মানুষকে বাঁচানোর প্রয়োজনে আরও কঠোর পদক্ষেপ : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ | ০৯ এপ্রিল ২০২১, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার দুপুরে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিসিএস কর্মকর্তাদের '৭১তম বুনিয়াদী প্রশিক্ষণ কোর্স'-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন -ফোকাস বাংলা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, 'করোনাভাইরাস এখন একটা মহামারি আকারে দেখা দিয়েছে এবং আমরাও সেই ধাক্কাটা দেখতে পাচ্ছি। আমাদের তাৎক্ষণিক কিছু ব্যবস্থা নিলেও ভবিষ্যতে হয়তো কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে মানুষকে বাঁচানোর জন্য এবং সেটা আমরা নেব।' বৃহস্পতিবার দুপুরে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে বিসিএস কর্মকর্তাদের '৭১তম বুনিয়াদী প্রশিক্ষণ কোর্স'-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি। এ সময় সাভারে বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে কোর্সে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জনকারীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। তিনি বলেন, 'দেশবাসীকে আজকে এই সভার মাধ্যমে বলব- প্রত্যেকে আপনারা যাতে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধিটা যাতে মেনে চলে সেই ব্যবস্থাটা নেবেন। মানুষের জীবন-জীবিকা চলতে হবে, মানুষকে আমরা কষ্ট দিতে পারি না। কিন্তু সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা একান্তভাবে অপরিহার্য। এ বিষয়ে সবাই আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করবেন এবং প্রত্যেকে যাতে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলে সে বিষয়টি দেখবেন।' শুধু নিজের নয়, অন্যদের সুরক্ষার জন্যও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'মাস্ক পরা এটা একান্তভাবে দরকার। সেইসাথে সাথে গারগল করা, বাইরে যেখানেই যাবেন ঘরে ফিরে একটু গরম পানির ভাপটা নেবেন।' নতুন প্রজন্মকে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার সৈনিক হিসেবে উলেস্নখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, '২০৪১ সালের মধ্যে আমরা বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশকে হিসেবে গড়তে চাই। আমি জানি এখন আমার যে বয়স তাতে '৪১ সাল পর্যন্ত বেঁচে থাকা বা রাষ্ট্র পরিচালনার কোনো সম্ভাবনা নেই। আজকে যারা নবীন অফিসাররা প্রশিক্ষণ নিয়ে দায়িত্ব পালনে কাজে যাবেন। আপনাদের ওপর এই দায়িত্ব পড়বে। আমি বলব, আমার '৪১-এর উন্নত বাংলাদেশ গড়বার সৈনিক হচ্ছে এই নতুন প্রজন্ম, যারা রাষ্ট্রের দায়িত্বে যোগ দেবেন।' প্রধানমন্ত্রী প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের সততার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, 'সবসময় এই কথাটা মনে রাখতে হবে- আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে, সততার সঙ্গে, নিষ্ঠার সঙ্গে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে। সবসময় দেশের মানুষের জন্য যে কর্তব্যবোধ সেটা থাকতে হবে। সিভিল সার্ভিসে যারা কাজ করেন, তাদের এ কথা মনে রাখতে হবে। দেশের মানুষের জন্য আপনাদের কাজ করতে হবে।' জনগণের জন্য করণীয় বিষয়ে প্রজাতন্ত্রের কর্মীদের উদ্দেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনা স্মরণ করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, 'বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আপনি চাকুরি করেন, আপনার মাইনে দেয় ওই গরিব কৃষক, আপনার মাইনে দেয় ওই গরিব শ্রমিক, আপনার সংসার চলে ওই টাকায়। আমি গাড়ি চড়ি ওই টাকায়। ওদের সম্মান করে কথা বলুন, ইজ্জত করে কথা বলুন, ওরাই মালিক। বাংলাদেশের জনগণই বাংলাদেশের মালিক। সে জনগণ একেবারে হতদরিদ্র হোক, কৃষক হোক, শ্রমিক হোক, একজন ভিখারি হোক সেও কিন্তু এই দেশের মালিক। অর্থাৎ জনগণই হচ্ছে মালিক। আমাদের সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদও কিন্তু এ কথা বলা আছে। প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগণ, সে কথা মনে করে আপনারা তাদের সেবা দিবেন। সেটাই আমি চাই।' শেখ হাসিনা বলেন, 'দরিদ্র কেউ তো ইচ্ছে করে দরিদ্র হয় না। আর দরিদ্র হয়ে জন্মালে তাকে আমরা অপবাদ দিতে পারি না। বা কেউ প্রতিবন্ধী, অটিস্টিক হলে তাকে আমরা অপবাদ দিতে পারি না। কিন্তু তাদেরকে সাহায্য করা দরকার, তারা যেন উঠে দাঁড়াতে পারে মাথা উঁচু করে চলতে পারে। সেভাবে আমরা কাজ করতে চাই। দেশের মানুষের সেবা করতে চাই।'