কারাগারে মুশতাক আহমেদের মৃতু্য স্বাভাবিক :স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশ | ০৫ মার্চ ২০২১, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে লেখক মুশতাক আহমেদের মৃতু্য স্বাভাবিক বলে দাবি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি, গাজীপুরের ডিসি ও কারা কর্তৃপক্ষ- তিনটি রিপোর্টেই এই মৃতু্যকে 'স্বাভাবিক মৃতু্য' বলে অভিহিত করা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এ কথা বলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'সব তদন্ত কমিটির অভিমত এই যে মুশতাক আহমেদের স্বাভাবিক মৃতু্য হয়েছে। বাথরুমে গিয়ে তিনি অসুস্থ হয়ে গেলে পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সুরতহাল রিপোর্টে কোনো \হআঘাতের চিহ্ন নেই।' তিনি বলেন, 'আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করে দিয়েছিলাম। গাজীপুরের ডিসি, তিনিও একটি কমিটি করেছিলেন, আইজি প্রিজন তিনিও তাৎক্ষণিকভবে একটি কমিটি করেন। সবগুলো কমিটির অভিমত একরকম। তারা ভিডিওফুটেজ ও কারাগারে যারা তার সঙ্গে অন্তরীণ ছিলেন, তার রুমে যে কয়জন ছিলেন, কর্তব্যরত চিকিৎসক যারা ছিলেন, হাসপাতালে যখন নিয়ে গেছেন- তাদের সবার অভিমত নিয়ে তারা যে রিপোর্টটি দিয়েছেন সেই রিপোর্টে বলেছেন, এটা একটা ন্যাচারাল ডেথ হয়েছে। ন্যাচারাল ডেথ মানে অস্বাভাবিক মৃতু্য নয়। সেটাই তারা তাদের ইনকয়ারি রিপোর্টের মাধ্যমে আমাদের জানিয়েছেন।' স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'আমরা সবগুলো রিপোর্টেই এখন পর্যন্ত এটুকুই পেয়েছি। আমরা ফাইনালি পোস্টমর্টেমের রিপোর্টের পরে আরও বিস্তারিত জানতে পারব। এই পর্যন্ত আমাদের কাছে যা আসছে, এর মূল হলো এটা ন্যাচারাল ডেথ। তিনি বাথরুমে গিয়েছিলেন। ওয়াশরুমে যাওয়ার পর সেখানেই তিনি অজ্ঞান হন। তারপর তাকে কারাগারে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে। এরপর তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।' এ ধরনের তদন্তে প্রকৃত বিষয় উঠে আসে না, সেক্ষেত্রে অধিকতর তদন্ত, কেউ কেউ বিচারবিভাগীয় তদন্তের কথা বলছেন এমনটি জানিয়ে মন্ত্রীর অভিমত জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এগুলোকে মাথায় রেখেই আমরা মন্ত্রণালয়ে একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি টিম করে দিয়েছিলাম। সেখানে ডিসিও তাৎক্ষণিকভাবে একটি এবং কারা কর্তৃপক্ষও একটি টিম করেছিল। আসলে ঘটনাটা কী সেটা জানার জন্য। কাজেই এখানে যদি কারও অনিয়ম বা গাফিলতি থাকত তাহলে নিশ্চয়ই জানাত। এর বাইরে যদি কিছু থাকে সেটা পোস্টমর্টেম রিপোর্ট এলে আপনাদের জানাব।' মুশতাক আহমেদ গত বছরের ৬ মে রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা মামলায় কারাগারে অন্তরীণ হন। গত ২৫ ফেব্‌রুয়ারি গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি অবস্থায় লেখক মুশতাক আহমেদ (৫৩) মারা যান। মুশতাক আহমেদের মৃতু্যতে কারা কর্তৃপক্ষের কোনো প্রকার গাফিলতি ছিল কিনা, যদি থাকে তবে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে ২৭ ফেব্রম্নয়ারি পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ। এ ছাড়া গাজীপুর জেলা প্রশাসন ও কারা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকেও তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সব কমিটিই ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।