করোনায় মৃতু্য, শনাক্ত সুস্থতা সবই ঊর্ধ্বমুখী একদিনে আরও ১৪ মৃতু্য, শনাক্ত ৮৪৫ জন

প্রকাশ | ০৯ মার্চ ২০২১, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে মৃতু্য, শনাক্ত ও সুস্থতার হার সবই বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সময়ে সারাদেশে করোনায় আরও ১৪ জনের মৃতু্য হয়েছে। এর আগে সর্বশেষ ১৩ জানুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর একদিনে এর চেয়ে বেশি রোগী শনাক্তের তথ্য দিয়েছিল, সেদিন ৮৯০ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। আর ১৪ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত দেশে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা আটশ'র নিচে ছিল। গত একদিনের মৃতু্যসহ দেশে করোনায় মোট ৮ হাজার ৪৭৬ জনের মৃতু্য হয়েছে। প্রতিদিনের মতো সোমবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত করোনাভাইরাস বিষয়ক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, সারাদেশে করোনাভাইরাসের সর্বশেষ সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যালোচনায় রোববার সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ১১৮টি আরটি-পিসিআর ল্যাব, ২৯টি জিন-এক্সপার্ট ল্যাব ও ৭২টির্ যাপিড অ্যান্টিজেন ল্যাবে অর্থাৎ ২১৯টি ল্যাবরেটরিতে ১৬ হ?াজার ৬৬০টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরপর যাচাই-বাছাই শেষে পূর্বে জমা কিছু নমুনাসহ ১৬ হাজার ৯৫৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ নিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দাঁড়াল ৪১ লাখ ৬৩ হাজার ১৬৩টি। সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩১ লাখ ৯৫ হাজার ৮৫৭টি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়েছে ৯ লাখ ৬৭ হাজার ৩০৬টি। বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত একদিনে করোনা আক্রান্ত নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন আরও ৮৪৫ জন। এর আগের দিন রোববার শনাক্ত হয়েছিল ৬০৬ জন। এ নিয়ে দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৫ লাখ ৫১ হাজার ১৭৫ জনে দাঁড়িয়েছে। তবে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ও বাড়িতে উপসর্গবিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ১১৭ জন সুস্থ হয়েছেন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৫ লাখ ৪ হাজার ১২০ জন। এর আগের দিন রোববার সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৩৭ জন। বিজ্ঞপ্তির ভাষ্য অনুযায়ী ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৪ দশমিক ৯৮ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯১ দশমিক ৪৬ শতাংশ এবং মৃতের হার ১ দশমিক ৫৪ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ২৭ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯১ দশমিক শূন্য ২৪ শতাংশ। আর শনাক্ত বিবেচনায় মৃতের হার ১ দশমিক ৫৪ শতাংশ। গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ১০ জন পুরুষ এবং ৪ জন নারী। তাদের সবাই হাসপাতালে মারা গেছেন। তাদের ৮ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি, ৪ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে এবং ২ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ছিল। মৃতদের মধ্যে ৬ জন ঢাকা বিভাগের এবং ৮ জন চট্টগ্রাম বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। দেশে এ পর্যন্ত করোনায় মারা যাওয়া ৮ হাজার ৪৭৬ জনের মধ্যে ৬ হাজার ৪০৭ জনই পুরুষ এবং ২ হাজার ৬৯ জন নারী। তাদের মধ্যে ৪ হাজার ৭২০ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ২ হাজার ৯৮ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৯৬০ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৪২৪ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১৭৩ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৬৪ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ৩৭ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম। এর মধ্যে ৪ হাজার ৭৪১ জন ঢাকা বিভাগের, ১ হাজার ৫৬৭ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৪৮১ জন রাজশাহী বিভাগের, ৫৬৩ জন খুলনা বিভাগের, ২৫৪ জন বরিশাল বিভাগের, ৩১১ জন সিলেট বিভাগের, ৩৬৩ জন রংপুর বিভাগের এবং ১৯৬ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। দেশে গত বছর ৮ মার্চ প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার এক বছর পর এ বছর ৭ মার্চ শনাক্ত রোগীর সাড়ে ৫ লাখ ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে গত বছরের ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড ১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ প্রথম মৃতু্যর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ২৩ জানুয়ারি তা ৮ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে গত বছরের ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃতু্যর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃতু্য। এদিকে বিশ্বে শনাক্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ইতোমধ্যে ১১ কোটি ৬৮ লাখ পেরিয়েছে। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৫ লাখ ৯৩ হাজার। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ৩৩তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় ৩৯তম অবস্থানে রয়েছে।