মুশতাকের মৃতু্য হলফনামা আকারে ঘটনা জানতে চান হাইকোর্ট

প্রকাশ | ০২ মার্চ ২০২১, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গাজীপুরের কাশিমপুর হাই-সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি অবস্থায় লেখক মুশতাক আহমেদের মৃতু্যর ঘটনা লিখিতভাবে (হলফনামা আকারে) হাইকোর্টকে জানাতে হবে। সেই সঙ্গে এ বিষয়ে আগামী বুধবার (৩ মার্চ) রাষ্ট্রপক্ষকে শুনানি করার জন্য বলেছেন আদালত। হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ মামলার অপর আসামি কার্টুনিস্ট আহমেদ কবীর কিশোরসহ মোশতাক আহমেদের জামিন আবেদন শুনানিতে এ আদেশ দেন আদালত। শুনানিতে আবেদনকারীদের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, 'তিনি মৃতু্যবরণ করেছেন।' তখন আদালত বলেন, 'সেটি আপনি হলফনামা আকারে জানান। তখন তার জামিন আবেদন অ্যাবেট (বাদ) করা হবে।' জবাবে ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া জানান, কালকের মধ্যে তিনি হলফনামা আকারে জমা দিতে পারবেন। এরপর আদালতে কার্টুনিস্ট আহমেদ কবীর কিশোরের জামিন আবেদনের ওপর শুনানি করেন জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। তার শুনানির পর আদালত এ বিষয়ে বুধবার (৩ মার্চ) জবাব দেয়ার জন্য রাষ্ট্রপক্ষকে বলেন। একই সঙ্গে ওইদিন তার জামিনের বিষয়ে আদেশের জন্য দিন রেখেছেন হাইকোর্ট। এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রম্নয়ারি) রাত হ \হসোয়া ৮টার দিকে মুশতাক আহমেদকে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মুশতাক আহমেদের নারায়ণগঞ্জের আড়াই হাজার থানার ছোট বালাপুর এলাকার মো. আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। গত বছর ৫ মে কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর এবং অনলাইনে লেখালেখিতে সক্রিয় ব্যবসায়ী মুশতাক আহমেদকে গ্রেপ্তার করের্ যাব। পরে তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। পরদিন 'সরকারবিরোধী প্রচার ও গুজব ছড়ানোর' অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তাদের বিরুদ্ধে রমনা থানায় মামলা করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা থানার এসআই জামশেদুল ইসলাম তখন বলেছিলেন, কার্টুনিস্ট কিশোর তার 'আমি কিশোর' নামের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সরকারের ভূমিকা নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনামূলক কার্টুন-পোস্টার পোস্ট করতেন। আর মুশতাক তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে কিশোরের সেসব পোস্টের কয়েকটি শেয়ার করেন। র্ যাব-৩ এর ডিএডি আবু বকর সিদ্দিকের করা এই মামলায় রাষ্ট্রচিন্তার সংগঠন দিদারুল ভূইয়া এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নানকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তবে পরে এ দুজন জামিনে মুক্তি পান। মুশতাক ও কিশোরের পক্ষে এর আগে বেশ কয়েকবার জামিনের আবেদন হলেও তা আদালতে নামঞ্জুর হয়। এই মামলায় আসামির তালিকায় মুশতাক, কিশোর, দিদার, মিনহাজের সঙ্গে আরও ছিলেন নেত্র নিউজের সম্পাদক সুইডেন প্রবাসী তাসনিম খলিল, জার্মানিতে থাকা বস্নগার আসিফ মহিউদ্দিন, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাংবাদিক শাহেদ আলম, হাঙ্গেরি প্রবাসী জুলকারনাইন সায়ের খান (আল জাজিরার প্রতিবেদনের স্যামি), আশিক ইমরান, স্বপন ওয়াহিদ ও ফিলিপ শুমাখার। তবে তদন্তের পর শুধু মুশতাক, কিশোর ও দিদারকে আসামি করে গত ১৩ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দেয় রমনা থানা পুলিশ। বাকি আট আসামিকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে গত ১০ ফেব্রম্নয়ারি বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইবু্যনালের বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেন এ মামলায় অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন।