বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি সোহরাওয়ার্দীতে 'কিছু গাছ' কাটা হয়েছে স্মৃতিকেন্দ্র গড়তে

যাযাদি ডেস্ক
  ০৭ মে ২০২১, ০০:০০

'আন্তর্জাতিক মানের স্মৃতিকেন্দ্র' গড়ে তোলার মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের 'কিছু গাছ' কাটা হয়েছে বলে জানিয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, কিছু গাছ কাটা হলেও সেখানে আরও এক হাজার গাছ লাগানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এদিকে, আদালতের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে রেস্টুরেন্ট স্থাপনের জন্য গাছকাটা বন্ধ করতে সংশ্লিষ্টদের আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক

মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা সুফি আব্দুলস্নাহিল মারুফের সই করা বিবৃতিতে বলা হয়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গাছ কাটা নিয়ে 'খন্ডিত তথ্য' প্রচার হয়েছে দাবি করে তাতে জনমনে 'বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে'। গাছ কাটা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যপ্রেচারিত সংবাদের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে।

স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণের (৩য় পর্যায়) মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে জানিয়ে বলা হয়, 'মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কিছু গাছ কর্তন করা হলেও প্রায় এক হাজার গাছ লাগানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।'

মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সংরক্ষণে আধুনিক নগর উপযোগী এবং সবুজের আবহে আন্তর্জাতিকমানের স্মৃতিকেন্দ্র গড়ে দেশি-বিদেশি পর্যটক আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে এই মহাপরিকল্পনা করা হয়েছে।

সেখানে পাকিস্তানি শাসনবিরোধী ২৩ বছরের মুক্তিসংগ্রাএবং নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্বলিত ভাস্কর্য স্থাপন; ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের মতো কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্মাণ কাজ চলছে জানিয়ে একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে।

এছাড়া পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসর্ম্পণের স্থানে ভাস্কর্য স্থাপন, ইন্দিরা মঞ্চ নির্মাণ, ওয়াটার বডি ও ফাউন্টেইন নির্মাণ, ভূগর্ভস্থ ৫০০ গাড়ির পার্কিং ও শিশুপার্কসহ ?বিভিন্ন নির্মাণ কাজ চলছে বলেও উলেস্নখ করা হয়।

সরকারের এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে 'দেশপ্রেমিক-সচেতন' নাগরিকদের সমর্থন এবং সহযোগিতা কামনা করেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

বন্ধে আইনি নোটিশ : এদিকে, আদালতের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে রেস্টুরেন্ট স্থাপনের জন্য গাছ কাটা বন্ধ করতে সংশ্লিষ্টদের আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষ, গণপূর্ত বিভাগের চিফ ইঞ্জিনিয়ার মো. শামিআখতার ও চিফ আর্কিটেক্ট অব বাংলাদেশ মীর মনজুর রহমানকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সুপ্রিকোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ নোটিশ পাঠান। এতে বলা হয়েছে, যেহেতু স্মরণকাল থেকেই এটি উদ্যান হিসেবে পরিচিত, সেহেতু ২০০০ সালের ৩৬ নম্বর আইন অনুসারে সোহরাওয়ার্দী 'উদ্যান' সংজ্ঞার আওতাধীন এবং এই জায়গার শ্রেণি সাধারণভাবে অপরিবর্তনীয়। এটিকে অনাবশ্যক স্থাপন দ্বারা ভারাক্রান্ত করা অবৈধ হইবে।

আদালতের রায় উপেক্ষা করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মধ্যে ব্যবসায়িক স্বার্থে রেস্টুরেন্ট/দোকান প্রতিষ্ঠার জন্য পরিবেশ ধ্বংস করে অনেক গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। যা রায়ের সম্পূর্ণ পরিপন্থি বলেও নোটিশে বলা হয়েছে।

নোটিশ পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় প্রতিকার চেয়ে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলেও উলেস্নখ করা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে