শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মিয়ানমারে আবারও গুলি উদ্বেগ-আতঙ্ক বাড়ছে

জান্তার সঙ্গে আসিয়ান জোটের আলোচনার প্রস্তুতির মধ্যেই দেশটিতে আবারও উত্তপ্ত হলো পরিস্থিতি
যাযাদি ডেস্ক
  ০৩ মার্চ ২০২১, ০০:০০

ভয়াল, রক্তাক্ত রোববারের পর আবারও গুলির শব্দে কেঁপে উঠল মিয়ানমার। দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় কালে শহরে অভু্যত্থানবিরোধীদের বিক্ষোভে গুলি চালিয়েছে নিরাপত্তাবাহিনী। মঙ্গলবার কালে ছাড়াও দেশটির বিভিন্ন শহরে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর গ্রেনেড ও গুলিতে প্রায় দুই ডজন বিক্ষোভকারী আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে স্থানীয় হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরা নিশ্চিত করেছেন। সংবাদসূত্র : এএফপি, গার্ডিয়ান

প্রতিবাদী জনগণের ওপর দমন-পীড়ন বন্ধে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা মিয়ানমারের জান্তা সরকারের সঙ্গে যখন আলোচনার প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন এই গুলিবর্ষণের খবর এলো।

এক মাস আগে ১ ফেব্রম্নয়ারি নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচু্যত করে সামরিক বাহিনী। এরপর থেকে টানা জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ করে আসছে দেশটির লাখ লাখ মানুষ।

নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণের পর দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় কালে শহরে বিক্ষোভকারীদের সমাবেশ সহিংসতায় রূপ নেয়। এই বিক্ষোভে আহতদের চিকিৎসা দেওয়া মেডিকেল কর্মীরা বলেছেন, কালেতে মঙ্গলবার সকালের দিকে পুলিশ এবং সামরিক বাহিনীর সদস্যদের কঠোর অভিযানে প্রায় ২০ জন আহত হয়েছে।

নির্যাতনের ভয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চিকিৎসকরা বলেছেন, তাজা গুলিতে তিনজন আহত হয়েছেন এবং তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাজা গুলি ছোড়ার আগে পুলিশ প্রাথমিকভাবে কাঁদানে গ্যাস এবং রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। স্থানীয় একটি হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসা দেওয়া এক চিকিৎসক গুরুতর আহতদের সংখ্যা নিশ্চিত করেছেন।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, 'আহতদের মধ্যে একজন উরুতে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। বর্তমানে তার অস্ত্রোপচার করা হচ্ছে। অন্য একজনের তলপেটে জখম হয়েছে। তাকে অতিরিক্ত রক্ত দিতে হয়েছে। অপর এক বিক্ষোভকারী বুকে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। তার পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। আমরা এটা পছন্দ করি না।'

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর গত ১ ফেব্রম্নয়ারির অভু্যত্থানের পর এখন পর্যন্ত সবচেয়ে প্রাণঘাতী দিন ছিল গত রোববার। ওই দিন দেশজুড়ে

\হনিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালালে অন্তত ১৮ জনের প্রাণহানি ঘটে।

অন্যদিকে, মঙ্গলবার ইয়াঙ্গুনের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভকারীরা হাতে তৈরি শক্ত টুপি, মোটা গস্নাভস, গগলস এবং ঢাল নিয়ে জড়ো হয়। দেশটির বাণিজ্যিক এই রাজধানীতে বিক্ষোভকারীরা সামরিক শাসনবিরোধী বিভিন্ন ধরনের স্স্নোগান দেয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, ইয়াঙ্গুনের একটি স্থানে গ্রেনেড, গুলি ছুড়ে পুলিশ হটিয়ে দেওয়ার আগে বিক্ষোভকারীরা ?'আমাদের নির্যাতন করা হলে বিস্ফোরণ ঘটবে', 'আমাদের ওপর আঘাত এলে পাল্টা আঘাত হানা হবে' স্স্নোগান দেন। তবে ইয়াঙ্গুনের বিক্ষোভে পুলিশি অভিযানে কোনো হতাহত হয়েছে কিনা তা জানা যায়নি।

মায়ানিগোনে শক্ত টুপি পরিহিত ২৪ বছর বয়সী এক বিক্ষোভকারী বলেন, দেশজুড়ে উদ্বেগজনক অনুভূতি বিরাজ করছে। কেউ জানে না, কী ঘটতে যাচ্ছে। এছাড়া বিক্ষোভে অংশ নেওয়া এই শিক্ষক বলেন, 'তারা এমন ভাব করছে, যেন তারা যুদ্ধক্ষেত্রে আছে। আমি অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হওয়ার পাশাপাশি দুঃখবোধও করছি।' এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য ওই এলাকার হাসপাতাল ও পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি বলে জানিয়েছে আন্তর্জতিক গণমাধ্যম। সামরিক বাহিনীর মুখপাত্ররাও টেলিফোন কলের উত্তর দেননি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে