিত করা হয়। 'অল দ্য প্রাইমিনিস্টারস মেন' শিরোনাগেত ১ ফেব্রম্নয়ারি আল-জাজিরায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ঘটনায় সোমবার (৮ ফেব্রম্নয়ারি) রিট করেন ব্যারিস্টার এনামুল কবির ইমন। রিটে বাংলাদেশে আল-জাজিরার সম্প্রচার বন্ধের নির্দেশনা এবং 'অল দ্য প্রাইমিনিস্টারস মেন' শিরোনাআেল-জাজিরায় প্রচারিত বিদ্বেষপূর্ণ, মিথ্যা, মানহানিকর এবং বিভ্রান্তিকর ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রতিবেদন ইউটিউব, টুইটার, ফেসবুক ও ইন্সটাগ্রাথেকে সরানোর নির্দেশনা চাওয়া হয়। রিট আবেদনে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, তথ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, পুলিশের আইজিসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে। সরানোর উদ্যোগ বিটিআরসির এদিকে, আল-জাজিরায় প্রচারিত প্রতিবেদন 'অল দ্য প্রাইমিনিস্টারস মেন' তথ্যচিত্রটি সরানোর বিষয়ে বিটিআরসি যথাযথ পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছেন সংস্থার চেয়ারম্যান শ্যাসুন্দর শিকদার। হাইকোর্টের নির্দেশের পর বিটিআরসির চেয়ারম্যানকে উদ্ধৃত করে এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানিয়েছে, 'বাংলাদেশকে নিয়ে আল-জাজিরায় প্রচারিত কনটেন্ট সরানোর বিষয়ে ইতোমধ্যে বিটিআরসি টেলিফোন ও ই-মেইলের মাধ্যেেফসবুক ও ইউটিউব কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছে। যেহেতু বিজ্ঞ হাইকোর্ট ওই কনটেন্ট সরানোর বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করেছেন, তদপ্রেক্ষিতে বিটিআরসি কনটেন্ট সরানোর বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।'