বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

সুইস ব্যাংকে কার কত টাকা জানতে চান হাইকোর্ট

যাযাদি ডেস্ক
  ০১ মার্চ ২০২১, ০০:০০

সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশের কতজনের কত টাকা আছে তার তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে সরকার কী পদক্ষেপ নিয়েছে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।

এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের বেঞ্চ রোববার রুলসহ এ আদেশ দেয়।

বাংলাদেশি বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে বিদেশি ব্যাংক বিশেষ করে সুইস ব্যাংকে পাচার করা 'বিপুল পরিমাণ' অর্থ উদ্ধারের যথাযথ পদক্ষেপের নির্দেশনা চেয়ে ১ ফেব্রম্নয়ারি রিট আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম খান ও সুবীর নন্দী দাস।

আবেদনের পক্ষে আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম খান নিজেই শুনানি করেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।

বিদেশি ব্যাংক বিশেষ করে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশের নাগরিক অথবা কোম্পানি এবং অন্য কোনো সংস্থার গোপনে গচ্ছিত টাকা উদ্ধারে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

পানামা-প্যারাডাইস পেপারে বাংলাদেশি যেসব

নাগরিক ও কোম্পানির নাম এসেছে, তাদের বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না এবং সে তদন্তের অগ্রগতি প্রতি মাসে আদালতকে জানাতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না- তাও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

সেই সঙ্গে বাংলাদেশি কোনো নাগরিক অথবা কোম্পানি বা অন্য কোনো সংস্থার অর্থ পাচার, সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে অর্থায়নের বিষয় নিরীক্ষণ, পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণে একটি বিশেষ তদন্ত দল গঠনের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না তাও জানতে চেয়েছে আদালত।

অর্থসচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, বাণিজ্য সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, ডেপুটি গভর্নর, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান, যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মের পরিদপ্তরের রেজিস্ট্রার ও পুলিশপ্রধানকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আগামী ৩০ মার্চ পরবর্তী শুনানি ও আদেশের তারিখ রেখেছেন আদালত।

রোববার শুনানিতে দুদকের পক্ষ থেকে বলা হয়, আলোচিত পানামা ও প্যারাডাইস পেপারে যাদের নাম এসেছে তাদের বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে। এ পর্যন্ত যাদের নাম এসেছে তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন আব্দুল আউয়াল মিন্টু ও মুসা বিন শমসের।

সুইস ব্যাংক থেকে টাকা আনার বিষয়ে পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ইমিগ্রেশন পুলিশ, বিএফআইইউসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক সাংবাদিকদের বলেন, 'দ্বৈত নাগরিকের তালিকা দেওয়ার বিষয়ে আমরা সময় চেয়েছিলাম। আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি তা হচ্ছে, কম-বেশি মিলিয়ে প্রায় ১৪ হাজারের মত দ্বৈত নাগরিক আছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাসপোর্ট জমা দিয়ে তারা ঘোষণা দিয়েছেন। সে তালিকা এখনো আমরা হাতে পাইনি। অনেক বড় ব্যাপার তৈরি করতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে ৩০ মার্চ শুনানি হবে।'

এদিকে বিদেশি ব্যাংক বিশেষ করে সুইস ব্যাংকে পাচার করা 'বিপুল পরিমাণ' অর্থ উদ্ধারের যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে এ রিট আবেদনটি করা হয়।

১০ ফেব্রম্নয়ারি রিটের শুনানির পর তা আদেশের জন্য রাখা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় রুলসহ আদেশ দিল উচ্চ আদালত।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে