আজকের যায়যায়দিন

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেওয়া হবে। দ্রম্নত স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় খোলার লক্ষ্যে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এরই অংশ হিসেবে সারাদেশের সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় সাড়ে সাত লাখ শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর তালিকা পাঠানো হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য আলাদা ক্যাটাগরিতে নিবন্ধনও শুরু হয়েছে গত বৃহস্পতিবার থেকে। টিকা প্রদানে জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত 'সুরক্ষা ওয়েবসাইটে' এ সংযুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে তালিকায় তথ্য থাকা চলিস্নশের কম বয়সি শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও ওই ওয়েবসাইটে গিয়ে নিবন্ধন করে টিকা নিতে পারবেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দেওয়া ডেটাবেইজে তথ্য

জমা না থাকলে টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কেউ অগ্রাধিকার পাবেন না।

আগামী ২৭ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয় এবং তার আগে আবাসিক হল খুলে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের কথা গত ২২ ফেব্রম্নয়ারি ঘোষণা করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তার সঙ্গে মন্ত্রী এও জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আগে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টিকা দেওয়া হবে। এরও আগে গত ৯ ফেব্রম্নয়ারি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন জানিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী সব শিক্ষককে টিকা দিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছেন।

তাপপ্রবাহে পুড়ছে ছয় জেলা / সারাদেশে গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে ৪ লাখ ৬ হাজার ৪৬৯ জন শিক্ষক এবং ১ লাখ ৬২ হাজার ৮৬১ জন কর্মচারী রয়েছেন। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রয়েছেন ১৫ হাজার ৫২৪ জন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষক রয়েছেন ৬ লাখ ৮৫ হাজার ৪০০ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সেন্টারের (এমআইএস) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, যেসব শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর তালিকায় এসেছেন, তারা ওয়েবসাইটে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আলাদা ক্যাটাগরি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে টিকা নিতে পারবেন। তিনি আরও বলেন, 'শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে যে তালিকা পাঠানো হয়েছে, সেটি কমপাইল করে আইসিটি মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আইসিটি সার্ভারে সেই ডেটা এন্ট্রি করে রাখে। জন্ম তারিখ ও এনআইডি নম্বর মিলে গেলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরতরা রেজিস্ট্রেশন ও টিকা নিতে পারবেন।' এ পর্যন্ত প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, মাদ্রাসা, কারিগরি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে সাত লাখ শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর তালিকা পেয়েছেন বলে জানান তিনি।

নিবন্ধন করলেই শিক্ষকরা টিকা নিতে পারবেন বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, 'এমনিতেই তো ৪০ বছরের উপরের সবাই টিকা পাচ্ছেন। আমাদের কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের খুব কম শিক্ষকের বয়স চলিস্নশের কম, শুধু প্রাথমিক বা মাধ্যমিক স্কুলে কিছু শিক্ষকের বয়স চলিস্নশের কম। তারা রেজিস্ট্রেশন করবে, সেজন্য অগ্রাধিকার তালিকায় তাদের নাম আছে। তারা রেজিস্ট্রেশন করবে, টিকা নেবে।'

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ গোলাম ফারুক বলেন, 'মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তো বলেছেন, টিকার ব্যাপারে আমরা একটা অগ্রাধিকার পাব। শিক্ষকরা আগে থেকেও টিকা পেত। এখন থেকে শিক্ষকদের ক্যাটাগরি থাকায় আরও একটু সহজ হলো বিষয়টি। শিক্ষকদের একটি তালিকা পাঠানো হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে। শিক্ষকরা এখন এনআইডি কার্ড দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা নিতে পারবেন।'

এখনই টিকা পাচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা

বিশ্ববিদ্যালয় খোলার আগে আবাসিক শিক্ষার্থীদেরও টিকা নেওয়ার কথা বলেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। তবে বিশ্ববিদ্যালয় ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের ১৮ বছরের বেশি বয়সি শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার প্রক্রিয়া এখনো শুরু হয়নি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএসের পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, 'শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে এখনো কোনো নির্দেশনা আসেনি। আসলে আমরা দিয়ে দেব।

শিক্ষার্থীদের টিকার বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক গোলাম ফারুক বলেন, '১৮ বছরের ওপরের শিক্ষার্থীদের টিকার বিষয়ে সরকার কিছু বলেনি। আমরাও এখন শিক্ষার্থীদের কথা বলছি না, শিক্ষক-কর্মচারীদের কথাই বলছি।'